ফরিদপুরে অনার্স-মাস্টার্স শিক্ষক ফেডারেশনের উদ্যোগে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত
রবিবার, ১০ নভেম্বর, ২০২৪
২ নভেম্বর ২০২৩, ১:১৮ অপরাহ্ণ
বাংলাদেশের রেল নেটওয়ার্কে আগামী ১১ নভেম্বর (শনিবার) যুক্ত হচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধনের পর খুলে দেয়া হবে চট্টগ্রাম-কক্সবাজারে বিশ্বমানের চোখ ধাঁধানো আইকনিক রেলস্টেশন। তারপর যাত্রী নিয়ে ট্রেন ছুটবে নান্দনিক নির্মাণশৈলীর বিশ্বমানের চোখ ধাঁধানো আইকনিক রেলস্টেশনের পথে।
গতকাল বুধবার (১ নভেম্বর) রাত ১১টায় এ তথ্যটি নিশ্চিত করেছেন কক্সবাজার-২ আসনের সংসদ সদস্য আশেক উল্লাহ রফিক।
আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, আগামী ১১ নভেম্বর সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথমে উদ্বোধন করবেন কক্সবাজার বাসীর বহু কাঙ্ক্ষিত দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন। এরপর তিনি মহেশখালীতে যাবেন আর দুপুরে জনসভায় বক্তব্য রাখবেন। প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে এরই মধ্যে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেছে। এবারের জনসভা জনসমুদ্রে পরিণত হবে।
নতুন যুগের সূচনার অপেক্ষায় পর্যটন নগরী কক্সবাজার। চট্টগ্রামের দোহাজারী থেকে কক্সবাজারে ট্রেন যাবে- এখন শুধু তার অপেক্ষা। আক্ষরিক অর্থে ঝিনুক না হলেও সমুদ্র দর্শনে যাওয়ার পথে প্রথমেই সামুদ্রিক একটা আবহ পাবে কক্সবাজারে নির্মিত দেশের একমাত্র আইকনিক রেলস্টেশনে এসে। কেবল আসা-যাওয়ার জন্যই নয় এই স্টেশন, দেয়া হয়েছে বহুমাত্রিক রূপ। এখন চোখ ধাঁধানো আইকনিক স্টেশনটি দৃশ্যমান। আইকনিক রেলস্টেশনটি নির্মাণে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বমানের সব সরঞ্জাম। নানা জটিলতা পেরিয়ে পরিপূর্ণতা পেয়েছে ভবনটি। আর আইকনিক রেলস্টেশন দেখে সবাই মুগ্ধ; আর প্রশংসাও কুড়িয়েছে এডিবিরও।
ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, কক্সবাজারে নির্মিত আইকনিক রেলস্টেশনটি দেখে মুগ্ধ এডিবির শীর্ষ কর্মকর্তারা। তাদের এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেছেন, এ রকম সুন্দর ও নান্দনিক আইকনিক রেলস্টেশন বিশ্বে আর কোথাও নেই। এটা দেখে অন্যান্য দেশেও এরকম আইকনিক ভবন নির্মাণ করবেন; তা গর্বের সঙ্গে বলে গেছেন এডিবির কর্মকর্তারা।
কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত থেকে মাত্র ৩ ৩ কিলোমিটার দূরে ঝিলংজা এলাকায় ২৯ একর জমিতে ২১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন স্টেশন। আইকনিক এ স্টেশনটি নির্মাণে চীন, বেলজিয়াম, ইংল্যান্ড, ইতালিসহ বিশ্বের বিভিন্ন আধুনিক স্টেশনের সুযোগ-সুবিধা বিবেচনায় নেয়া হয়েছে। পুরো প্রকল্পটিতে ছয় শতাধিক লোক কাজ করছে। ৪ বছরের বেশি শ্রমে আইকনিক রেলস্টেশন ভবনটি দৃশ্যমান। এখন প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধন করবেন এই প্রত্যাশা আছি। এটি শুধু স্টেশন নয়, পরিপূর্ণ একটি কমপ্লেক্স। রয়েছে তারকামানের হোটেল, লকার, শপিংমল, রেস্তোরাসহ বিশ্বমানের সব সুযোগ-সুবিধা।
আইকনিক রেলস্টেশনের নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ম্যাক্স গ্রুপের চেয়ারম্যান ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোহাম্মদ আলমগীর বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্পে সবচেয়ে আকর্ষণীয় হচ্ছে আইকনিক রেলস্টেশনটি। আইকনিক ভবনটি নির্মাণ অত্যন্ত জটিল ছিল। যেমন: যে স্টিলগুলো দেখা যাচ্ছে, এর যত দাম না; তৈরি করতে তার চেয়ে চার গুণ বেশি টাকা ব্যয় হয়েছে। এতে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষও সহযোগিতা করেছে।
এ দিকে গত ১৫ ও ১৬ অক্টোবর দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন ও আইকনিক রেলস্টেশন পরিদর্শন করেন রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন। তিনি বলেন, নভেম্বরেই দেশের রেল নেটওয়ার্কে যুক্ত হচ্ছে পর্যটন নগরী কক্সবাজার। যার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরইমধ্যে ১০০ কিলোমিটার রেলপথ নির্মাণ কাজ শেষ; যা ট্রলিযোগে পরিদর্শনও করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উদ্বোধনের পর অল্প কিছুদিনের মধ্যে এই রেলপথে বাণিজ্যিক যাত্রা শুরু হবে।
সারাদেশের সঙ্গে পর্যটন নগরীর রেল যোগাযোগ স্থাপন কক্সবাজার বাসীর দীর্ঘদিনের স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন বাস্তবে রূপ দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কক্সবাজার বাসীর দীর্ঘ দিনের স্বপ্ন বাস্তবে রূপ পাচ্ছে চলতি মাসেই।
পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ব্যবসায়ীরা বলেন, নভেম্বরে উদ্বোধন হতে যাচ্ছে দোহাজারি-কক্সবাজার রেললাইন। এরপরই হয়তো পর্যটন নগরী কক্সবাজারে ট্রেন ছুটে আসবে। এতে সাশ্রয়ী মূল্যে পর্যটকরা আসবেন পর্যটন নগরী কক্সবাজারে। এতে করে কক্সবাজারে দেশি-বিদেশি পর্যটকের আগমন বাড়বে। বিশেষ করে, আইকনিক স্টেশনটি কথা না বললেই নয়। আইকনিক রেলস্টেশনটি চোখ ধাঁধিয়ে দিচ্ছে। আশা করি, অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন আনবে এই রেলপথ।
শ্রিম্প হ্যাচারি অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (সেব) এর মহাসচিব মোহাম্মদ নজিবুল ইসলাম বলেন, দোহাজারি-কক্সবাজার রেল চালু হলে পর্যটকদের যাতায়াত সহজ হবে। পাশাপাশি স্বল্প সময়ে ও কম খরচে কৃষিপণ্য, মাছ, লবণ পরিবহণ করা যাবে। এতে কক্সবাজারের পর্যটনসহ অর্থনীতিতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসবে।
কক্সবাজার বাসীর দীর্ঘ দিনের দাবি এই রেলপথ এখন স্বপ্ন নয়, বাস্তব। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় আগামী ১১ নভেম্বর রেল আসার অপেক্ষায় প্রহর গুনছেন কক্সবাজারবাসী।