
তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
১৩ নভেম্বর ২০২৩, ২:৫৫ অপরাহ্ণ
বে টার্মিনাল তৈরিতে ব্যয় হবে ১৭ হাজার কোটি টাকা আর বিনিয়োগ হবে সাড়ে ৪ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি, এমন ইতিবাচক প্রস্তাবে সম্মতি দিয়ে বে টার্মিনালের মাস্টার প্ল্যান অনুমোদন দিতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রস্তাবিত এই বন্দরে বিনিয়োগ করবে সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি এবং দুবাইয়ের ডিপি ওয়ার্ল্ড। এছাড়া ব্রেক ওয়াটার তৈরির প্রকল্পে ৫০ মিলিয়ন ডলার দেবে বিশ্বব্যাংক।
২০১৭ সালে প্রাথমিক মাস্টার প্ল্যান তৈরি হওয়ার পর ভূমি অধিগ্রহণসহ নানা জটিলতায় বে টার্মিনালের মাস্টার প্ল্যান আটকে ছিল প্রায় ৬ বছর। তবে শেষ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সম্মতি পাওয়ার পর সাগর তীরে বহুল আলোচিত ৬ কিলোমিটার দীর্ঘ বে টার্মিনালের মাস্টার প্ল্যান চূড়ান্ত হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৪ নভেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আনুষ্ঠানিকভাবে এই অনুমোদনে স্বাক্ষর করবেন।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল এম সোহায়েল বলেন, বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবার আমরা সরাসরি সমুদ্র পাড়ে বা সমুদ্রের মধ্যে একটি বন্দর বানাচ্ছি। এটি আমাদের জন্য একটি বড় সুখবর। নগরীর পতেঙ্গা এলাকায় ৯০০ একর জায়গার ওপর গড়ে উঠবে এই বন্দর। বিশেষ করে ১৪ মিটারের বেশি প্রাকৃতিক গভীরতার কারণে এই বে টার্মিনাল নিয়েই বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ রয়েছে। তাছাড়া গভীরতা রক্ষায় ব্রেক ওয়াটার প্লানে আর্থিক সহায়তা দেবে বিশ্বব্যাংক।
প্রস্তাবিত বে টার্মিনালকে তিন ভাগে ভাগ করা হবে। যার একটি পরিচালনা করবে চট্টগ্রাম বন্দর। আর বাকি দুইটি ভাগাভাগি করবে সিঙ্গাপুরভিত্তিক প্রতিষ্ঠান সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি এবং দুবাইয়ের প্রতিষ্ঠান ডিপি ওয়ার্ল্ড।
বে টার্মিনালের চূড়ান্ত পরিকল্পনা অনুযায়ী, ১ হাজার ২২৫ মিটার দৈর্ঘ্যের দুইটি জেটিতে থাকছে ডি পি ওয়ার্ল্ড এবং সিঙ্গাপুর পোর্ট অথরিটি। এছাড়া চট্টগ্রাম বন্দরের জন্য থাকবে ১ হাজার ৫০০ মিটার দৈর্ঘ্যের মালটিপারপাস জেটি। এর বাইরে আবুধাবী পোর্টও এখানে বিনিয়োগে আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
বে টার্মিনালের সম্ভাবনার চিত্র তুলে ধরে চট্টগ্রাম চেম্বার অব কমার্সের সিনিয়র সহ-সভাপতি তরফদার রুহুল আমিন বলেন, ব্রেক ওয়াটার করতে এখানে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ও বিশ্বব্যাংকের সঙ্গে কাজ করছে সরকারের নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়। বিশ্বব্যাংক এক্ষেত্রে অর্থায়ন করবে। এখানেও প্রায় ১ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বিনিয়োগ আসবে। কাজেই বে টার্মিনালকে ঘিরেই তো আমরা কমপক্ষে ৪ বিলিয়ন ডলারের বিশাল বিনিয়োগ আসতে দেখতে পাচ্ছি।
বিদেশি প্রতিষ্ঠান ছাড়াও এই বে টার্মিনালে একটি অয়েল টার্মিনাল গড়ে তোলার প্রস্তাব দিয়েছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ইস্টকোস্ট। বাংলাদেশে জ্বালানি তেলের পাশাপাশি এলপিজি (তরলীকৃত পেট্রোলিয়াম গ্যাস) ও এলএনজি'র (তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস) মজুত সক্ষমতা আরও ২ মাস বাড়ানোর লক্ষ্য নিয়ে বে টার্মিনালে লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল এবং ডিপো স্থাপনে আগ্রহী প্রতিষ্ঠানটি। প্রায় ৩ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে চট্টগ্রাম বন্দরের বে টার্মিনালের চতুর্থ জেটি হিসেবে গড়ে তোলা হবে এই লিকুইড বাল্ক টার্মিনাল।
চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, বাল্ক বে টার্মিনালে তো অবশ্যই একটি রিজার্ভার থাকবে। সেটিই হচ্ছে প্রধান বিষয়। এছাড়া বিদেশ থেকে তেলবাহী জাহাজ এলে তা আনলোড করে যাতে মজুত হিসেবে রাখা যায়, তার জন্য টার্মিনাল থাকবে।
একই দিন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেড় হাজার কোটি টাকার পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনালেরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। সৌদি আরব-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান রেড সি গেটওয়ে এই টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পেতে যাচ্ছে।