উপকূলের শিশুদের দুর্যোগের আগাম পূর্বাভাসভিত্তিক জ্ঞান বৃদ্ধির লক্ষ্যে মেট ক্লাব উদ্বোধন
১৪ নভেম্বর ২০২৫, ১০:৫৭ অপরাহ্ণ
রাজশাহী মহানগরীর ডাবতলার স্পার্ক ভিউ ভবনে বিচারকের ভাড়া বাসায় বিচারকপুত্র তৌসিফের নৃশংস হত্যাকাণ্ড শহরজুড়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকাল সোয়া ৩টার দিকে সংঘটিত এ ঘটনায় বিচারকের স্ত্রী তাসমিন নাহার লুসি গুরুতর আহত হন। হামলাকারী লিমন মিয়াও আহত অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
শুক্রবার সকালে ঘটনাস্থলে গিয়ে জানা যায়, পুলিশের নির্দেশে ফ্ল্যাটটিতে কাউকে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। ভবনের কেয়ারটেকার মেসের আলী জানান, ঘটনার আগে বিকেল আড়াইটার পরপরই একটি ব্যাগ হাতে নিয়ে ভবনে প্রবেশ করেন লিমন মিয়া। অতিথি রেজিস্টারে নাম লিখে তিনি সরাসরি বিচারকের ফ্ল্যাটে ওঠেন। প্রায় আধঘণ্টা পর কাজের মেয়ের চিৎকারে কেয়ারটেকার ঘটনাস্থলে উঠে গিয়ে তৌসিফকে মেঝেতে রক্তাক্ত অবস্থায় দেখতে পান। একইভাবে লিমন মিয়াকেও অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফ্ল্যাটের ভেতর বিচারকের স্ত্রী লুসিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করা হয়।
পুলিশের তদন্তসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা গেছে—ফ্ল্যাটে প্রবেশের পর বিচারকের স্ত্রী লিমনকে নিয়ে প্রশ্ন করলে উত্তপ্ত বাকবিতণ্ডা শুরু হয়। একপর্যায়ে লিমন দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে বিচারকের স্ত্রীকে লক্ষ্য করে ছুরি দিয়ে হামলা চালায়। তার চিৎকার শুনে ঘুমন্ত অবস্থা থেকে ছেলে তৌসিফ বেরিয়ে এসে মাকে রক্ষার চেষ্টা করলে লিমন ওড়না দিয়ে তার গলা টিপে ধরেন এবং পরে ছুরিকাঘাত করেন। এতে তৌসিফ গুরুতর আহত হয়ে অচেতন হয়ে পড়েন। পরে হাসপাতালে নেওয়া হলে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তারা আরও জানান, ধস্তাধস্তির সময় লিমনের হাতেও কেটে রক্ত পড়ে। হামলার পর তিনি ছুরিটি জানালা দিয়ে ফেলে দিয়ে নিজেকে মৃতের ভান করে মেঝেতে শুয়ে পড়েন। ঘটনাস্থল পরিদর্শনে সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট ভবনের পেছনের ঝোপ থেকে রক্তাক্ত ছুরিটি উদ্ধার করে।
ঘটনার পর রাজপাড়া থানা পুলিশ লিমন মিয়াকে গ্রেফতার করেছে। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই আসাদুল ইসলাম বলেন, “তদন্ত প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এখনো হত্যার কারণ স্পষ্ট নয়। তবে আহতদের অবস্থা ও উদ্ধারকৃত আলামত বিশ্লেষণ করে আমরা অগ্রসর হচ্ছি।”
বর্তমানে বিচারকের স্ত্রী লুসি রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ৩ নম্বর কেবিনে এবং লিমন মিয়া ৪ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ ঘটনায় এলাকায় শোক এবং উদ্বেগের ছাপ স্পষ্ট। পুলিশের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে—হত্যাকাণ্ডের প্রকৃত কারণ উদঘাটনে সমস্ত প্রমাণ ও সাক্ষ্য গুরুত্বসহকারে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।