রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

আপনি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত?


২০ নভেম্বর ২০২৩, ১২:৪৮ অপরাহ্ণ 

আপনি কি বিয়ের জন্য প্রস্তুত?
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

‘বিয়ে কর!’ ‘বিয়ে করছো না কেনো?’ ‘বিয়ে দিয়ে দিন, দেখবেন সব ঠিক হয়ে গেছে!’- বাঙালি সংস্কৃতিতে এরকম কথাবার্তা চলেই। তবে যাকে বিয়ে করতে বলা হচ্ছে তিনি এই কর্মটি করার জন্য প্রস্তুত তো!

বিয়ে জীবনের গুরত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে অন্যতম। আপনি কাকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন, তার সঙ্গে মনের মিল হবে কি না কিংবা জীবনসঙ্গী হিসেবে তিনি পারফেক্ট কি না এসব বিষয় মাথায় রেখেই বিয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হয়। বিয়ের মাধ্যমে নারী-পুরুষের জীবনে পরিবর্তন আসে।

বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়স কোনটি? এর উত্তর খোঁজেন অনেকেই। আসলে বিয়ের উপযুক্ত বয়স নির্দিষ্ট করে বলা মুশকিল। এজন্য যে খুব বেশি বয়স হতে হবে, এমন নয়। আবার অল্প বয়সে বিয়ে যে করাই যাবে না এরকমও কোনো কথা নেই। একটি নির্দিষ্ট বয়সের পর যে কেউ চাইলেই বিয়ে করতে পারে আবার বিয়ে না করেও থাকতে পারে। কে কোন বয়সে বিয়ে করবে এটি তার সিদ্ধান্ত। বিয়ে করার জন্য যে সবকিছু গুছিয়ে নিতে হবে, এমনও নিয়ম নেই। মানসিক প্রস্তুতি থাকলেই বিয়ের জন্য প্রস্তুত হওয়া যায়।

অল্প বয়সে বিয়ে করার ভালো এবং মন্দ দিক

আজকাল অনেক বিয়ের পরিণতি হচ্ছে ডিভোর্স। এজন্য বেশিরভাগ মানুষই বিয়ে করতে ভয় পান। বিষয়টি বিবেচনা করে সবাই কম বেশি অল্প বয়সে বিয়ে করা এড়িয়ে চলে। সাধারণত বিয়ে করার জন্য তাড়াহুড়া করে এমন মানুষ কমই আছে। দিনশেষে যার সঙ্গে সারাজীবন পার করবেন তার সঙ্গে কয়েকটা বছর আগে থেকে পার করলে কিন্তু জীবনটা মন্দ নয়। তাছাড়া অল্প বয়সে বিয়ে করার বেশ কিছু সুবিধাও রয়েছে। ভালোবাসার মানুষকে যেকোনো সময়ই বিয়ে করাই যায়। চলুন জেনে নেওয়া যাক, কীভাবে বুঝবেন আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত-

১. ভালোবাসা আর মোহ-এর মধ্যে পার্থক্য জানা

মানুষ একে অপরের প্রতি মুগ্ধ হবে এটাই স্বাভাবিক। তাই বলে সেটাকে ভালোবাসার নাম দিলে তো চলবে না। মানুষ যেকোনো বয়সেই মোহতে পড়তে পারে এবং চিন্তা করে যে ইনিই তার ভালোবাসার মানুষ। কিন্তু এটি বাস্তবতা নয়। যখন এই পার্থক্য টা বুঝতে পারবেন সেদিন বুঝবেন আপনি বিয়ের জন্যে প্রস্তুত।

