ভালুকায় সেনাবাহিনীর হাতে দুই মাদক ব্যবসায়ী গ্রেপ্তার
রবিবার, ৩ নভেম্বর, ২০২৪
১৪ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ
রাজধানীর পূর্বাচলে নির্মিত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম দৃষ্টিনন্দন ও আকর্ষণীয় এক্সপ্রেসওয়ে সড়কের উদ্বোধন আজ। আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করবেন উচ্চ গতির এই এক্সপ্রেসওয়ে সড়ক। পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে দেশের প্রথম ১৪ লেনের সড়ক। সেইসাথে আজ থেকে এই সড়কের নাম হচ্ছে ‘শেখ হাসিনা সরণি’। এর মাধ্যমে ঢাকার পূর্ব থেকে পশ্চিমে তৈরি হচ্ছে নতুন সংযোগ। যা ঢাকাকে আরও বেশ কয়েকটি অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করবে বাধাহীন পথে; নিরসন হবে উত্তরের জলাবদ্ধতাও।
আরও এক স্বপ্ন ছোঁয়ার হাতছানি। প্রস্তুত আরও একটি সড়ক। এখন শুধু উদ্বোধনের আনুষ্ঠানিকতার অপেক্ষা আর কিছু সময়ের। যদিও শতভাগ কাজ শেষ হওয়ার আগেই এই সড়কটা খুলে দেয়া হয়েছে সাধারণের চলাচলের জন্য। তবে আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করবেন নতুন এই পথের। রাজউক এই সড়কের নাম দিয়েছে ‘শেখ হাসিনা সরণি’।
ঢাকার নতুন গেইটওয়ে পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে। দেশের প্রথম ১৪ লেনের মহাসড়ক, যার ৮ লেনের এক্সপ্রেসওয়ের সঙ্গে থাকছে ৬ লেনের সার্ভিসওয়ে। এরই মধ্যে শতভাগ কাজ শেষ; কুড়িল থেকে কাঞ্চন সড়ক বাতির কাজও শেষ। মহাসড়কের দুপাশে রয়েছে ১০০ ফুট খাল। খালেরই দুইপাশেই রয়েছে সার্ভিস রোড। বিশেষ ব্যবস্থা থাকায় ভারি বৃষ্টিতেও এ সড়কে হবে না জলজট। তাছাড়া নগরের জলাবদ্ধতা নিরসনেও এই প্রকল্প রাখবে বিশেষ ভূমিকা।
এরই মধ্যে সড়ক ডিভাইডারে বসেছে ৩৩ হাজার নানা জাতের গাছ। রোড মার্কিং-এর কাজ শেষ হওয়ায় যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা। কুড়িল থেকে কাঞ্চন পর্যন্ত ১২.৩০ কিলোমিটার দেশের প্রথম ১৪ লেনের সড়ক। দুপাশে ১০০ ফুট লেক আর পাঁচটি অ্যাডগ্রেডে ইন্টারসেকশন এ সড়ককে দিয়েছে এক নান্দনিক রূপ। ফলে কুড়িল থেকে কাঞ্চন এই সড়ক দিয়ে যাওয়া যাবে বিনা বাধায়।
রাজধানীর কুড়িল থেকে রূপগঞ্জের কাঞ্চন সেতু পর্যন্ত ১৪ কিলোমিটার সড়কটির নির্মাণ ব্যয় ১৪ হাজার কোটি টাকা। রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) অধীনে নির্মিত এই সড়কটির তদারকি ও নির্মাণ কাজ করেছে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী। সড়কটি চালু হওয়ার ফলে ঢাকা থেকে বৃহত্তর চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের পূর্বাঞ্চলে যাতায়াতের পথ আরও বেশি সুগম হবে।
রাজধানীর কুড়িল থেকে বালু নদী পর্যন্ত বাকি পথটার দুপাশে আছে আট লেনের রাস্তা, যা আশপাশের এলাকাকে এই সড়কে যুক্ত করবে। সঙ্গে আছে দুই পাশের খাল। এটি কেবল এই এলাকা না, ঢাকা উত্তরের একটি বড় অংশের জলাবদ্ধতা নিরসনে সহায়তা করবে। দেশের ৫০ বছরের বৃষ্টির পরিমাণ নিয়ে গবেষণা করে যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তাতে রেকর্ড ছাপিয়ে বৃষ্টি হলেও এই পথে শঙ্কা নেই জলজটের।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের প্রকল্প পরিচালক এম এম এহসান জামিল সময় সংবাদকে বলেন, ঢাকা উত্তরের জলাবদ্ধতা নিরসন, ঢাকার সঙ্গে চট্টগ্রাম-সিলেটসহ বিভিন্ন শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার সমন্বয় বা উন্নয়ন সেটা আমরা করতে পেরেছি। পরিবেশের বিষয়টিও দেখভাল করা হচ্ছে। প্রতিটি ইন্টার সেকশনের নিচে দুটা করে চৌবাচ্চা আছে, বৃষ্টির পানি ধারণের জন্য। প্রতিটিতে ৪ লাখ গ্যালনের সমপরিমাণ পানি ধরবে।
পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ঢাকার পূর্ব-পশ্চিমের এটাই প্রথম এতো বড় সড়ক। যা ঢাকাকে আশপাশের মহাসড়কগুলোর সাথেও সরাসরি যুক্ত করবে। আর এমন সড়ক শুধু বাংলাদেশেই নয়, পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেও প্রথম। এ পথ শুধু বাংলাদেশের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে সহজই করবে না, পরবর্তীতে যেকোনো সড়ক কিংবা মহাসড়ক নির্মাণে এ পথ দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
অত্যাধুনিক এই এক্সপ্রেসওয়েতে নেই কোনো ধরনের স্টপওভার পয়েন্ট, সিগন্যালিং সাইন কিংবা অন্য কোনো প্রতিবন্ধকতা। ছোট, মাঝারি ও বড় সব ধরনের যানবাহন এখানে চলবে আপন গতিতে। ৬ থেকে ৭ মিনিটে গাড়ি বাধাহীনভাবে পার হবে সাড়ে ১৪ কিলোমিটার পথ। এ জন্য রাখা হয়েছে পাঁচটি অ্যাট-গ্রেড ইন্টারসেকশন। এতে দ্রুতগতির যানবাহনগুলো গতি না কমিয়েই লেন পরিবর্তন করতে পারে।
আগামী ৫০ বছরের হিসাব করেই এই রাস্তাটি তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রকল্প পরিচালক এম এম এহসান জামিল। রাজউকের তত্ত্বাবধানে এই পথের কাজ করেছে সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ারিং ব্রিগেড।