শনিবার, ২২ মার্চ, ২০২৫

২৮ অক্টোবর নিবন্ধনহীন জামায়াত সমাবেশের অনুমতি পাবে না


২৫ অক্টোবর ২০২৩, ৬:৫০ অপরাহ্ণ 

২৮ অক্টোবর নিবন্ধনহীন জামায়াত সমাবেশের অনুমতি পাবে না
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেছেন, রাজনৈতিক দল হিসেবে ‘নিবন্ধন না থাকায়’ জামায়াতে ইসলামীকে ঢাকার সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হবে না। ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশ করতে কোনো দলকেই এখনো অনুমতি দেওয়া হয়নি। 
তিনি বলেন, ‘নিয়ম-শৃঙ্খলা মানলে’ যে কোনো রাজনৈতিক দলকেই সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে।

বিজয় দিবস সামনে রেখে সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বুধবার সচিবালয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার পর সাংবাদিকদের সঙ্গে এসব বিষয়ে কথা বলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
জামায়াতে ইসলাম ২৮ অক্টোবর ঢাকায় সমাবেশের অনুমতি পাবে কিনা- এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশে অনেক দল, অনেক পথ, অনেক কিছু রয়েছে। জামায়াতে ইসলাম এর আগেও দু’এক জায়গায় আলোচনা করেছে। 
মন্ত্রী আরো বলেন, দেশের নিয়মকানুন মেনে, দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর নির্দেশনা মেনে যে কেউ যে কোনো কথা বলতে পারে। জামায়াত বলে কোনো কথা নেই, যে কেউ, যে কোনো কথা বলতে পারে, এটা গণতান্ত্রিক দেশ, গণতান্ত্রিক চর্চা এখানে আছে। আমাদের কথা হলো- আমাদের যে আইনকানুন আছে, তার মধ্যে থেকে তাদের কথা বলতে হবে।
জামায়াতকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া হবে কিনা, দ্বিতীয় দফা এ প্রশ্নে আসাদুজ্জামান খাঁন কামাল বলেন, আমরা পারমিশন দিইনি, আমরা তাদের কোনো পারমিশন দিই না। জামায়াতে ইসলাম নিবন্ধিত দল নয় এখন পর্যন্ত। কাজেই তারা জামায়াতে ইসলামের ব্যানারে যদি আসে, তাহলে তাদের পারমিশন দেওয়ার প্রশ্নই আসে না। 
জামায়াত আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশের অনুমতি চেয়েছে কিনা, তা ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনারকে জিজ্ঞাসা করার পরামর্শ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমার কাছে কেউ পারমিশন চায় না।
সরকারের পদত্যাগের এক দফা আন্দোলনে থাকা বিএনপি ২৮ অক্টোবর ঢাকার নয়াপল্টনে নিজেদের দলীয় কার্যালয়ের সামনে মহাসমাবেশ করতে চায়। তাই গত ২১ অক্টোবর দলটির পক্ষ থেকে ঢাকা মহানগর পুলিশের কাছে আবেদন করা হয়েছে।
একই দিনে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেইটে পাল্টা শান্তি সমাবেশের ডাক দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সেদিন রাজধানী দখলে রাখার ঘোষণা দিয়েছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপির সঙ্গে যুগপৎ আন্দোলনে না থাকলেও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে ২৮ অক্টোবর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে মহাসমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে জামায়াতে ইসলামী।
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে ২০১৩ সালের আগস্টে আদালতের রায়ে জামায়াতে ইসলামীর নিবন্ধন অবৈধ ঘোষণা করা হয়।ফলে দলীয়ভাবে জামায়াত নেতাদের নির্বাচন করার সুযোগ বন্ধ হয়ে গিয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগ বা বিএনপি কোনো দলকেই ২৮ অক্টোবর সমাবেশ করার অনুমতি এখনো দেওয়া হয়নি। বিএনপি সমাবেশের যে অনুরোধ করেছে, কীভাবে করেছে সেটা পুলিশ কমিশনার জানেন। ঢাকায় কোন জায়গায় সমাবেশ করলে, এত লোক আনবেন বলে তারা ঘোষণা দিয়েছেন তারা নাকি সারা বাংলাদেশ থেকে যারাই বিএনপি করে তাদের নিয়ে আসবে। কোনো সদস্যই নাকি বাদ থাকবে না, এ রকমই আমরা শুনছি।
