বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভীড়


২৬ জানুয়ারী ২০২৪, ৭:৪০ অপরাহ্ণ 

সূর্যমুখীর বাগানে দর্শনার্থীদের ভীড়

সূর্যমুখী ফুলের বাগান হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের বিনোদন কেন্দ্র | ছবি: আজকের প্রসঙ্গ

  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

নরসিংদীতে মেঘনা নদীর তীরে পতিত জমিতে ভোজ্যতেলের বীজের জন্য আবাদ করা সূর্যমুখী ফুলের বাগান হয়ে উঠেছে দর্শনার্থীদের বিনোদন কেন্দ্র। প্রতিদিন ভীড় করছে দর্শনার্থীরা। বাগানে আসা দর্শনার্থীদের কাছ থেকে ৩০ টাকা প্রবেশ ফি নেওয়া হচ্ছে। অল্প টাকায় মনোমুগ্ধকর পরিবেশে সূর্যমুখী ফুলের সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা। এতে প্রতিদিন বাগান মালিকরা আয় করছেন প্রায় আট হাজার টাকা।

বাগান কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, গত তিন বছর ধরে নরসিংদী পৌর শহরের নাগরিয়াকান্দী এলাকায় মেঘনা তীরবর্তী শেখ হাসিনা সেতুর পাশে সূর্যমুখীর আবাদ করা হচ্ছে। সূর্যমুখী বাগানে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা জানান, ফেইসবুকে বাগানটি দেখে নারায়ণগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুরসহ বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে বেড়াতে এসেছেন।

কথা হয় জহর বণিক গণগ্রন্থাগারের সহ-সভাপতি সাথী বণিকের সাথে। তিনি বলেন, ৩০ টাকার টিকিট কেটে এই সূর্যমুখী ফুলের বাগানে প্রবেশ করেছি। এই বাগান ফেইসবুকে অনেক দেখেছি। তাই সরাসরি দেখতে এসেছি। সূর্যমুখী ফুল দিনের বেলায় সব সময় পূর্ব দিকে মুখ করে থাকে। তবে তীব্র শীতের কারণে এখন সূর্য নেই। তবুও ফুলগুলো এখনো পূর্ব দিকেই মুখ করে আছে। ফেইসবুকে দেখে মনোহরদী থেকে বাগানটি দেখতে এসেছি।

অন্য এক দর্শনার্থী পল্লী চিকিৎসক জয়ন্ত বণিক বলেন,  একমাত্র ছেলে অনন্ত বণিক কে নিয়ে ঘুরতে এসেছি। অনেক ভালো লাগছে। এর আগে কখনো সূর্যমুখী ফুলের বাগানে আসিনি। সূর্যমুখী ফুলের বাগান এতো সুন্দর আগে জানা ছিল না।

বাগানের উদ্যোক্তা তৌহিদুল ইসলাম মাসুম বলেন, আমি একজন ভ্রমণপিপাসু লোক। দেশ-বিদেশে ঘুরে বেড়াই। মানুষকে বিনোদন দেওয়ার জন্য এই বাগান করেছি। বাগানে প্রবেশের ফি নিয়ে অনেক সময় কথা শুনতে হয়। সবাই তেল উৎপাদনের জন্য সূর্যমুখী বাগান করলেও আমরা বিনোদনকেন্দ্র হিসেবে চাষ করেছি। এতে আমাদের বাগানের সৌন্দর্য রক্ষার জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বাগানে প্রতিদিন কয়েকশ দর্শনার্থী ঘুরতে আসেন। এতে আমাদের প্রায় ছয় থেকে আট হাজার টাকা আয় হয়। তবে বাগানে প্রবেশ করতে কারও কাছে টাকা না থাকলে ফ্রিতেও প্রবেশ করতে দেওয়া হয়।

সূর্যমুখী বাগানের অন্য উদ্যোক্তা মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, মেঘনার তীরে প্রথমে সূর্যমুখী বীজের মাধ্যমে পরিশোধিত তেল পাওয়ায় জন্য পতিত জমিতে আবাদ করা হয়। কিন্তু শেখ হাসিনা সেতু দেখতে আসা দর্শনার্থীরা বাগানে প্রবেশ করে তা নষ্ট করে ফেলে। এরপর বিকল্প চিন্তা হিসেবে বাণিজ্যিকভাবে বড় পরিসরে সূর্যমুখী আবাদের পরিকল্পনা করি। আমাদের এখানে প্রায় ২০ জন কর্মচারী রয়েছেন। ২০ জন কর্মচারীর বেতন-ভাতাসহ আনুষঙ্গিক খরচ মিলে বাগান করে লোকসান গুনতে হচ্ছিল। তাই পরবর্তী সময়ে দর্শনার্থীদের বাগানে প্রবেশের জন্য টিকিটের ব্যবস্থা করি।

নরসিংদীর কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মুহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, জেলায় ২০ হেক্টর জমিতে সূর্যমুখীর চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। তবে ১৮ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। মেঘনা নদীর তীরে ঢালু জমিতে সূর্যমুখী চাষের জন্য প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে। সূর্যমুখীর ভোজ্যতেল স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর। এই তেলের বাজারে চাহিদা প্রচুর। শেখ হাসিনা সেতু-সংলগ্ন নাগরিয়াকান্দীতে ট্যুরিজম সানফ্লাওয়ার গার্ডেনের উদ্যোক্তারা যদি আমাদের কাছে সহযোগিতা চায় তবে তাদের সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।