রবিবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২৫

বিসিবি’র সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, নারী ক্রিকেটে অস্থিরতা


বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুকে ঘিরে যৌন হয়রানির পুরনো অভিযোগ নতুন করে সামনে এসেছে, যা নারী ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা ও বিসিবি-এর ব্যবস্থাপনার ঘাটতি নিয়ে গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে।

৭ নভেম্বর ২০২৫, ১২:১৯ অপরাহ্ণ 

বিসিবি’র সাবেক পরিচালকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ, নারী ক্রিকেটে অস্থিরতা
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক ম্যানেজার এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি)-এর সাবেক পরিচালক মনজুরুল ইসলাম মঞ্জুকে ঘিরে যৌন হয়রানির পুরনো বিতর্ক নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে এসেছে। নারী ক্রীড়াবিদদের নিরাপত্তা এবং বিসিবি-এর অভ্যন্তরীন ব্যবস্থাপনার ঘাটতি নিয়ে এই ঘটনায় গুরুতর প্রশ্ন উঠেছে।

২০২১ সালে বিসিবি পরিচালক হিসেবে নির্বাচিত হওয়ার পর মনজুরুল ইসলাম মঞ্জু নারী ক্রিকেট দলের ম্যানেজারের দায়িত্ব পান। তবে ২০২৩ সালে তাঁর বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির গুরুতর অভিযোগ উঠলে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। তৎকালীন তদন্তের পরিপ্রেক্ষিতে তাঁকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলেও, অভিযোগের স্থায়ী ও স্বচ্ছ সমাধান হয়নি বলে সংশ্লিষ্ট মহল মনে করছেন।

নতুন করে সমালোচনার ঝড়

সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে নারী ক্রিকেট দলের অভ্যন্তরে কিছু আচরণগত অনিয়ম এবং ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ ঘিরে নতুন করে সমালোচনা শুরু হয়েছে। ক্রীড়া বিশ্লেষক ও সমর্থকরা মনে করছেন, এ ধরনের ঘটনা শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্খলন নয়, বরং নারী ক্রীড়াবিদদের নিরাপত্তা, মর্যাদা ও মানসিক স্বস্তি নিশ্চিত করতে বিসিবি-এর নীতিগত দুর্বলতা ও ব্যবস্থাপনার ঘাটতিকেই স্পষ্ট করে তুলেছে।

খেলোয়াড়দের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন

বিসিবি-এর অভ্যন্তরীণ সূত্র অনুযায়ী, নারী দলের বেশ কিছু খেলোয়াড় কর্তৃপক্ষের প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। তবে এখনও পর্যন্ত কোনো খেলোয়াড় বা কর্মকর্তা এই বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্য করেননি। নারী অধিকারকর্মীরা মনে করছেন, কর্মপরিবেশে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ও মর্যাদা নিশ্চিত না হলে ক্রিকেটের সামগ্রিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হতে পারে।

"নারী ক্রীড়াবিদদের কর্মপরিবেশে নিরাপত্তা, মর্যাদা ও মানসিক স্বস্তি নিশ্চিত না হলে ক্রিকেটের উন্নয়ন থমকে যেতে পারে।" — নারী অধিকারকর্মী

সাফল্যের মাঝেও অস্বস্তি

জাহানারা আলম, সালমা খাতুন, নিগার সুলতানা জ্যোতির মতো খেলোয়াড়রা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটের সাফল্যের প্রতীক। কিন্তু মাঠের বাইরের এই ধরনের বিতর্ক নারী ক্রিকেটের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছে বলে মনে করছেন ক্রীড়া বিশ্লেষকরা।

প্রয়োজন কঠোর তদন্ত ও স্বচ্ছতা

ক্রীড়া সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, এই পরিস্থিতিতে নিরপেক্ষ তদন্ত, আইনের সঠিক প্রয়োগ, এবং প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা অপরিহার্য। তারা পরামর্শ দিচ্ছেন যে বিসিবি নারী ক্রিকেটের জন্য একটি আলাদা ও স্বাধীন তদন্ত কমিটি গঠন করে অভিযোগের স্বচ্ছ নিষ্পত্তি করতে পারে।

বাংলাদেশের ক্রিকেটপ্রেমী সমাজ আশা করে— যৌন হয়রানি ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগের ন্যায়সংগত তদন্তের মাধ্যমে বিসিবি নারী ক্রিকেটকে একটি নিরাপদ, মর্যাদাপূর্ণ ও আস্থার জায়গা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করবে।