উপকূলের শিশুদের দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাসভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেট ক্লাব উদ্বোধন
১৬ নভেম্বর ২০২৫, ৯:৫৭ পূর্বাহ্ণ
আগামী ডিসেম্বরের ৪ বা ৭ তারিখে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার জোর প্রস্তুতি চলছে নির্বাচন কমিশনে (ইসি)। এজন্য ১৮ নভেম্বর চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করবে সংস্থাটি। আগামী বছরের ৫ বা ১২ ফেব্রুয়ারিকে সম্ভাব্য ভোটগ্রহণের দিন ধরেই সার্বিক প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
সরকার ইতোমধ্যে একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের ঘোষণা দেওয়ায় ইসিকে অতিরিক্ত প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। প্রথমবারের মতো জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একসঙ্গে হওয়ায় ভোটকক্ষ, কর্মকর্তা, সরঞ্জাম, ব্যালট পেপার মুদ্রণ—সব দিকেই বাড়তি চাপ তৈরি হয়েছে। ইসির কর্মকর্তারা বলছেন, ব্যয়ও বেড়ে যেতে পারে ২০ শতাংশের বেশি।
সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শঙ্কা
বাগেরহাটের সংসদীয় আসন পুনর্বহালের রায়সহ সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে ৩০টির বেশি আবেদন রয়েছে আদালতে। এসব আবেদনের নিষ্পত্তি বিলম্ব হলে তফসিলে প্রভাব পড়তে পারে বলে জানিয়েছেন ইসি সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, আদালতের সার্টিফায়েড কপি পাওয়ার পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে কমিশন।
প্রস্তুতির শেষ ধাপ
ইসি সূত্র জানায়, রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া প্রায় শেষ পর্যায়ে। চলতি সপ্তাহেই জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি), বাংলাদেশ আমজনগণ পার্টি ও বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)কে নিবন্ধন দেওয়া হবে।
ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হবে ১৮ নভেম্বর। এদিনই উদ্বোধন করা হবে ‘পোস্টাল ভোট বিডি’ অ্যাপ, যার মাধ্যমে সরকারি কর্মকর্তা, প্রবাসী এবং কয়েদিরা পোস্টাল ভোটের জন্য নিবন্ধন করতে পারবেন। ১০ লাখ করে মোট ২০ লাখ পোস্টাল ভোটের প্রস্তুতি নিয়েছে ইসি।
দেশে বর্তমানে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ১২ হাজার ৩৮৪ জন। ৩০০ আসনে মোট ভোটকেন্দ্র ৪২,৭৬১টি ও ভোটকক্ষ ২ লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৯টি। ভোটগ্রহণে নিয়োজিত থাকবে ৯-১০ লাখ কর্মকর্তা এবং ৭-৮ লাখ আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
একই দিনে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট
প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস বৃহস্পতিবার জাতির উদ্দেশে ভাষণে বলেন, দেশের দীর্ঘমেয়াদি স্বার্থ বিবেচনা করে একদিনেই জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তিনি মনে করেন, এতে নির্বাচন হবে সাশ্রয়ী ও উৎসবমুখর।
এদিকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসির উদ্দিন জানিয়েছেন, সরকারিভাবে প্রাপ্ত সকল তথ্য বিবেচনায় নিয়ে কমিশন আলোচনা করে মতামত দেবে।
ইসির সংশ্লিষ্টরা বলছেন, একই দিনে নির্বাচন পরিচালনায় ব্যালট পেপার, ব্যালট বাক্স, কর্মী নিয়োগ, প্রশিক্ষণ—সব ক্ষেত্রেই বাড়তি প্রস্তুতি প্রয়োজন। বিশেষ করে গণভোটের ব্যালট গণনা করতে সময় লাগবে বেশি—যা পুরো নির্বাচনী ঘোষণায় নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করবে।
ইতোমধ্যে আরপিও সংশোধনসহ ভোটার তালিকা আইন, নির্বাচন কর্মকর্তা বিশেষ বিধান আইন, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় আইন, ভোট কেন্দ্র নীতিমালা, পর্যবেক্ষক নীতিমালা ও সাংবাদিক নীতিমালা সংশোধন কাজ শেষ করেছে ইসি। সংশোধিত আরপিও অনুযায়ী দল ও প্রার্থীর আচরণবিধিও প্রণয়ন করা হয়েছে।
সব মিলিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধকে সামনে রেখে তফসিল ঘোষণার কাউন্টডাউনে ব্যস্ত সময় পার করছে নির্বাচন কমিশন।