খুকৃবিতে "জুলাই শহীদ স্মৃতি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট" উদ্বোধন
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
২০ জুলাই ২০২৩, ৬:৩০ অপরাহ্ণ
দেশে ডেঙ্গুতে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে প্রতিদিন। এডিস মশাবাহিত রোগটি প্রাথমিক অবস্থায় যদি নির্ণয় করা না হয়, তাহলে মারাত্মক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারে এর ভয়াবহতা।
করোনার সময়ে জ্বর হলেই সবাই ভেবে নিত করোনা হয়েছে! কিন্তু চিকিৎসক ও গবেষকরা বলছেন, শুধুমাত্র করোনায় আক্রান্ত হলেই মানুষ জ্বরে ভোগেন না, ডেঙ্গুর কারণেও জ্বরে ভুগতে পারে। তাই এ সময় যদি জ্বর হয়, উদ্বিগ্ন না হয়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। নির্দেশনা মেনে চলতে হবে, নিয়মমাফিক পরীক্ষা করাতে হবে।
ডেঙ্গু ভাইরাসের আক্রমণে জ্বরের কিছু লক্ষণ আছে, সেসব জানা থাকলে নিজেই নির্ণয় করা যায় কেউ ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়েছে কি না। তবে নিজ থেকে কোন ধরনের ঔষুধ খাওয়া বা পরীক্ষা না করার বিষয়ে ও গবেষকরা সতর্ক থাকতে আহবান করে যাচ্ছেন।
ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে সাধারণত তীব্র জ্বর হয়। তাছাড়াও সারা শরীরে প্রচণ্ড ব্যথা হয়ে থাকে। জ্বর হতে পারে ১০৫ ফারেনহাইট পর্যন্ত। তীব্রভাবে পেটে ব্যথাও হতে পারে রোগীর। শরীরজুড়ে বিশেষ করে রোগীর হাড়, কোমর, পিঠসহ অস্থিসন্ধি এবং মাংসপেশীগুলোতে তীব্র ব্যথা হয়ে থাকে। এছাড়াও মাথাব্যথা হয় ও চোখের পেছনে ব্যথা অনুভূত হয়। গবেষকরা এই জ্বরের আরেক নাম দিয়েছে ব্রেক বোন ফিভার।
জ্বর হওয়ার পরের চার বা পাঁচ দিনের সময় সারা শরিরে লালচে দানা দেখা যাবে, যাকে বলা হয়ে থাকে স্কিন র্যাশ। যা দেখতে অনেকটা এলার্জি বা ঘামাচির মতো। পাশাপাশি বমি বমি ভাব হতে পারে, এমনকি বমি হতেও পারে। রোগী অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ করবে এবং রুচি কমে যায়। সাধারণত চার বা পাঁচ দিন জ্বর থাকবার পরে তা এমনিতেই চলে যায়। কারও ক্ষেত্রে চলে যাওয়ার দুই বা তিন দিন পর আবারও জ্বর এসে থাকে।
রোগীর এই অবস্থাটি সবচেয়ে জটিল হয়ে থাকে। এই জ্বরে ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ ছাড়াও আরও উপসর্গ সমস্যা হিসেবে দেখা দেয়। রোগীর শরীরের বিভিন্ন অংশ থেকে রক্ত পড়া শুরু হয়। যেমন- নাক ও মুখ দিয়ে, মাড়ি ও দাঁত হতে, কফের সঙ্গে, চামড়ার নিচে, রক্তবমি, পায়খানার সাথে তাজা রক্ত বা কালো রঙের পায়খানা, চোখের মধ্যে এবং চোখের বাহিরে। নারীদের ক্ষেত্রে এসময়ে ঋতুস্রাব অথবা রক্তক্ষরণ শুরু হলে অনেকদিন পর্যন্ত রক্ত পড়তে থাকে।
এই ধরনের রোগের বেলায় অনেক সময় রোগীর বুকে পানি, পেটে পানি ইত্যাদি দেখা দিতে পারে। অনেক সময় লিভার আক্রান্ত হয়ে রোগীর জন্ডিসও হতে পারে। আবার কিডনি আক্রান্ত হয়ে রেনাল ফেইলিউর সহ ইত্যাদি জটিলতা দেখা যেতে পারে।
ডেঙ্গু জ্বরের সবচেয়ে ভয়াবহ রূপ হচ্ছে ডেঙ্গু শক সিনড্রোম। ডেঙ্গু হেমোরেজিক জ্বরের সঙ্গে সার্কুলেটরি ফেইলিউর হয় যখন, তখন ডেঙ্গু শক সিনড্রোম হয়। এর লক্ষণগুলো হলো- রক্তচাপ হঠাৎ করে কমে যাওয়া। নাড়ীর স্পন্দন অত্যন্ত ক্ষীণ হয়ে যাওয়া ও দ্রুত ঘটা। শরীরের হাত পা সহ অন্যান্য অংশ ঠান্ডা হয়ে আসা। প্রস্রাব কমে যাওয়া। হঠাৎ করে রোগী জ্ঞানও হারিয়ে ফেলতে পারে। এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এই সময়ে।
চিকিৎসক ও গবেষকদের পরামর্শ হলো ডেঙ্গু ক্লাসিক্যাল হোক বা হেমোরেজিক হোক, এই সময় জ্বর হলেই প্রথমেই পরীক্ষা করিয়ে নেয়া উচিৎ হবে। ক্লাসিক্যাল ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী আবারও ডেঙ্গু আক্রান্ত হলে রোগীর অবস্থা বেশি ঝুঁকিতে পড়তে পারে, তাই জ্বর হলেই সতর্ক থাকতে হবে সবাইকে।