জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
২৫ নভেম্বর ২০২৩, ৭:০০ অপরাহ্ণ
নারী কিংবা পুরুষ সবারই সৌন্দর্যের অন্যতম অংশ চুল। তাই চুলকে ঘন-কালো ও মজবুত রাখতে প্রয়োজন নিয়মিত পরিচর্যা বা যত্ন। চুলের সঙ্গে জড়িয়ে আছে মানুষের সৌন্দর্য ও আভিজাত্য। তবে যে কথাটি না বললেই নয় আর তা হল চুলের পরিচর্যা নিয়ে নারীদের মনে রয়েছে একটি নিজস্ব জগৎ, যা বাইরের দুনিয়া থেকে আলাদা। ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে আবহাওয়ার বিরূপ আচরণ সহ্য করতে না পেরে অনেকের চুল ঝরে পড়ে। পাশাপাশি হারায় স্বাভাবিক সৌন্দর্য কালো রং। আবহাওয়ার এই বিরূপ আচরণ কাটিয়ে উঠতে চুলের যত্ন বা পরিচর্যায় কিছু ঘরোয়া টোটকা বা নিয়ম কানুন অবশ্যই মেনে চলতে হবে।
রুপকথার কোন গল্প নয় সত্যিকার অর্থে চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে কিংবা চুলকে ঘন-কালো ও মজবুত করতে নিয়মিত পরিচর্যার বিকল্প নেই। তাই চুলের যত্নে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় কিছু ঘরোয়া নিয়ম। আর এসব নিয়মের মধ্যে রয়েছে- অ্যালোভেরা, নিমপাতা, লেবুর রস, মধু, মেহেদিপাতা, ডিম, অলিভ অয়েল, কলা, ক্যাস্টার অয়েল, টক দই, আমলকী, জবা ফুল, বিভিন্ন মসলা, ফল, সবজি ইত্যাদি। চুলের সৌন্দর্য রক্ষায় এগুলোর একেকটির ভিন্ন ভিন্ন গুনাগুণ চুলের যত্নে একএক রকম কাজ করে। কোনোটি চুল কালো ও উজ্জ্বল করে, কোনোটি চুল করে মসৃণ, কোনোটি আবার চুল গজায় তো কোনোটি চুল পড়া রোধ করে।
আজকের প্রসঙ্গের আজকের প্রতিবেদনে থাকছে চুলের যত্ন ও পরিচর্যায় কিছু ঘরোয়া নিয়ম কানুন যা নিয়মিত ভাবে মেনে চললে চুলের সৌন্দর্য বাড়ার পাশাপাশি চুল হবে ঘন-কালো ও মজবুত। তাহলে চলুন জেনে নেই, চুলের সৌন্দর্য বা স্বাস্থ্য রক্ষায় কিভাবে যত্ন ও পরিচর্যা করা উচিত।
[১] চুলের যত্ন ও পরিচর্যায় যা যা করতে হবে-
ক) ভেজা চুল শুকাতে আলতোভাবে তোয়ালে ব্যবহার করুন
খ) সঠিক নিয়মে শ্যাম্পু করুন
গ) প্রতিদিন সঠিকভাবে কন্ডিশনার ব্যবহার করুন
ঘ) একই ধরণের হেয়ার প্রোডাক্ট ব্যবহার করুন
ঙ) চুলে কখনো অতিরিক্ত হিট দেবেন না
চ) ভেজা চুলকে খুব সাবধানে ট্রিট করুন
[২] চুলের যত্ন ও পরিচর্যায় আরও যা যা করবেন-
আমাদের দেশের আবহাওয়ায় প্রচুর ধুলো-বালি রয়েছে তাই প্রতিদিন চুলে শ্যাম্পু করা উচিত। আর যারা রোজ বাইরে যান, তাদের জন্য এটি অবশ্যই করণীয়। অন্যদিকে যারা বেশির ভাগ সময় ঘরে থাকেন, তাদের ধুলো-বালিতে চুল তেমন ময়লা হয় না। সে ক্ষেত্রে এক দিন পরপর চুল শ্যাম্পু করতে পারেন।
চুলের যত্নে তেল নিয়ে আমাদের বিভিন্ন ধারণা কাজ করে। চুল স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ও ঝলমলে রাখার জন্য সপ্তাহে অন্তত এক দিন চুলের গোড়ায় এবং পুরো চুলে তেল দিতে হবে। চুল শুষ্ক ও ভঙ্গুর হলে দুদিন পরপর তেল ম্যাসাজ করা ভালো। তেল লাগানোর পর এক ঘণ্টার মতো রেখে চুল শ্যাম্পু করে নিন।
বৃষ্টির দিনে বা স্যাঁতসেঁতে আর্দ্র আবহাওয়ায় একদিন অন্তর তেল দেওয়া কারো জন্যই ঠিক নয়। চুল যদি শুষ্ক প্রকৃতির হয় তাহলে সপ্তাহে একবার তেল ম্যাসাজ করাই যথেষ্ট। স্বাভাবিক কিংবা তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে দুই সপ্তাহে একবার চুলে তেল দিন।
চুলের পরিচর্যায় দীর্ঘ বা লম্বা চুলের আগার খানিকটা অংশ কেটে ফেলুন এতে আপনার চুলের দৈর্ঘ্য বিশেষ কমবে না। আগা ফাটা সমস্যা থাকলে কমে যাবে। এ ছাড়া প্রতিদিন রাতে নন-অয়েলি হারবাল হেয়ার টনিক লাগাতে পারেন স্ক্যাল্পে। সারা রাত রেখে দিন। নিয়ম করে খাওয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন ৮ ঘণ্টা ঘুমও খুব জরুরি। শরীর সুস্থ থাকলে তবেই ত্বক এবং চুলের স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।
কখনো কারো চুল যদি লালচে বা বাদামি দেখায় বুঝে নিবেন ডায়েটে প্রোটিনের পর্যাপ্ত ঘাটতি রয়েছে। আবার অতিরিক্ত রোদ থেকেও অনেকের ক্ষেত্রে এমন সমস্যা হতে পারে। সব সময় চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রোটিন খেতে। চুলের যত্ন ও পরিচর্যায় নিয়মিত শাকসবজি, ডিম, মাছ, চিকেন, ডাল, টক দই, পনির ইত্যাদি খেতে পারেন। আর রোদে বের হলে চুলে স্কার্ফ বা টুপি দিয়ে ঢেকে রাখার চেষ্টা করুন।
চুলের যত্নে মেথির কার্যকারীতা ও গুনাগুণ অনেক। মেথি চুল ঘন ও কালো করে। সে জন্য আগের রাতে পরিষ্কার পানিতে মেথি ভিজিয়ে রাখুন। পরদিন সকালে মেথির দানা পিষে নিন। মেথির পেস্টটি চুলে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন আধা ঘণ্টার মতো। এরপর শ্যাম্পু করে নিন।
পরিশেষে এটাই বলবো চুলের যত্ন ও পরিচর্যায় প্রত্যেকে নিজ থেকে একটু বাড়তি খেয়াল রাখুন।