
২০২৪ সালে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় নতুন চমক
৯ নভেম্বর ২০২৩, ৩:৫২ অপরাহ্ণ
বগুড়ার সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ, হামলা ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। আজ বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) বেলা সোয়া ১১টার দিকে এ ঘটনায় জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহাসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১৪ জন আহত হয়েছেন। সংঘর্ষের পর ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ছাত্রলীগ ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা ও আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের দ্বন্দ্ব চলছে। কলেজে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি না থাকায় জেলা ছাত্রলীগের দুই পক্ষই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে উঠেছে। এক পক্ষের নেতৃত্ব দিচ্ছেন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও সাধারণ সম্পাদক আল মাহিদুল ইসলাম। অন্য পক্ষে আছেন সংগঠনের সহসভাপতি তৌহিদুর রহমান ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, আজ বৃহস্পতিবার (০৯ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা ও মাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশের নেতা-কর্মীরা বগুড়া শহরের কামারগাড়ী এলাকায় সরকারি আজিজুল হক কলেজ ক্যাম্পাসে (নতুন ভবন) আসেন। তাঁরা প্রশাসনিক ভবন চত্বরে অবরোধ বিরোধী মিছিল ও সমাবেশ করে। এই অংশের ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীদের অভিযোগ, মিছিল-সমাবেশ শেষে ক্যাম্পাসে অবস্থানের খবর পেয়ে জেলা তৌহিদুর রহমান ও মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে বেশকিছু যুবক লাঠিসোঁটা, হকিস্টিক ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করে। এতে সজীব সাহা ছাড়াও শিহাব, রাহাত, লিটন, সৈকতসহ সাতজন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিরা প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন। এ ঘটনার পর ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে কিছুক্ষণ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে সজীব সাহার অংশের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাস ছেড়ে যায়। কিছুক্ষণ পর সজীব সাহার নেতৃত্বে নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে ঢুকে তৌহিদুর-মাহফুজারের নেতৃত্বাধীন অংশের নেতা-কর্মীদের ওপর পাল্টা হামলা করেন। এতে তৌহিদুর ও মাহফুজারসহ সাত-আট নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন বলে ছাত্রলীগের একাংশ দাবি করেছে।
জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহফুজার রহমান মুঠেফোনে বলেন, অবরোধবিরোধী অবস্থান কর্মসূচি পালনে সকাল থেকে তাঁরা কর্মী-সমর্থকদের নিয়ে কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করছিলেন। তাঁদের অবস্থান কর্মসূচিতে সজীব সাহার নেতৃত্বে বহিরাগত সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। এ সময় হামলাকারীদের ছুরিকাঘাতে তিনি ও সহসভাপতি তৌহিদুর রহমানসহ সাত-আটজন আহত হয়েছেন। তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সজীব সাহা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ছাত্রদল-ছাত্রশিবিরের দেশবিরোধী কর্মকাণ্ড এবং অবরোধবিরোধী কেন্দ্রঘোষিক অবস্থান কর্মসূচি পালনে সকাল থেকেই ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে মিছিল-সমাবেশ করছিলেন। ছাত্রলীগের শান্তিপূর্ণ এই সমাবেশে তৌহিদুর রহমান ও মাহফুজার রহমানের নেতৃত্বে বহিরাগতরা হামলা চালিয়েছে। তিনিসহ সাত-আটজন নেতা-কর্মীকে আহত করেছে। হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বগুড়া সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, সজীব সাহার নেতৃত্বে ছাত্রলীগের একাংশ সকাল থেকেই সরকারি আজিজুল হক কলেজে মিছিল-সমাবেশ করছিল। সেখানে ছাত্রলীগের আরেকটি অংশ হামলা চালালে উভয় পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়েছে। পুলিশ উভয় পক্ষকে সরিয়ে দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ক্যাম্পাসে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
সরকারি আজিজুল হক কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ড. মো. সবুর উদ্দিন বলেন, সকালে একাডেমিক কাউন্সিলের সভা চলাকালে ক্যাম্পাসে দুই দল বহিরাগতদের মধ্যে হট্টগল হয়েছে। পুলিশ তাৎক্ষণিক পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে। এখন ক্যাম্পাসের পরিস্থিতি শান্ত। দুপুরে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মান শ্রেণির পরীক্ষা যথারীতি শুরু হয়েছে।
![]() |
![]() |