তিনি বলেন, সে রকমই যদি হয়, এত লোক ঢাকায় এলে অন্য ধরনের একটা পরিস্থিতি হতে পারে। সেজন্যই আমাদের কমিশনার সাহেব তাদেরকে কোথায় সমাবেশটা করতে দেবেন সেটা তিনি বুঝবেন, সেভাবেই তিনি সিদ্ধান্ত নেবেন। কমিশনার সাহেব এখন পর্যন্ত কাউকে সমাবেশের অনুমোদন দেননি।
পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অবনতির শঙ্কা আছে কিনা, এ প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সরকার তো এমন একটা কিছু নয় যে তাদের ধাক্কা দিল পড়ে গেল। গণতান্ত্রিক সরকার ভোটের মাধ্যমে এখানে এসেছে, তার যে মেয়াদ সেই মেয়াদের পরে নির্বাচন হবে, তারপরই সরকার পরিবর্তন হবে। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সংবিধান অনুযায়ী ধাক্কা দিলে সরকার পড়ে যাবে এ ধরনের কোনো শব্দ লেখা নেই। সংবিধানের বাইরে সেটা রক্ষা করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যেটা কর্তব্য সেটা তারা করবে, এখানে তো আর ব্যাখ্যা দেওয়ার প্রয়োজন নেই। কনস্টিটিউশন রক্ষা করার দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর। সেই কনস্টিটিউশন ফ্রেমওয়ার্কের বাইরে যদি তারা কিছু করতে চেষ্টা করে তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের অর্পিত দায়িত্বটি পালন করবেন।
তিনি বলেন, আমি সব সময়ই বলি, সব রাজনৈতিক দলের রাইট রয়েছে গণতান্ত্রিক চর্চা করা। তাদের সবকিছু প্রচার-প্রচারণার নিয়মকানুন রয়েছে। নিয়ম বহির্ভূত কিছু করলে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের মানা করবেন, বলবেন যে আইন ভাঙছেন।
তিনি আরো বলেন, কাজেই আমাদের কথা স্পষ্ট, তারা (বিএনপি) যদি কমিশনারের কাছে যদি আবেদন করেন এবং বলেন আমরা ভাঙচুর করব, অবরোধ করব, তাহলে তো কমিশনার সাহেব (অনুমতি) দেবেন না। শান্তিপূর্ণভাবে তারা যদি অবস্থান করে, আমাদের কমিশনার সাহেব নিশ্চয় তাদের অনুমতি দেবেন।
একই দিনে দুটি রাজনৈতিক দলকে সমাবেশের অনুমতি দেওয়া নিয়ে এক প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আইন সংগতভাবে আরও যদি ১০টি দল চায় যে তারা ওই দিনই সমাবেশ করবে, আমরা বলবো নিয়মশৃঙ্খলা মেনে, শান্তি রক্ষা করে যদি করতে পার, তাহলে করবা। আইনশৃঙ্খলা মেনে চললে বিশৃঙ্খলা হবে না। 
বিএনপির সমাবেশ ঘিরে ঢাকার প্রবেশ পথ বন্ধ করা হবে কিনা, সেই প্রশ্নে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর সরকার ঢাকার প্রবেশ পথ কেন বন্ধ করবে? মানুষ ঢাকায় আসবে ব্যবসার কাজে, চাকরির কাজে। অনেকে ঢাকার বাইরে থেকে এসে ঢাকায় অফিস করেন। কাজেই ঢাকার পথ আমরা কেন বন্ধ করব? আমরা ঢাকার কোনো পথ বন্ধ করব না। তারা যদি শান্তিপূর্ণভাবে নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে চলে যায় আমরা বাধা দেব না। 
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, বিজয় দিবসে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রীর সাভার যাওয়ার সময় প্রয়োজনীয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে। স্মৃতিসৌধ এলাকা সিসিটিভির আওতায় থাকবে। সারা দেশে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
তিনি বলেন, নির্বাচন সামনে হওয়ায় এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত যে এবার প্যারেড হবে না। প্রধানমন্ত্রী যদি চিন্তা করেন প্যারেড হবে, তাহলে হবে। কেন প্যারেড হবে না, সেই ব্যাখ্যা আমাদের কাছে নেই।