বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

৪০ দিনেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী সুমাইয়া


২৫ জুলাই ২০২৩, ১২:১৬ অপরাহ্ণ 

৪০ দিনেও উদ্ধার হয়নি স্কুলছাত্রী সুমাইয়া
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

ঝালকাঠির রাজাপুরে অপহরনের ৪০ দিন পার হলেও উদ্ধার হয়নি ১৫ বছর বয়সী তাইরিন আক্তার সুমাইয়া। রাজাপুর উপজেলার পঞ্চগ্রাম উচ্চ মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ১০ম শ্রেনীর ছাত্রী সুমাইয়া।  সে ফরিদপুরের বাসিন্দা মো. আবুল কালামের মেয়ে। গত ১৫জুন স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে রাজাপুর উপজেলার আঙ্গারিয়া এলাকা থেকে অপহরণ হয় সুমাইয়া।

ঘটনায় ভূক্তভোগী স্কুলছাত্রীর মা খাদিজা বেগম বাদী হয়ে গত ২২ জুন ঝালকাঠি আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৭জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। মামলার পর থেকে প্রধান অভিযুক্ত পলাতক আছে, তবে অন্যান্য অভিযুক্তরা দিব্বি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এখনও কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। বর্তমানে মামলাটি পিরোজপুর জেলায় পিবিআইতে তদন্তরত অবস্থায় রয়েছে (মামলা নম্বর-৯৭/২০২৩ রাজাঃ)।

মামলা থেকে জানা গেছে, মৃত দলিল উদ্দীন কারিগরের ছেলে মো. আনোয়ার হোসেন ও ভূক্তভোগী পরিবারটি আঙ্গারিয়া এলাকায় পাশাপাশি বাড়িতে বসবাস করেন। গত ১০ জুন আনোয়ারের মেয়ে জামাই নিপুনসহ তার ভাই কাওসার ও চাচাত ভাই জহিরুল ইসলাম আনোয়ারের বাড়িতে বেড়াতে আসেন। তারা ঝালকাঠি সদরের হোসেনপুর এলাকার বাসিন্দা। 

মামলা থেকে আরও জানা গেছে, তাইরিন আক্তার সুমাইয়া স্কুলে আসা-যাওয়ার পথে আনোয়ারের বাড়িতে বেড়াতে আসা জহিরুল তাকে প্রেমের প্রস্তাবসহ অনৈতিক প্রস্তাব দেয়। এ কাজে নিপুন ও কাওসার জহিরুলকে সহায়তা করে। বিষয়টি সুমাইয়া তার মা খাদিজা বেগমকে জানায়। খাদিজা বেগম বিষয়টি আনোয়ারকে জানালে আনোয়ার উল্টো খাদিজাকে হুমকি দেয়। 

 গত ১৫ জুন সকাল সাড়ে ৯টার দিকে জহিরুল ইসলাম ও কাওসার তাদের লোকজন নিয়ে সুমাইয়া স্কুলে যাওয়ার সময় পথ থেকে জোড় করে মাইক্রোবাসে তুলে নিয়ে যায়। সুমাইয়ার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন ছুটে আসলেও মাইক্রোবাসটি আটকানো সম্ভব হয়নি। 

মামলায় উল্লেখ্য, বিষয়টি আনোয়ারকে জানালে আনোয়ার ২০ হাজার টাকা দাবী করে, টাকা পেলেই জহিরুল ও কাওসার সুমাইয়াকে ফেরত দেবে। কিন্তু সুমাইয়ার মা খাদিজার কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা নিয়ে আনোয়ার, আলম ও মজিবর পালিয়ে যায়। পরে সুমাইয়াকে ফেরত না পেয়ে গত ২১ জুন খাদিজা বেগম থানায় মামলা করতে আসলে পুলিশ মামলা না নিয়ে আদালতে যাওয়ার পরামর্শ দেয় । ২২জুন খাদিজা ঝালকাঠি আদালতে মামলা করেন।

মামলার বাদী খাদিজা বেগম জানায়, ‘৪০ দিন পার হলেও এখনও আমার মেয়েকে ফিরে পাইনি। অপরাধিরা এখনও প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছে। আমি আমার মেয়েকে উদ্ধারের জন্য প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে ঘুরে বেড়াচ্ছি। কিন্তু কোন ফল আসছে না। উল্টো আসামিরা মামলা তুলে নেয়ার জন্য আমাকে প্রতিনিয়ত হুমকি দিয়ে যাচ্ছে। এখন দিশেহারা হয়ে পড়েছি, আমার মেয়ে বেঁচে আছে কিনা তাও জানি না।’

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শেখ নেয়ামত আলী বলেন, ‘আমরা র‌্যাবের সহায়তা নিয়ে ভিকটিমকে উদ্ধারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিভিন্ন জটিলতার কারণে উদ্ধার করতে পারছিনা। আসামিরা ভিকটিমকে নিয়ে মোবাইল বন্ধ করে অজ্ঞাত স্থানে লুকিয়ে রেখেছে। মোবাইল বন্ধ করে লুকিয়ে থাকলে আমরা কি করবো? আমরা কোন উপায় পাচ্ছি না।’