২. বিবাহিত জীবনের দায়িত্ববোধ জানা

বিয়ে করার পর যে দায়িত্ববান হতে হয় সেই বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে। সারাদিন আড্ডা দিয়ে বাসায় ফেরার চিন্তাভাবনা বদলাতে হবে। সারাজীবন একজন মানুষের সঙ্গে থেকে তাকে কীভাবে খুশি রাখা যায় সেই বিষয়ে ভাবতে হবে। এটি যেকোনো বয়সেই কঠিন। অভিজ্ঞতা না থাকলে এক্ষেত্রে বিশেষ মনোযোগের প্রয়োজন। তাই বিবাহিত জীবনের দায়িত্ববোধ জানা থাকলেই বুঝবেন বিয়ের জন্যে একদম তৈরি। বিবাহিত জীবনে অনেক কিছুই পরিবর্তন হয়।তার মধ্যে রয়েছে টাইম মত খাওয়া,ঘুমানো, আড্ডা কম দেয়া ইত্যাদি। স্বাস্থ্য এবং মন মানসিকতার পরিবর্তন। ধর্ম কর্ম পরিবর্তন। দায়িত্ববোধ বাড়বে, সম্মান বাড়বে। সর্বোপরি আল্লাহর রহমতে সব কিছু দিন দিন বরকতে পরিপূর্ণ হতে থাকবে।

৩. অতিরিক্ত প্রত্যাশা নয়

জীবন পরিপূর্ণ করা কিংবা প্রাণবন্ত রাখার দায়িত্ব পুরোটা জীবনসঙ্গীর নয়। বিয়েই সব সমস্যার সমাধান এই ধারণা ভুল। যদি বিয়ের সিদ্ধান্ত নেন তবে প্রথমে সেই সমস্যাগুলোর সমাধান করা প্রয়োজন। আপনার সফলতা বা নিরাপত্তার সঙ্গে বিবাহিত কিংবা অবিবাহিত থাকার তেমন কোনো সম্পর্ক নেই। নিজেই নিজের পাশে থাকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। এর সঙ্গে আপনার সঙ্গীর সমর্থন পেলে তা আরও বেশি ভালো। তবে না পেলেও হাল ছাড়া যাবে না।

৪. পর্যাপ্ত সময় দেওয়া

স্ত্রীকে সময় দেওয়া ও তার সঙ্গে প্রয়োজন মাফিক রাত্রিযাপন অত্যন্ত জরুরি। সৎ ও সভ্য স্ত্রীরা তার স্বামী থেকে এ জিনিসটি খুবই বেশি কামনা করে থাকে যে তার স্বামী যেন তাকে পর্যাপ্ত সময় দেন এবং তার কাছে থাকেন। এ ক্ষেত্রে সময় দেওয়ার পরিমাণের ব্যাপারে অনেক ফকিহের মতে তা প্রয়োজন ও সুযোগ পরিমাণ হলেই হবে, এর জন্য নির্ধারিত সময় নেই। সঙ্গীর সঙ্গে কঠিন বিষয় সহজে কথা বলার মতো মানসিকতা থাকতে হবে। মাঝে মধ্যে ঝগড়া করাটাও স্বাভাবিক, তবে সব সময় একে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা এবং শেষ পর্যন্ত মানিয়ে নেওয়ার মন মানসিকতাও থাকতে হবে। যতই প্রেম থাকুক না কেন সঠিক সংযোগের অভাবে সম্পর্ক নষ্ট হতে পারে। তাই সঙ্গীকে পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার সুযোগ থাকলে বুঝবেন আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত।

৫. মূল্যবোধ বজায় রাখা

আমরা পরিবার,সমাজ,বন্ধু-বান্ধব, বিদ্যালয় থেকে মূল্যবোধ অর্জন করি। জীবনের প্রতি ক্ষেত্রে মূল্যবোধ এর ভূমিকা রয়েছে। সুখ, স্বাস্থ্য,আরাম,ধর্ম সবই মূল্যবোধ এর উদাহরন। ভাল বই পড়ে আমরা জ্ঞান অর্জন করি আর এই জ্ঞান হল মূল্যবোধ। কিন্তু বিয়ে করার জন্য পুরনো শখ বা আনন্দ উপভোগ করা যাবে না এমনটা নয় বরং একইসঙ্গে ধর্মীয় নীতি মেনে সন্তান এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানোর ইচ্ছাও রাখতে হবে। দায়িত্ববোধ আনতে হবে যাতে করে পরিবারের সবার সঙ্গে জীবন কাটানো যায়। মানসিকভাবে এমন প্রস্তুতি থাকলে বুঝবেন আপনি বিয়ের জন্য প্রস্তুত।