জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
১৫ নভেম্বর ২০২৩, ৭:৫১ অপরাহ্ণ
ক্ষেতলালে মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ঘুষ বাণিজ্য | ছবি: আজকের প্রসঙ্গ
গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন |
জয়পুরহাটের ক্ষেতলালে ঘুষ না দিলে পাঠানো হয় না এনটিআরসির সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকদের এমপিও'র কাগজপত্র ও উচ্চতর গ্রেডের বেতন কাঠামোর ফাইল। এমন অভিযোগ উঠেছে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছফিউল্লাহ্ সরকারের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, ২০১৮ সালে ক্ষেতলাল উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার হিসেবে যোগদান করেন ছফিউল্লাহ্ সরকার। এ উপজেলার ১৯ টি মাধ্যমিক, ২টি নিম্ন মাধ্যমিক, ১৪টি মাদ্রাসা ও ৫ টি কলেজর দাপ্তরিক দায়িত্ব পালন করে আসছেন তিনি।
বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে নিয়োগ বাণিজ্য রোধ করতে এনটিআরসিএ,র মাধ্যমে বিষয় ভিত্তক শিক্ষক নিয়োগ পদ্ধতি চালু করেন বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষ (এনটিআরসিএ)। গত ২০১৮ থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ৩৪ জন বিষয় ভিত্তিক শিক্ষক এনটিআরসিএ,র সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে এ উপজেলার বিভিন্ন বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যোগদান করেন।
বিধি মোতাবেক সুপারিশ প্রাপ্ত শিক্ষকগণ প্রতিষ্ঠানে যোগদানের পর এমপিও জন্য আবেদন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের নিকট অনলাইনের প্রেরন করেন। যাচাই করে এমপিও ফাইল পাঠাবেন মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার। এমন নির্দেশনা থাকলেও উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার প্রতিটি শিক্ষক, কর্মচারীর এমপিও জন্য ৫-১০হাজার ও উচ্চতর গ্রেডের আবেদন পাঠানোর জন্য ৬-৭হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একধিক শিক্ষক জানান, এমপিও,র জন্য ক্ষেতলাল মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে ৫-১০হাজার টাকা নিয়ে থাকে এটা কারো অজানা নয়।
ভুক্তভোগী এক মাদ্রাসা শিক্ষক বলেছেন, আমার এমপিও,র বিলের জন্য আবেদন পাঠাতে প্রথমে ৬হাজার দিয়ে ছিলাম। পরে আরো ২ হাজার টাকা দিতে হয়েছে।
লালগড় হারেজিয়া দাখিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলবী আবেদ আলী জানান, আমার এমপিও,র জন্য বিল পাঠাতে তখন ৫হাজার টাকা দিয়েছিলাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষক নাজমুল হোসেন জানান, ২০১৯ সালের এনটিআরসিএ সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে শরীর চর্চা শিক্ষক হিসেবে লালগড় হারেজিয়া দাখিল মাদ্রাসার যোগদান করি। সেখানে এমপিও বাবাদ আমাকে ৮হাজার টাকা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে দিতে হয়েছিল। পরপর্বতীতে ২০২২ সালে একই পদে এনটিআরসিএ,র সুপারিশ প্রাপ্ত হয়ে স্কুল পর্যায়ে জিয়াপুর উচ্চ বিদ্যালয়ে যোগদান করি। সেখানেও এমপিও,র জন্য আমাকে ১০ হাজার টাকা দিয়ে হয়েছে। শুধু আমি নয় এমপিও বাবদ সকল শিক্ষকেই টাকা দিতে হয় বিষয়টি অনেক পুরাতন কথা।
একজন ভুক্তভোগী কর্মচারী জানান, উচ্চতর গ্রেডের আবেদনর জন্য আমাকে ৫হাজার, আমার সহকর্মীকে ৬হাজার টাকা দিতে হয়েছে অফিসকে।
ক্ষেতলাল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোজাম্মেল হোসেন জানান, নতুন শিক্ষকদের সঙ্গে আমাদের কোন সম্পৃক্ততা নেই যদি এমপিও আবেদনের জন্য মাধ্যমিক অফিসে টাকা দিতে হয় এ বিষয় আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে আমরা এর প্রতিবাদ জানাবো।
ক্ষেতলাল উপজেলা শিক্ষক সমিতির সেক্রেটারী একরামুল হক উজ্জল জানান, এমপিও বিষয়ে আমার সমিতির সাথে কোন কার্যক্রম নেই এটি অফিসিয়াল বিষয় এবিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক অফিস বিস্তারিত জানেন। তবে কোন ভুক্তভোগী যদি শিক্ষক সিমিতে লিখিত অভিযোগ করেন সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিব তবে এখন পর্যন্ত কোন অভিযোগ পায়নি।
এই বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার ছফিউল্লাহ সরকার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এমন কাজে আমি জড়িত নয়। তবে আমার নাম ব্যবহার করে অন্য কেউ এধরণের কাজ করে থাকলে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।