জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
৬ নভেম্বর ২০২৩, ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
পাসপোর্ট কী তা মোটামুটি সকলেই জানেন। পাসপোর্ট এক ধরনের ভ্রমণ নথি, যা সাধারণত একটি দেশের সরকারকর্তৃক জারি করা হয়। এটি আন্তর্জাতিক ভ্রমনের সময় বাহকের জাতীয়তা ও পরিচয় প্রত্যয়িত করে। একটি পাসপোর্টে সাধারণত বাহকের নাম, জন্মের তারিখ ও স্থান, ছবি, স্বাক্ষর, এবং অন্যান্য চিহ্নিতকরণের তথ্য থাকে। দেশের নাগরিকত্বের এক ধরনের প্রমাণপত্র হল পাসপোর্ট। তবে কোনও নাগরিক আমৃত্যু নিজের দেশেই থেকে গেলে তাঁর পাসপোর্ট না করালেও চলে। কিন্তু পড়াশোনা, চাকরি, ব্যবসা বা ভ্রমণ যে কোনও উদ্দেশ্যে দেশের সীমানা পার হয়ে বিদেশে পা রাখতে হলে অবশ্যই পাসপোর্ট থাকা প্রয়োজন।
গোল্ডেন পাসপোর্ট এক ধরনের নয়, বহু রকমের হয়ে থাকে। আসলে প্রতিটি দেশের পাসপোর্টের বেশ কিছু শ্রেণিবিভাগ আছে। তবে এর মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় এবং মূল্যবান পাসপোর্টকে বলা হয় গোল্ডেন পাসপোর্ট (Golden Passport)। গোল্ডেন পাসপোর্ট খুলে দিতে পারে বৈশ্বিক বাণিজ্যের স্বর্নদুয়ার। নির্দিষ্ট কিছু দেশের বিশেষ বিশেষ নাগরিকের জন্য় চালু করা হয় এই পাসপোর্ট। বিদেশি নাগরিকরা এই পাসপোর্টের মাধ্যমে ওই দেশের নাগরিক অধিকার পেতে পারেন। এই গোল্ডেন পাসপোর্টের মাধ্যমে তাঁরা বিনিয়োগ ও সম্পত্তি ক্রয়ের অধিকার অর্জন করে থাকেন।
গোল্ডেন পাসপোর্ট শুধু মাত্র ভারতীয় নাগরিকদের দেওয়া হয় এমনটা নয়। বাছাই করা কিছু বিদেশী নাগরিক’ও গোল্ডেন পাসপোর্ট পেতে পারেন। বস্তুত ভারতে এমন বেশ কিছু বিদেশী নাগরিক আছেন যারা গোল্ডেন পাসপোর্টধারী। আবার বেশ কিছু ভারতীয় নাগরিক আমেরিকা, ব্রিটেন, তুরস্ক, কানাডা, গ্রেনাডা ইত্যাদি দেশেরও গোল্ডেন পাসপোর্ট পেয়েছেন। এই গোল্ডেন পাসপোর্ট চড়া অর্থের বিনিময়ে দেওয়া হয়।
গোল্ডেন পাসপোর্টের সুবিধা বোঝার জন্য নিজের দেশ ভারতকেই উদাহরণ হিসেবে গ্রহণ করা যায়। বিদেশের কোনও নাগরিক ভারতবর্ষে পড়াশোনা করতে বা বিশেষ কিছু চাকরি করতে আসতে পারেন। এর জন্য নির্দিষ্ট ক্যাটাগরির ভিসা থাকতে হবে। কিন্তু ওই বিদেশি নাগরিকরা চাইলেই ভারতে কোনও সম্পত্তি ক্রয় বা কোনও ক্ষেত্রে বিনিয়োগ করতে পারবেন না। এর জন্য নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া মেনে বিদেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র নিয়ে তাঁদের বিনিয়োগ করতে হবে। অথচ কোনও ভিনদেশী নাগরিক যদি ভারতবর্ষের গোল্ডেন পাসপোর্ট পান তবে তিনি এদেশে জন্মসূত্রে যারা নাগরিক তাঁদের সমতুল মর্যাদার অধিকারী হবেন। ফলে তিনি সহজেই যেমন ভারতের বুকে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে পারবেন তেমনই চাইলে কোনও সম্পত্তিক ক্রয় বা বিনিয়োগ করার অধিকারী হবেন।
এবার ধরুন কোনও ভারতীয় নাগরিক গ্রেনাডা, ডমিনিকার মতো ছোট ছোট দেশের গোল্ডেন পাসপোর্ট পেলেন। এক্ষেত্রে তাঁর যে সুবিধাটা হবে তা হল ওই দেশগুলির গোল্ডেন পাসপোর্টধারী হওয়ার ফলে তিনি অবাধে চিনে ব্যবসা করতে পারবেন। কারণ চিন অন্যান্য দেশের থেকে গ্রেনাডা ও ডমিনিকার পাসপোর্ট বা গোল্ডেন পাসপোর্টে অতিরিক্ত সুবিধা দিয়ে থাকে।
আবার ধরুন কোনও ভারতীয় নাগরিক তুরস্কের গোল্ডেন পাসপোর্ট পেলেন। সেক্ষেত্রে তিনি ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মধ্যপ্রাচ্যে বিনিয়োগ ও ব্যবসা করার ক্ষেত্রে অতিরিক্ত সুবিধা পাবেন। অতএব বোঝাই যাচ্ছে মূলত বড় বড় ব্যবসায়ী এবং বিনিয়োগকারীদের কাছে আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে এই গোল্ডেন পাসপোর্ট।
প্রতিবছর পৃথিবীতে অসংখ্য মানুষ গোল্ডেন পাসপোর্টের জন্য আবেদন করা হয়। তবে সবাইকে দেওয়া হয় না এই বিশেষ পাসপোর্ট। তা বাছাই করে নির্দিষ্ট কিছু মানুষকেই দেওয়া হয়। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান থেকে দেখা যাচ্ছে সারা বিশ্বের মধ্যে ভারতীয়রাই সবচেয়ে বেশি গোল্ডেন পাসপোর্টের জন্য আবেদন জানান। যার পরিমাণটা মোট আবেদনের ৯.৪ শতাংশ।