জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
১৮ অক্টোবর ২০২৩, ২:১০ অপরাহ্ণ
নিত্যপ্রয়োজনীয় পন্যের দাম লাগাম ছাড়া হয়ে উঠেছে। একজন ক্রেতা সবজি কেনার জন্য এক দোকান থেকে অন্য দোকানে তারপর আরেক দোকানে। উদ্দেশ্য শুধু একটাই কোনো দোকানে সবজির দাম একটু কম পাওয়া যায় কিনা। কিন্তু সারা বাজার ঘুরে দেখে সব দোকানে প্রায় একই দাম। অনেকটা হতাশার সুরে গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর মিরপুর এলাকার ইব্রাহিমপুর বাজারে বাজার করতে আসা মো: রাজিব আহমেদ বলেন, শাক-সবজির এত দাম সাধারণ মানুষ কি খাবে? মানুষ তো না খেয়ে মারা যাবে।
তিনি আরও বলেন, বেশ কয়টি দোকান ঘুরে একমাত্র পেঁপে ও মিষ্টি কুমড়া ছাড়া আর সব সবজির দাম লাগামহীন। ৮০ টাকার নিচে কোনো সবজি পাওয়া যাচ্ছে না। একই সঙ্গে বেড়েছে ডিম, মুরগি ও মাছের দাম। এতে বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। রাজধানীর মিরপুর এলাকার ইব্রাহিমপুর বাজার ঘুরে ক্রেতা এবং বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।
শাক-সবজির দাম বৃদ্ধির কারণ জানতে চেয়ে দোকান ব্যবসায়ীরা বলেন, বেশ কয় একদিন বৃষ্টির কারণে বাজারে শাক-সবজির সরবরাহ কমে গেছে ফলে আমাদের বেশি দামে কিনতে ও বিক্রি করতে হচ্ছে। তবে বৃষ্টি কমলে দাম আবার স্বাভাবিকভাবে কমে যাবে।
বাজার ঘুরে দেখা যায়, চিচিঙ্গা, শসা, ঢেঁড়স, কচুর লতি বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকা কেজি দরে। যা কয়েকদিন আগেও ৭০ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছিল। বেগুনের দাম এর মধ্যে ১০ থেকে ১৫ টাকা বেড়ে লম্বা বেগুন বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ১০০ টাকায়, আর গোল বেগুন ১১০ থেকে ১২০ টাকায়। করলা বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৯০ টাকায় এবং কাঁকরোল ১০০ টাকা। এছাড়া গাজর ১২০ টাকা, মুলা ৮০ টাকা, টমেটো ১২০ থেকে ১৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে। বরবটি ও কচুরমুখীর কেজি ১০০ টাকা, শিম ১৬০ টাকা। কাঁচা মরিচ ২৪০ টাকা, ধনেপাতা ২০০ কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতিটি লাউ ৮০ টাকা ও চাল কুমড়া ৬০ থেকে ৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ টাকায়।
মাছ বাজার ঘুরে দেখা যায়, পাঙাশ মাছ প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়, তেলাপিয়া ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, চাষের কই ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, পাবদা ৫০০ থেকে ৫৫০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪২০ থেকে ৪৫০ টাকা, গুড়া মাছ (কাচকি) ৪০০ থেকে ৪২০ টাকা, বোয়াল ৬০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ট্যাংরা ৬৫০ থেকে ৬৫০ টাকা, রুই মাছ প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, সিলভার কার্ভ (ছোট) ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা, বড় কাতল প্রতি কেজি ৩৮০ থেকে ৪০০ টাকা, চিংড়ি প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ইব্রাহিমপুর বাজারের ব্যবসায়ী মো: নুরু উদ্দিন বলেন, পাইকারি বাজার গুলোতে সবজির সরবরাহ কম থাকায় দাম অনেকটাই বেড়েছে। গত সপ্তাহে টানা বৃষ্টির কারণে সবজির ফলন কমে গেছে। ফলে এ সপ্তাহ বাজারে যেসব সবজি ঢুকছে, তার বেশিরভাগই পচা এবং নষ্ট। এ কারণে সবজির দাম কিছুটা বেড়েছে। কিন্তু ক্রেতারা বলছেন, বৃষ্টির অজুহাতে সবজির দাম বাড়ানো হচ্ছে। দাম কমাতে সরকারের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।
রাজধানীর বাজারে এদিকে দুদিনের ব্যবধানে প্রতি ডজনে ডিমের দাম বেড়েছে ১৫ টাকা। ১৫৫ টাকার ডিম এখন বিক্রি হচ্ছে ১৬৫-১৭০ টাকায়। বাজারে ডিমের সঙ্গে বেড়েছে মুরগির দামও। ব্রয়লার মুরগি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা থেকে বেড়ে ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এ সপ্তাহে কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা বেড়ে কক এবং সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৩৩০ টাকা দরে। দেশি মুরগি ৫৫০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি আর গরুর মাংস ৮০০ থেকে ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সবজির দামও দিন দিন বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষ। সরকারের উচিত সবজির ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করার জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া।