বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সর্বাধিক পঠিত


গোয়ালন্দে ইমাম মেহেদী দাবিদার নুরাল পাগলের কবরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা


গোয়ালন্দে ইমাম মেহেদী দাবিদার নুরাল পাগলের কবরকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

গোয়ালন্দ পাক দরবার শরীফের পীর, ও ইমাম মেহেদী দাবিদার নুরুল হক ওরফে নুরা পাগলার (৮৫)  কবর সহ কয়েকটি বিষয় নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।

এ অবস্থায় তৌহিদী জনতার ব্যানারে মঙ্গলবার  শহরে বিক্ষোভ মিছিল আহবান করলে নড়েচরে বসে প্রশাসন।

সোমবার বিকেল সাড়ে ৩ টায় জেলা ও উপজেলা প্রশাসন ও জেলা পুলিশের উচ্চ পর্যায়ের একটি দল ঘন্টাব্যাপী নুরাল পাগলের দরবার শরীফ ও তার কবর পরিদর্শন করে উপজেলা হলরুমে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমঝোতার লক্ষে শান্তি সভায় বসে।

পরিদর্শন টিমে ছিলেন রাজবাড়ীর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মো. তারিফ-উল-হাসান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) আবু রাসেল, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান, গোয়ালন্দ ঘাট থানার অফিসার ইনচার্জ ওসি মোহাম্মদ রাকিবুল ইসলাম, রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি মাওলানা মোঃ ইলিয়াস মোল্লা, গোয়ালন্দ উপজেলা ইমাম কমিটির সভাপতি  মাওলানা মো. জালাল উদ্দিন প্রামানিক, গোয়ালন্দ উপজেলা যুবদলের আহবায়ক ফারুক দেওয়ান,পৌর যুবদলের আহবায়ক দেলোয়ার হোসেন মন্ডল, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আবু সাইদ মন্ডল, উপজেলা ছাত্রদলের সভাপতি রেজাউল হাসান মিঠু সহ বিভিন্ন পর্যায়ের বিশিষ্ট ব্যাক্তিবর্গ।

এ সময় নুরাল পাগলের ছোট ছেলে মেহেদী নুর জিলানী সেখানে উপস্হিত থেকে তাদেরকে স্বাগত জানান।

পরিদর্শন শেষে অনুষ্ঠিত সভায় ওলামায়ে কেরাম ও তৌহিদী জনতার নেতৃবৃন্দ তিনটি বিষয়ে অভিযোগ তুলে ধরে ও নিরসনের দাবি  জানান।

দাবিগুলো হলো নুরাল পাগলের কবরটি উঁচু স্থান থেকে নিচু স্থানে স্হানান্তর করতে হবে, পবিত্র কাবা শরীফের আঁদলে করা কবরটির কালো রং পরিবর্তন করতে হবে, দরবারে ইমাম মেহেদীর নাম সম্বলিত সাইনবোর্ড সরিয়ে ফেলতে হবে।

সভায়  উপস্থিত রাজবাড়ী জেলা ইমাম কমিটির সভাপতি মাওলানা মোঃ ইলিয়াস মোল্লা বলেন, আমাদের তিনটি দাবির মধ্যে তারা দুটি দাবি মেনে নিয়েছে। কবর স্থানান্তরের বিষয়ে আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সময় নিয়েছে। যে কারনে আমরা আপাতত  বিক্ষোভ কর্মসূচি স্থগিত করেছি।

তিনি আরো বলেন, নুরাল পাগলার কবরটি যেভাবে উঁচু করা হয়েছে, তাতেএটা পরবর্তীতে এটা তাওয়াফ করা হবে।। ১০ ফুট উঁচু কবরটিতে  প্রতিনিয়ত শিরকি কাজ চলবে। এজন্য আমাদের দাবি কাবার আলোকে যে রংটি করা হয়েছে সে রংটি মুছে সাদা রং করে দিতে হবে এবং কবরটি স্বাভাবিক ভাবে নিচু স্তরে মাটির লেভেলে নামিয়ে আনতে হবে।

তিনি হুশিয়ারী দিয়ে বলেন, ওই দরবারে যদি এ ধরনের কাজ অব্যাহত থাকে তাহলে আমরা কঠোর আন্দোলনে নামতে বাধ্য হব। আমরা গোয়ালন্দে কোন রকম শিরকি কাজ করতে দেব না।

মানুষ যেন এখানে এসে  ঈমান হারা না হয় সে জন্য আমাদের এ অবস্হান। , এখানে আমাদের ব্যক্তিগত কোন স্বার্থ নেই বলে তিনি অভিমত ব্যাক্ত করেন।

এদিকে দরবার শরীফের প্রতিনিধি দলের সদস্য ও গোয়ালন্দ উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব আবু সাইদ মন্ডল বলেন, আমরা দেখছি গত ৫ই আগস্টের পর থেকে দেশে তৌহিদি জনতার ব্যানারে মব সৃষ্টি করে ধর্মীয় স্বাধীনতায় ব্যাঘাত ঘটানোসহ নানা ধরনের ঘটনা ঘটছে। আমরা গোয়ালন্দে তেমন কিছু চাই না। ধ

মব সৃষ্টি করে ইসলামের উপর আঘাত করলে যেকোন সংঘাত ঘটে যেতে পারে।আমরা কোন সংঘাত চাই না। যার যার ধর্ম সে সে পালন করবে।

গোয়ালন্দ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাহিদুর রহমান বলেন, সোমবার সকালে জেলা প্রশাসক স্যার একটি মধ্যস্থতা কমিটি গঠন করে দেন। বিক্ষোভ কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে আমরা মধ্যস্থতা কমিটি মরহুম নুরুল ইসলামের কবরস্থান ও দরবার শরীফ পরিদর্শন করি। পরিদর্শন শেষে উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনেছি।    তৌহিদী জনতার বিক্ষোভ কর্মসূচি আপাতত স্থগিত করা হয়েছে।

দরবার শরীফের বিতর্কিত সাইনবোর্ড ও কবরের কালো রং মুছে দিতে তারা সম্মত হয়েছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় আমরা সর্বদা সতর্ক রয়েছি।