বাগেরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় অপর ট্রাকের হেলপার নিহত
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ
দিন দিন বৈশ্বিক উষ্ণতা যত বাড়ছে, ঠিক ততই পরিবেশগত বিপর্যয়ের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বিশ্ব। এমন পরিস্থিতি মোকাবিলায় যখন বিশ্বনেতারা কার্বন নিঃসরণ শূন্যের কোঠায় নিয়ে আসার চেষ্টা করছেন ঠিক তখনই জলবায়ু বিপর্যয় নিয়ে ভয়াবহ তথ্য সামনে নিয়ে এসেছেন বিজ্ঞানীরা। বিজ্ঞানীদের দাবি, যদি এভাবেই পৃথিবীর তাপমাত্রা বাড়তে থাকে তাহলে আগামী ১০ বছরের মধ্যেই ব্যাপক পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে বিশ্ব।
উইয়ন নিউজের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০ জনেরও বেশি বিজ্ঞানীর সমন্বিত এক প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন এমন মাত্রায় পৌঁছেছে যা যেকোনো সময় বিপজ্জনক ‘ডমিনো ইফেক্ট’ বা পরিবেশগত বিপর্যয় করতে পারে। আর তা হলে জনজীবন হুমকির মধ্যে পড়তে পারে।
‘গ্লোবাল টিপিং পয়েন্ট শীর্ষক’ ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ৫টি ভয়াবহ বিপর্যয় আমাদের দোরগোড়ায় এসে পৌঁছেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির মাত্রা প্রাক্-শিল্পযুগের চেয়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে বেঁধে রাখা না গেলে আরও তিনটি বিপর্যয় অতি দ্রুতগতিতে আঘাত হানবে।
ইংল্যান্ডের ইউনিভার্সিটি অব এক্সেটারের গ্লোবাল সিস্টেম ইনস্টিটিউটের টিম লেনটন বলেন, বর্তমান পৃথিবী টিপিং পয়েন্ট বা লক্ষণবিন্দুতে রয়েছে এবং এমন সব লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে, যা মানবজাতি আগে কখনো দেখেনি। টিপিং পয়েন্ট হলো এমন এক অবস্থা, যে ক্ষেত্রে বড় ধরনের বিপর্যয় প্রকাশিত হওয়ার আগে ছোট ছোট লক্ষণ দেখা দেয়।
টিম লেনটন বলছেন, পৃথিবী এখন যে টিপিং পয়েন্ট বা লক্ষণ বিন্দুতে রয়েছে, সেগুলো এমন হুমকি সৃষ্টি করতে পারে, যা মানব ইতিহাসে কখনো দেখা যায়নি। এই পরিস্থিতি বিশ্বজুড়ে ‘ডমিনো ইফেক্ট’ ঘটাতে পারে।
এর ফলে পুরো পৃথিবীর বাস্তুতন্ত্র ভেঙে পড়তে পারে, নিত্যপ্রয়োজনীয় খাদ্যের উৎপাদন মারাত্মকভাবে কমে যেতে পারে। এর সামাজিক প্রভাব হিসেবে গণ বাস্তুচ্যুতি দেখা দিতে পারে অর্থাৎ দুর্যোগের কারণে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক মানুষকে ঘরবাড়ি ছাড়তে হতে পারে। দেশে দেশে রাজনৈতিক ও আর্থিক বিপর্যয়ও দেখা দিতে পারে।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের কোর্পানিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিসের ডেপুটি প্রধান সামান্থা বার্গেস বলেছেন, প্রাক শিল্পের স্তর থেকে ২সি এর থেকে বেশি উষ্ণতার দু’দিনসহ ব্যতিক্রমী নভেম্বরের বৈশ্বিক তাপমাত্রার কারণে ২০২৩ সাল হবে রেকর্ড ইতিহাসের সবচেয়ে উষ্ণতম বছর।
ফেলে আসা মাসগুলোর উষ্ণতার পরিসংখ্যান দেখে ২০২৩ সালই যে আমাদের এই পৃথিবীতে সবচেয়ে উষ্ণ বছর হতে চলেছে তা আগেই একরকম নিশ্চিত করেছিলেন বিজ্ঞানীরা।
এদিকে, সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে জলবায়ু সম্মেলন কপ ২৮ উদ্বোধন করে সেকথাই আরেক দফায় নিশ্চিত করেন জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসে। সম্মেলনের শুরুতেই তিনি বলেন, মানবতার ইতিহাসে ২০২৩ সালই হতে চলেছে এখন পর্যন্ত রেকর্ড করা সবচেয়ে ঊষ্ণ বছর।
বিশ্ব নেতাদেরকে জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতে কাজ করার জন্য মিনতি করে গুতেরেস বলেন, আমরা জলবায়ু ভেঙে পড়ার বাস্তব চিত্র চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। বিশ্বে ১৯৪০ সাল থেকে যে পরিমাণ গড় তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে, তার তুলনায় বিশ্বে গত জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত গড় তাপমাত্রা সর্বোচ্চ।