রবিবার, ১৬ মার্চ, ২০২৫

অক্সিজেন নেই, মৃত্যুর মুখে ইনকিউবেটরে থাকা ৪৫ শিশু


১২ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৩৯ পূর্বাহ্ণ 

অক্সিজেন নেই, মৃত্যুর মুখে ইনকিউবেটরে থাকা ৪৫ শিশু
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার রাতেই হামলা চালিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ)। জ্বালানি ফুরিয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে হাসপাতালের জেনারেটর ব্যবস্থা। এ অবস্থায় রোগীরা এখন মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করছে। আর মৃত্যুর অপেক্ষায় রয়েছে ইনকিউবেটরের ৪৫ শিশু। যে কারণে হাসপাতালের ইনকিউবেটরে থাকা ৪৫ শিশু মৃত্যুর প্রহর গুনছে। গতকাল শনিবার (১১ নভেম্বর) গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আশরাফ আল–কিদরাকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানিয়েছে, ‘জ্বালানি সংকটে অস্ত্রোপচার বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ইনকিউবেটরে থাকা এক নবজাতকের মৃত্যু হয়েছে, যেখানে আরও ৪৫ শিশু মৃত্যুর প্রহর গুনছে।’

গাজার উপ-স্বাস্থ্যমন্ত্রী ইউসেফ আবু আলরিশ বলেছেন, হামাস-নিয়ন্ত্রিত গাজার বৃহত্তম আল-শিফা হাসপাতালের ইনকিউবেটরে ৪৫টি নবজাতক শিশু রয়েছে। ইসরাইলি স্নাইপাররা হাসপাতালের চারদিকে অবস্থান নিয়েছে। আকাশ থেকে ড্রোন তাক করে রাখা হয়েছে। হাসপাতাল থেকে কেউ বের হওয়ার চেষ্টা করলেই সেনারা তাকে লক্ষ্যবস্তু বানাচ্ছে।

ইসরাইলি সামরিক বাহিনী বলছে, গত মাসে ইসরাইলের দক্ষিণাঞ্চলে হামলাকারী হামাস গোষ্ঠী শিফা হাসপাতালের নিচে থেকে তাদের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছে। এ কারণে এ হাসপাতালগুলো সামরিক লক্ষ্যে পরিণত হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তবে হামাস বেসামরিক নাগরিকদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করার অভিযোগ অস্বীকার করছে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় বলছে, ইসরাইলের হামলা বেড়ে যাওয়ার কারণে এবং হাসপাতালের কাছেই হামলা চালানোর কারণে রোগী, স্বাস্থ্যকর্মী এবং হাসপাতালে ও হাসপাতালের কাছের ভবনে আশ্রয় নেয়া হাজার হাজার শরণার্থী ঝুঁকিতে রয়েছে।

এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজায় আগ্রাসন চালানোর জন্য ইসরাইলের সেনাবাহিনীকে ‘সন্ত্রাসী গোষ্ঠী’ ঘোষণার আহ্বান জানিয়েছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। গতকাল শনিবার (১১ নভেম্বর) গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসনের সবশেষ পরিস্থিতি আলোচনার জন্য সৌদি আরবের রিয়াদে শুরু হওয়া আরব-ইসলামিক শীর্ষ সম্মেলনে ইসলামি দেশগুলোর সরকারদের উদ্দেশে এ আহ্বান জানান তিনি।

ইব্রাহিম রাইসি বলেন, ‘ইসলামি দেশগুলোর সরকারের উচিত ইসরাইলের দখলদার ও আগ্রাসী সরকারের সেনাবাহিনীকে সন্ত্রাসী সংগঠন হিসেবে ঘোষণা করা।’

মসরের প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ এল-সিসি বলেন, ‘আত্মরক্ষা বা কোনো কিছুর অজুহাতে’ গাজার সাধারণ মানুষকে সমষ্টিগত শাস্তি দেওয়ার বিষয়টি কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেন, ইসরাইলি ও ফিলিস্তিনিদের মধ্যকার সমস্যার স্থায়ী সমাধানের জন্য একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন আয়োজন করতে হবে। ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস গাজায় হামলা বন্ধে ইসরাইলের ওপর যুক্তরাষ্ট্রকে চাপ প্রয়োগের আহ্বান জানিয়েছেন।

সম্মেলনের আয়োজক সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান গাজায় তাৎক্ষণিক যুদ্ধবিরতি এবং সব জিম্মিকে ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এছাড়া তিনি বলেছেন, গাজার মানুষের ওপর যে নির্যাতন চালানো হচ্ছে সেটি মেনে নেওয়া যায় না। গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের জন্য তিনি ইসরাইলকে দায়ী করেন। কাতারের আমিরও সম্মেলনে ইসরাইলের কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, হামাসের কমান্ড সেন্টার থাকার মিথ্যা দাবি করে ইসরাইল গাজার হাসপাতালগুলোতে হামলা চালাচ্ছে, যা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।