মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫

১৭ দিন পর টানেলে আটকেপড়া ৪১ শ্রমিক উদ্ধার


২৮ নভেম্বর ২০২৩, ১১:৪৮ অপরাহ্ণ 

১৭ দিন পর টানেলে আটকেপড়া ৪১ শ্রমিক উদ্ধার
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

ভারতের উত্তরাখণ্ডে নির্মাণাধীন টানেল ধসে পড়ার ১৭ দিন পর অবশেষে আটকে পড়া ৪১ জন শ্রমিকের সবাইকে উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) তাদেরকে একে একে নিরাপদে টানেল থেকে বের করে আনা হয়। এর মধ্যদিয়ে শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজনরা যেন প্রাণ ফিরে ফেল। অভিযান সফল হওয়ায় স্বস্তির নিশ্বাস ফেলছেন উদ্ধার সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গও।

এরপর শুরু হয় শ্রমিকদের বের করে আনার প্রক্রিয়া। প্রথম ধাপে ১০ জনকে বের করা আনা হয়। এরপর একে একে বের করা হয় বাকিদেরও। এ প্রক্রিয়ায় কিছু সময় লাগে। কারণ উদ্ধার হওয়ার পর শ্রমিকদের টানেলের বাইরের আবহাওয়ার সঙ্গে খাপ খাওয়ানোর ব্যাপার ছিল।

এনডিটিভির প্রতিবেদন মতে, শ্রমিকদের এক ধরনের বিশেষ স্ট্রেচারে করে বাইরে আনা হয়। যা দুই মিটার পুরু পাইপের মধ্যদিয়ে টানেলের ভেতর নামানো হয়েছিল।

উদ্ধারকর্মীরা প্রথমে সেই পাইপের মধ্যদিয়ে টানেলের মধ্যে নামেন। এরপর আটকে পড়া শ্রমিকদের শারীরিক অবস্থা মূল্যায়ন ও তাদের কিভাবে বাইরে আনা হবে তা বুঝিয়ে দেন। এরপর প্রতিটি শ্রমিককে স্ট্রেচারে তোলা হয় এবং ৬০ মিটার পাথর ও ধ্বংসাবশেষের মধ্যদিয়ে বাইরে বের করে আনা হয়।   

গত ১২ নভেম্বর উত্তরাখণ্ডের সিল্কইয়ারা ও দান্দানগাঁওকে সংযুক্তকারী টানেল নির্মাণকাজ শেষে বের হচ্ছিলেন নাইট শিফটের শ্রমিকরা। এ সময় ডে শিফটের শ্রমিকরা প্রবেশ করতে গেলে হঠাৎ করেই সেটি ধসে পড়ে। এতে সেখানে ৪১ জন শ্রমিক আটকা পড়েন।

দুর্ঘটনার পরপরই শুরু হয় শ্রমিকদের উদ্ধার অভিযান। কিন্তু ধ্বংসস্তূপ খুঁড়ে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছনো সম্ভব হচ্ছিল না কিছুতেই। প্রথমে 'ভার্টিকাল ড্রিলিং’র মাধ্যমে শ্রমিকদের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হচ্ছিল। কিন্তু গত শুক্রবার (২৪ নভেম্বর) উদ্ধারকাজে ব্যবহৃত যন্ত্রটি বিকল হয়ে যায়। ফলে থমকে যায় উদ্ধারকাজ।

তবে উদ্ধার করার আগ পর্যন্ত টানেলের শ্রমিকদের সঙ্গে প্রশাসনের পক্ষ থেকে অনবরত যোগাযোগ রাখা হয়। পাইপের মাধ্যমে তাদের সঙ্গে কথা চলছিল। পৌঁছে দেয়া হচ্ছিল খাবার, পানি ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র। সুড়ঙ্গে থাকাকালীন শ্রমিকদের প্রথম ভিডিও প্রকাশ্যে আসে গতকাল সোমবার(২৭ নভেম্বর)। পাইপের মাধ্যমে ক্যামেরা পাঠায় উদ্ধারকারীরা। সেখানেই দেখা যায় সুড়ঙ্গের ভিতর কীভাবে, কী অবস্থায় তারা রয়েছেন। 

এরপর গতকাল সোমবার (২৭ নভেম্বর) সন্ধ্যায় আনা হয় ম্যানুয়াল ‘র‌্যাট হোল’ মাইনিং ব্যবস্থা। যার ফলে খননকাজ ফলপ্রসূ হয়। এরপর উদ্ধারকারী দলগুলো টানেলের শেষ কয়েক মিটার হাত দিয়ে খুড়ে পরিষ্কার করে। এরপরই আসে কাঙিক্ষত মুহূর্তটি।

আজ মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) বিকেলে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি বলেন, ‘অল্প কিছুক্ষণের’ মধ্যেই শ্রমিকদের উদ্ধার করা সম্ভব হবে। এক টুইট বার্তায় তিনি আরও বলেন, কোটি কোটি মানুষের প্রার্থনা এবং সব উদ্ধারকারী দলের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলে শ্রমিকদের বের করার জন্য টানেলে পাইপ বসানোর কাজ সম্পন্ন হয়েছে। দ্রুতই সব শ্রমিক ভাইদের বের করে আনা হবে।

এরপর আটকেপড়াদের উদ্ধারের জন্য ব্যাপক প্রস্তুতি নেয়া হয়। টানেলের মধ্যেই  তৈরি করা হয় একটি অস্থায়ী হাসপাতাল। এছাড়া জরুরি পরিস্থিতিতে যাতে অন্য হাসপাতালে নেয়া যায়, সেজন্য একটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত রাখা হয়।