
নওগাঁয় কুরআনের হাফেজকে সংবর্ধনা দিলো ছাত্রশিবির
৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:৩২ অপরাহ্ণ
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আওয়ামী লীগের আলোচনা না হওয়ায় ঝুলে আছে আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে রাজনীতির নানা সমীকরণ। জাতীয় পার্টি কি সমঝোতার ভিত্তিতে আওয়ামী লীগের ছাড় পাওয়া আসন বুঝে নেবে, নাকি বড় বিরোধী দল হতে ভোটের মাঠে লড়বে এই মুহূর্তে এটাই বড় প্রশ্ন।
জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা চূড়ান্ত না হওয়ায় পর্যন্ত সংসদ নির্বাচনে ১৪ দলীয় শরিকদের মধ্যে এখনো আসন বণ্টন করতে পারছে না আওয়ামী লীগ। শরিক কোন দলকে আওয়ামী লীগ কত আসন ছাড় দেবে, সেটা অনেকাংশে নির্ভর করছে জাতীয় পার্টির সঙ্গে সমঝোতা কেমন হচ্ছে, তার ওপর।
যদি আসন সমঝোতা হয় তাহলে জাতীয় পার্টিকে কত আসন ছাড় দিতে হবে, সেটা বুঝে জোটের শরিকদের মধ্যে আসন বণ্টন করবে আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগ, ১৪ দল ও জাতীয় পার্টির সূত্রে এমন ব্যাখ্যা পাওয়া গেছে। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদে শক্তিশালী বিরোধী দল হতে চায় জাতীয় পার্টি। সে ক্ষেত্রে একাদশ সংসদের চেয়ে দ্বাদশ সংসদে বেশি আসনের লক্ষ্য তাদের।
কিন্তু সমঝোতার ভিত্তিতে সেই আসন নিতে চায় না বলে জাতীয় পার্টির সূত্র দাবি করছে। গতকাল মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) জাপা চেয়ারম্যানের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, দেশে আওয়ামী লীগের পক্ষের ভোটের চেয়ে বিপক্ষের ভোট অনেক বেশি। নির্বাচন অবশ্যই প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক হবে। ভোটাররা কেন্দ্রে আসতে পারলে আমরা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ভালো করতে পারব।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনায় বসতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। আজ বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আওয়ামী লীগের ১৪ দলীয় আসন বণ্টন সংক্রান্ত কমিটির বসার কথা রয়েছে।
বৈঠকের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য এবং ১৪ দলের সমন্বয়ক ও মুখপাত্র আমির হোসেন আমু। তিনি বলেন, আগামীকাল বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকে বসব। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা না করা পর্যন্ত ১৪ দলের শরিকদের আসন বণ্টন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই আগে আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গে বসব। তারপর শরিকদের আসনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, আওয়ামী লীগ থেকে আগামীকাল বুধবার (০৬ ডিসেম্বর) বৈঠকের সময় চেয়েছে। আমরা সেই বৈঠকে যাব কি না, গেলে কখন যাব সেটার জন্য দলে নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছি।
আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলীয় শরিক জোটে কে কত আসন পাবে তা আলোচনা করে ঠিক করতে জোটের প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা গত সোমবারের বৈঠকে একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির সদস্যরা হলেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য আমির হোসেন আমু, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম।
এই কমিটির একজন আমির হোসেন আমুর সঙ্গে গতকাল মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) সাক্ষাৎ করেছেন জোটের শরিক বাংলাদেশ ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জাতীয় পার্টি কোন দিকে যাচ্ছে, সেটা বুঝতে চায় আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে নাকি সমঝোতা, তা এখনো আওয়ামী লীগের কাছে পরিষ্কার না। তাই জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা না করা পর্যন্ত জোটের আসন বণ্টন চূড়ান্ত করতে পারছে না আওয়ামী লীগ। জাতীয় পার্টির সঙ্গে আলোচনা না করা পর্যন্ত ১৪ দলের শরিকদের আসন বণ্টন নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। তাই আগে আমরা জাতীয় পার্টির সঙ্গে বসব। তারপর শরিকদের আসনের বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হবে।
গতকাল সন্ধ্যায় রাজধানীর ইস্কাটনে নিজ বাসায় আমির হোসেন আমুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন ও জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু ও সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতার।
বৈঠক সূত্রে জানা যায়, নিজ নিজ দলের কথা বলেছেন নেতারা। জোটের অন্য কোনো শরিক দল নিয়ে আলোচনা হয়নি। তিন পক্ষই এটি সৌজন্য সাক্ষাৎ বললেও আসনের ভাগ নিয়ে আলোচনা উঠেছিল। এই আলোচনায় ওয়ার্কার্স পার্টি সাতটি আসন দাবি করেছে।
আর জাসদ কোনো সুনির্দিষ্ট আসনসংখ্যা না বললেও বর্তমানের চেয়ে বেশি আসন চায়। শরিকরা জোট থেকে যেসব আসন পাবে, সেসব আসনে তারা নৌকা প্রতীকে নির্বাচন করবে। বাকি আসনগুলোতে নিজের দলের প্রার্থীদের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে। তাদের দাবিগুলো জোটের প্রধান শেখ হাসিনার কাছে আমির হোসেন আমু তুলে ধরবেন। একাদশ সংসদে এ দুই দলের তিনজন করে সদস্য রয়েছেন।
গত সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) গণভবনে ১৪ দলীয় জোটের শরিক নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন জোটের প্রধান ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
জানতে চাইলে জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু বলেন, এটা শুধুই সৌজন্য সাক্ষাৎ। ব্যক্তিগত বৈঠক বলা যায়। জাসদের যা আসন আছে সেটা থেকে বাড়াতে বলেছি। দলের সাধারণ সম্পাদক শিরীন আখতারের আসন নিশ্চিত করার বিষয়ে কোনো আলোচনা হয়েছে কি না জানতে চাইলে হাসানুল হক ইনু বলেন, অনেকমুখী আলোচনা হয়েছে। আমরা কারো নাম উল্লেখ করতে চাই না।
এক প্রশ্নের জবাবে ১৪ দলের সমন্বয়ক আমির হোসেন আমু বলেন, আজ কোনো বৈঠক হয়নি। রোজ রোজ দাবিদাওয়া চাওয়া-পাওয়া উত্থাপন হয় না। গতকাল (সোমবার) নেত্রীর (শেখ হাসিনা) সামনে তাঁরা কথা বলেছেন। নেত্রী তাঁদের কথা শুনেছেন।
বেশির ভাগ সংসদীয় আসনেই আওয়ামী লীগের ঘরের ছেলেরা নৌকা প্রতীকের বাইরে থেকে ভোটে অংশ নিচ্ছেন। এতে জোটের শরিক ও জাতীয় পার্টি দুই পক্ষই অস্বস্তিতে রয়েছে। গত সোমবার (০৪ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে জোটের শরিক নেতাদের বৈঠকেও স্বতন্ত্র প্রার্থী নিয়ে আলোচনা উঠেছিল। ওই বৈঠকে এই আলাপ তোলেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তবে জোটের প্রধান শেখ হাসিনার কাছ থেকে কোনো সম্মতি পাওয়া যায়নি।
গতকাল মঙ্গলবার (০৫ ডিসেম্বর) ধানমণ্ডিতে অবস্থিত শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, কোনো স্বতন্ত্র প্রার্থীকে বসতে চাপ দেওয়া নির্বাচনের আচরণবিধি লঙ্ঘন।