রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
জয় হল বাংলাদেশের

শেষ ওভারের নাটক শেষে জয় টাইগারদের


আফগান বোলার করিম এই হ্যাটট্রিকে জটিল হয়ে উঠে জয়ের সমীকরণ। তার পরের বলে চার মেরে সব জটিলতা শেষ করে দেন শরিফুল।

নিজস্ব প্রতিবেদক

১৫ জুলাই ২০২৩, ১:৪৭ অপরাহ্ণ 

শেষ ওভারের নাটক শেষে জয় টাইগারদের
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

নির্ধারিত ২০ ওভারে ১৫৪ রান তোলে আফগানরা, হারিয়েছিল ৭ উইকেট। জবাবে নিজ গতিতে এগিয়ে চলে বাংলাদেশ। শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ১বল আগেই জয় নিশ্চিত করে টাইগাররা। শুক্রবারের প্রথম টি-২০ ম্যাচে ২ উইকেটে জয়লাভ করে বাংলাদেশ।

সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে এ জয়ে ১-০তে এগিয়ে পিছিয়ে গেল আফগানরা।

শরিফুলের হাতে জয় এলেও জয়ের মূল নায়ক ছিল তাওহিদ হৃদয়। তাকে দারুণ সঙ্গ দেন আরেক নায়ক শামিম হোসেন পাটোয়ারি। ৫ম উইকেটে ৪৩ বলে ৭৩ রান উঠে আসে এ দুই ব্যাটারের ব্যাট থেকে। এরপর শামিম আউট হয় কিন্তু তাওহিদ খেলেছে ম্যচের শেষ পর্যন্ত। তবে শেষ ওভারে তিনি নন স্ট্রাইক প্রান্তে ছিলেন। শেষ ওভারের জয়ের আগ পর্যন্ত মনে হয়েছিল অপর প্রান্তে দাঁড়িয়ে তাকে নাটকীয় এক হার দেখতে হবে।

এর আগে যখন সাকিব আল হাসান আউট হয়, তখনই মনে হচ্ছিল ম্যাচটা ফসকে যাচ্ছে। তখন আশার আলো দেখান দলের দুই তরুণ টাইগার হৃদয় এবং শামিম। এই দুই তরুণের জুটিতেই জয়ের দিকে এগুতে থাকে বাংলাদেশ। তাদের তৈরী ভিত এতোটাই মজবুত যে শেষ ওভারে আফগান বোলার করিম হ্যাটট্রিক তুলেও দলকে পারেনি জয় এনে দিতে। শেষ পর্যন্ত স্বস্তির জয় এসেছে টাইগারদের কাছেই।

এইদিন লক্ষ্য তাড়ায় নেমে প্রথম ওভারেই ভেঙ্গে যায় বাংলাদেশের ওপেনিং জুটি। রনি তালুকদার বোল্ড আউট হয়, তাকে ফিরিয়েছিল ফজলহক ফারুকি। এরপর অপর প্রান্তের ওপেনার লিটন দাসের সাথে ব্যাটিংয়ে আসেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তারা দুজন খেলছিল বেশ ছন্দেই। কিন্তু অদ্ভুতভাবে আউট হয়ে যান শান্ত। মুজিব উর রহমানের বলে তিনি পিছনের দিকে সরে খেলতে চান। কিন্তু তার কনুইয়ের কিছুটা উপরে লাগে বল, তারপর আঘাত হানে স্টাম্পে। শান্তর এই আউটে কিছুটা চাপে পড়ে যায় টাইগাররা।

বাংলাদেশের আরও চাপ বেড়ে যায় যখন ফিরে যান লিটন দাস, তার ব্যক্তিগত সংগ্রহ ১৮ রান। তিনি ক্যাচ তুলে দেন রশিদ খানের হাতে, বলে ছিলেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই। ফলে আরও বিপদে পড়ে যায় বাংলাদেশ। সেই বিপদ থেকে তাওহিদ হৃদয়কে সহ দলকে উদ্ধারের চেষ্টা করে অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। বাউন্ডারি হাঁকিয়ে রানের গতি সচল রাখারও চেষ্টা চালান তিনি। তবে ৪র্থ উইকেটে ২৫ রান যোগ করেই থামাতে হয় এই চেষ্টা। আফগান বোলার ফরিদ আহমেদকে কভার দিয়ে বাউন্ডারি হাঁকাতে চায় সাকিব। কিন্তু ব্যাটে বলে ঠিকঠাক হয়নি, ফলে বল চলে যায় করিম জানাতের হাতে।

এরপর শামিম পাটোয়ারিকে সাথে নিয়ে দল এগিয়ে নিয়ে যায় হৃদয়। এটিই হয়ে উঠে জয়সূচক জুটি। ওমরজাইয়ের করা ১৩তম ওভারে তারা তিনটি বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ২১ রান তুলে নেন। তখন থেকেই ম্যাচ জয়ের তীর ঘুরে যেতে থাকে বাংলাদেশের দিকে।

দলীয় রান যখন ১৩৭, তখন আউট হন শামিম। রশিদ খানের বলে ছক্কা আদায় করতে গিয়ে টপঅজ হয়ে আউট হয় তিনি। তারপর মাঠে নামে মিরাজ, ৬ বলে ৮ রান করে তিনি। শেষ ওভারের প্রথম বলেই বাউন্ডারি হাঁকান। কিন্তু পরের বলেই ক্যাচ তুলে দেন নবির হাতে। পরের দুই বলে আউট একে একে আউট হয় তাসকিন ও নাসুম আহমেদ। আফগান বোলার করিম এই হ্যাটট্রিকে জটিল হয়ে উঠে জয়ের সমীকরণ। তার পরের বলে চার মেরে সব জটিলতা শেষ করে দেন শরিফুল।

দলের পক্ষে হৃদয় সর্বোচ্চ ৪৭ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেছে। ৩২ বলে ২টি ছক্কা ও ৩টি চারে এ রান করে তিনি। শামিমের ব্যাট থেকে আসে ৩৩ রান। এছাড়া সাকিব করে ১৯ রান। ১৫ রানের খরচায় আফগানদের পক্ষে ৩টি উইকেট নেন করিম ।

এরপূর্বে আফগানদের ব্যাটিংয়ে মূল স্তম্ভ ছিলে অভিজ্ঞ ক্রিকেটার মোহাম্মদ নবি। ইনিংসের ৫ম ওভারে মাঠে নামে তিনি, শেষ পর্যন্ত ব্যাট করা নবি দলকে এনে দিয়েছে এক লড়াকু পুঁজি। তার ব্যক্তিগত ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি তুলে নেন তিনি। ৪০ বলে হার না মানা ৫৪ রানের আসে তার ব্যাট থেকে। ৫ম উইকেটে নজিবউল্লাহ জাদরানের সাথে ৩৫ রানের জুটি ও ৬ষ্ঠ উইকেটে আজমতউল্লাহ ওমরজাইয়ের সাথে ৫৬ রানের জুটি গড়েন মাত্র ৩১ বলে। তাতেই লড়াইয়ের জন্য বড় পুঁজি পেয়েছিল আফগানরা।