
গোয়ালন্দে ইমাম মেহেদী দাবিদার নুরাল পাগলের কবরকে
২ সপ্তাহ আগে
২২ জুলাই ২০২৫, ১২:৩৬ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি (বিআরটিএ)-এর গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রযুক্তি প্রকল্প ‘ড্রাইভিং লাইসেন্স ব্যবস্থাপনা’ কাজটি সম্প্রতি কোনো টেন্ডার ছাড়াই সরাসরি দেয়া হয়েছে কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমস লিমিটেড (সিএনএস)-কে, যা সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হকের পরিবারের মালিকানাধীন একটি প্রতিষ্ঠান। এতে প্রশাসনিক স্বচ্ছতা, প্রতিযোগিতা ও ন্যায্যতা নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন।
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের দায়িত্বে থাকা বিআরটিএ’র পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার শীতাংশু শেখর বিশ্বাস-এর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি নিয়মবহির্ভূতভাবে এবং অন্য প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব উপেক্ষা করে সিএনএস-কে কাজটি পাইয়ে দিয়েছেন। সূত্র জানায়, তিনি প্রকল্পটিতে ‘প্রযুক্তিগত সমস্যা’ এবং ‘ব্যবস্থাপনাগত অসুবিধা’ দেখিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রতিষ্ঠানের প্রস্তাব বাতিল করেছেন।
বিএমটিএফ-এর প্রস্তাব উপেক্ষা
বিশ্বস্ত সূত্রমতে, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী পরিচালিত রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান বিএমটিএফ (বাংলাদেশ মেশিন টুলস ফ্যাক্টরি) বিআরটিএ’র কাছে একটি প্রস্তাব জমা দিয়েছিল, যেখানে তাদের দক্ষতা, অবকাঠামো ও স্বচ্ছতা তুলে ধরা হয়েছিল। একাধিক কর্মকর্তা এই প্রস্তাবকে সময়োপযোগী ও জাতীয় স্বার্থসংশ্লিষ্ট বলে মনে করলেও তা অজ্ঞাত কারণে বিবেচনায় নেয়া হয়নি।
বাজারে মনোপলি তৈরির আশঙ্কা
এর আগেও সিএনএস সরকারিভাবে একাধিক ডিজিটাল প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে—স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স, ডিজিটাল নাম্বার প্লেট, যানবাহনের ফিটনেস পর্যালোচনা এবং টোল কালেকশন ব্যবস্থাপনায় প্রতিষ্ঠানটির একচেটিয়া অংশগ্রহণ রয়েছে। সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, নতুন এই প্রকল্পটিও সিএনএস-এর হাতে তুলে দিলে একটি মনোপলি (monopoly) তৈরির আশঙ্কা প্রবল হয়ে উঠবে, যা দেশের প্রযুক্তি খাতে প্রতিযোগিতা ধ্বংস করবে এবং ভবিষ্যতে রাষ্ট্রীয় স্বার্থকে বিপন্ন করতে পারে।
স্বজনপ্রীতির অভিযোগ
বিশেষজ্ঞ ও ট্রান্সপারেন্সি সংস্থাগুলোর মতে, সাবেক প্রভাবশালী মন্ত্রীর পরিবারের প্রতিষ্ঠানের প্রতি এমন অন্ধ পক্ষপাত স্বজনপ্রীতির একটি উৎকট উদাহরণ। দেশের নীতিনির্ধারক প্রতিষ্ঠানগুলো যদি ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হয়, তবে সরকারিভাবে দক্ষ প্রতিষ্ঠানগুলো উপেক্ষিত হয়ে পড়বে, যা দীর্ঘমেয়াদে প্রকল্পের মান ও টেকসই ব্যবস্থাপনা ব্যাহত করবে।
স্বচ্ছ তদন্তের দাবি
এই প্রক্রিয়া নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক তৈরি হওয়ায় সুশীল সমাজ এবং তথ্যপ্রযুক্তি খাতের নেতারা এই নিয়োগের পেছনে স্বচ্ছ তদন্ত দাবি করছেন। তাঁদের মতে, এই ধরনের প্রকল্পে সরকারিভাবে নিরপেক্ষ টেন্ডার প্রক্রিয়া ও নীতিগত স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা না হলে ভবিষ্যতে আরও বড় দুর্নীতি ও একচেটিয়াতন্ত্রের জন্ম হবে।
সাংবাদিকদের অনুসন্ধান ও সরকারি মহলের জবাবদিহিতা নিশ্চিত না হলে, এ ধরনের ঘটনা প্রশাসনিক অপব্যবহারের ধারাবাহিকতা তৈরি করতে পারে—যা দেশের ডিজিটাল অগ্রযাত্রাকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা।