বৃহস্পতিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৫

সর্বাধিক পঠিত


আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে: রুমিন ফারহানা


১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো;

২৪ আগস্ট ২০২৫, ৭:৪৬ অপরাহ্ণ 

আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা হয়েছে: রুমিন ফারহানা

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষির ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। | ছবি: সংগৃহীত

  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁ নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে নির্বাচন কমিশনের শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষির ঘটনার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা। 

আমি ভেবেছিলাম, নির্বাচন কমিশনের মর্যাদা রক্ষায় কেউ গুন্ডাপান্ডা নিয়ে ঢুকবে না। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের প্রার্থী (খালেদ হোসেন মাহবুব) ২০ থেকে ২৫ জন নিয়ে এসে গুন্ডামি করেছেন। ১৫ বছরে যেটা হয়নি, আজ সেটাই হলো—অলমোস্ট আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে। যে বিএনপির নেতা–কর্মীদের জন্য ১৫ বছর লড়েছি, তাঁরাই আমাকে ধাক্কা দিল।  কথাগুলো বলেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক রুমিন ফারহানা।

আজ রোববার দুপুরে রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানিতে ধাক্কাধাক্কি ও কিল-ঘুষির ঘটনার পর সাংবাদিকদের এ কথা বলেন রুমিন ফারহানা।

অভিযোগ করে রুমিন ফারহানা বলেন, কমিশনে আমি ভদ্রলোক নিয়ে এসেছি, গুন্ডা নয়। কিন্তু তারা আবোল–তাবোল বলে যাচ্ছিল। শেষ দিকে আমি বক্তব্য দিতে দাঁড়ালে আমাকে ধাক্কা দেওয়া হয়। আমার লোকজনকে মারধর করা হলে তারাও প্রতিউত্তর দিয়েছে।

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানিকালে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে

সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে আজ রোববার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে নির্বাচন কমিশনে শুনানিকালে ধাক্কাধাক্কি-হাতাহাতি-কিল-ঘুষির ঘটনা ঘটে ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

আজ দুপুর ১২টার দিকে নির্বাচন কমিশনের এই শুনানি শুরু হয়। কিছুক্ষণ পর রুমিন ফারহানার এলাকা ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ ও পাশের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে শুনানি হয়। এর এক পর্যায়ে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে।

সীমানা পুনর্নির্ধারণে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার বিজয়নগর উপজেলার তিনটি ইউনিয়নকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে কেটে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)-এর সঙ্গে যুক্ত করার খসড়া করেছে নির্বাচন কমিশন। এই ইউনিয়নগুলো হলো বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর। নির্বাচন কমিশনের এই প্রস্তাবের পক্ষে রুমিন ফারহানা।

সীমানা নির্ধারণ নিয়ে বিএনপির এই কেন্দ্রীয় নেতা বলেন,  দেশনেত্রী খালেদা জিয়া সব সময় বলেছেন, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় বিএনপি নির্বাচন করতে চায়। বর্তমান সীমানা ফ্যাসিস্ট সরকার নিজেদের সুবিধায় নির্ধারণ করেছে। আমরা চাই, ২০০৮ সালের আগের সীমানায় ফিরে যাওয়া হোক।

এই অবস্থানের পক্ষে যুক্তি তুলে ধরে রুমিন ফারহানা বলেন,  বর্তমান সীমানায় ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য নেই। আমাদের আসনে ভোটার প্রায় ৪ লাখ ২০ হাজার, বিজয়নগরে ৬ লাখ ১০ হাজার আর সদরে ৬ লাখ। সরাইলের সঙ্গে যদি বুধন্তী, চান্দুরা ও হরষপুর ইউনিয়ন যুক্ত হয়, তবে ভোটার সংখ্যায় ভারসাম্য তৈরি হবে।

ওই তিন ইউনিয়নের বাসিন্দারা ভৌগোলিক ও সামাজিকভাবে সরাইলের সঙ্গে সম্পৃক্ত বলেও দাবি করেন রুমিন ফারহানা। তিনি বলেন, তাঁদেরকে দাপ্তরিক কাজ ও জমি রেজিস্ট্রি সরাইল উপজেলাতেই করতে হয়। যাতায়াতের দিক থেকেও সরাইল তাঁদের জন্য সহজ।

খালেদ হোসেনের পাল্টা বক্তব্য

রুমিন ফারহানা যাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশী ইঞ্জিনিয়ার খালেদ হোসেন মাহবুব জেলা বিএনপিরও সভাপতি। শুনাতিতে মারামারির প্রসঙ্গে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আসলে এনসিপির সঙ্গে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানার একটা তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। এটা আসলে দুঃখজনক ও অনাকাঙ্ক্ষিত। এই লেভেলে এসে এই ধরনের ঘটনা খুবই দুঃখজনক।

সীমানা পুনর্নির্ধারণ নিয়ে খালেদ হোসেন বলেন,  বিজয়নগরের ১০ ইউনিয়নের মধ্যে ৩টিকে সরাইল-আশুগঞ্জের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে ভুল তথ্যের ভিত্তিতে। অথচ এই ইউনিয়নগুলো ভৌগোলিকভাবে বিজয়নগরের সঙ্গেই সম্পৃক্ত। আমরা চাই, এগুলো সদর-৩ আসনেই থাকুক।

খালেদ হোসেন আরও বলেন,  কমিশন শুনানি নিয়েছে। কিছু হট্টগোল হয়েছে, যেখানে আমাদের প্রতিপক্ষ অনেক ভুল তথ্য উপস্থাপন করেছে, যেগুলো যৌক্তিক নয়। আমরা মনে করি এই তিন ইউনিয়ন সদর বিজয়নগরের সঙ্গেই থাকা উচিত।

এনসিপি নেতার অভিযোগ

শুনানিতে মারামারির জন্য রুমিন ফারহানার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ। তিনি অভিযোগ করে বলেন, ‘শুনানির সময় আমি বক্তব্য দিতে গেলে রুমিন ফারহানা আমাকে ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেন। এরপর তাঁর লোকজন আমাকে লাথি-ঘুষি মারতে থাকেন। আমার পাঞ্জাবি ছিঁড়ে যায়, হাতে আঘাত পেয়েছি। যেভাবে ছাত্রলীগ আমাদের ক্যাম্পাসে পিষত, সেভাবেই আমাকে পিষেছে।’

নির্বাচন কমিশনে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মো. আতাউল্লাহ অভিযোগ করেন, কমিশন তখন আর কাউকে কথা বলার সুযোগ দেয়নি। বিএনপি ছাড়া জামায়াতকেও কথা বলতে দেওয়া হয়নি। 

এনসিপি নেতা আতাউল্লাহর অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে রুমিন ফারহানা বলেন,  মুশকিলের বিষয় হচ্ছে, তিনি পরিচিত মুখ নন, তিনি এনসিপি থেকে এসেছেন, না জামায়াত থেকে এসেছেন, তা আমি জানি না। তবে উনি প্রথম, সাদা পাঞ্জাবি পরিহিত একজন আমাকে ধাক্কা দিয়েছেন। তারপর আমার লোকজন তো বসে থাকবে না। আমি তো একজন মহিলা। পরে যখন আমার লোকজনকে মারধর করেছে, আমার লোকজনও জবাব দিয়েছে। এটা সিম্পল।