ঋতু পরিবর্তনের পরিক্রমায় হেমন্তের বিদায় ঘণ্টা বাজতে খুব বেশী দেরি নেই। এখনই প্রকৃতির কানে শিষ দিয়ে বেড়াচ্ছে শীতের আগমনী বার্তা। শীত আসার শুরুতেই যদি নিত্যদিনের খাদ্যাভ্যাস কিংবা চলাফেরায় কিছু বিষয়ে সতর্কতা অবলম্বন করা যায় তাহলে ফুরফুরে মেজাজে হিমেল পরশকে সুস্থতার সঙ্গে উপভোগ করতে পারবে যে কেউ।

শীতকালে কিভাবে নিজেকে সুস্থ রাখা যায়,সে সম্পর্কে কিছু সাবধানতা ও পরামর্শ। প্রত্যেক বয়সের মানুষকেই শীতকালের উপযোগী করে রাখতে খানিকটা বাড়তি খেয়াল রাখার প্রয়োজন আছে। শীতকালে ঠাণ্ডাজনিত রোগ বা ফ্লু একটি সাধারণ রোগ। এটি শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে। ঠাণ্ডাজনিত রোগ থেকে নিজেকে এবং পরিবারকে রক্ষার জন্য উপযুক্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।

হাঁচি-কাশির মাধ্যমে অনেক রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে। তাই হাঁচি-কাশি দেয়ার সময় নাকে মুখে টিস্যু পেপার বা রুমাল চেপে ধরুন। এতে রোগজীবাণু বাতাসে ছড়াবে কম । হাঁচি বা সর্দি কাশির পর হাত ভালোভাবে সাবান অথবা পানি দিয়ে ধৌত করুন। হাতের কাছে পানি বা হ্যান্ডওয়াশ না থাকলে অ্যালকোহল ভিত্তিক ট্রাভেল হ্যান্ডওয়াশ ব্যবহার করতে পারেন। ঠাণ্ডা বা ফ্লু জনিত রোগে আক্রান্ত এমন লোকের সংস্পর্শ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করুন। ঠাণ্ডায় আক্রান্ত হলে প্রচুর পরিমাণে বিশ্রাম নিন। মাথা ব্যথা, শরীর ব্যথা, পেশী ব্যথা ও জ্বর হতে পারে। প্রয়োজনে প্যারাসিটামল খেয়ে নিন। তবে অবশ্যই প্যারাসিটামল গ্রহণ এর আগে ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করুন।

শীতকালে আপনার খাদ্যতালিকায় রাখুন-প্রোটিন ও ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার। ভিটামিন বি, সি, ডি ও ই জাতীয় উচ্চ ভিটামিন সমৃদ্ধ খাবার। শর্করা ও চর্বি জাতীয় খাদ্য কম খাবেন। টাটকা ফল ও সবজিতে আছে বায়োটিন যা ত্বক ও চুল সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। ফুলকপি, মটরশুটি, বাঁধাকপি, শিম ও গাজর বেশি করে খাবেন। লেবু জাতীয় ফল যেমন- মালটা, কমলা, বাতাবি লেবু বেশি করে খাবেন। এতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সি থাকে।

শীতকালে আবহাওয়া শুষ্ক থাকে। যে কারনে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করা উচিত, তা নাহলে পানিশূন্যতা দেখা দিতে পারে। তাই নিজেকে পানি পান করে হাইড্রেট রাখাও গুরুত্বপূর্ণ। যাদের ঠাণ্ডা পানিতে এলার্জি সমস্যা থাকে তারা গরম পানি পান করুন।

শীতকালে কর্ম উদ্দীপনা কম থাকে, শরীর অসার বোধ হয়, মনে হয় সকাল টা বিছানায় ঘুমিয়ে পার করে দেই। কিন্তু এরকম বদ অভ্যাস অবশ্যই বর্জনীয়। নিজেকে কাজে ব্যস্ত রাখার চেষ্টা করুন, পরিশ্রম করুন, শরীর থেকে ঘাম ঝরান। প্রতিদিন নিয়ম করে একটু হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করুন এতে শরীর সুস্থ থাকবে।

শীতকালে ঠাণ্ডা এড়িয়ে চলতে প্রয়োজন ছাড়া বাইরে ঘুরাফেরা কম করুন, গরম কাপড় পরিধান করুন। শরীর উষ্ণ রাখার চেষ্টা করুন। সম্ভব হলে প্রতিবার হালকা কুসুম গরম পানি পান করুন। সকালের নাস্তা ও দুপুরের নাস্তার পর গরম স্যুপ, ফলের রস ও ডাবের পানি খেতে পারেন।