বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে যেসব খাবার


১২ অক্টোবর ২০২৩, ১:০৯ অপরাহ্ণ 

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে যেসব খাবার
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

ইলেকট্রনিক স্ক্রিনের দিকে ক্রমাগত একনাগাড়ে দীর্ঘসময় ধরে তাকিয়ে থাকার কারণে দেশে দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত লোকের সমস্যা যেন বেড়েই চলেছে। কম্পিউটার, টিভি এবং স্মার্টফোন এখনকার সমাজে দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত সমস্যার প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিন্তু চশমার মাধ্যমে এর সমস্যা সমাধান করা গেলেও সঠিক স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস এবং জীবন-যাপনের মাধ্যমেও এর সমাধান করা যেতে পারে। এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো খেলে আপনি দৃষ্টিশক্তির সব ধরনের সমস্যা থেকে রক্ষা পাবেন।

চোখের জ্যোতি বাড়াতে ভিটামিন এ এবং সি জাতীয় খাবার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। মিষ্টি পেঁপে, কাঁঠাল, মিষ্টি কুমড়া, কচু শাক, হেলেঞ্চা শাক, পুঁই শাক, লাউ শাক, ধনিয়া পাতা, পাট শাক, গাজর, বাদাম, টমেটো, কলাই, মিষ্টি আলু, ডিম, ছোট্ট মাছ জাতীয় খাবারে চোখের জ্যোতি বাড়ে।

১. পেঁপে:

পেঁপেতে আছে ক্যারোটিনাইডস নামের উপাদান, যা চোখের জন্য উপকারী। পেঁপেতে রয়েছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ। চোখের মিউকাস মেমব্রেনকে সবল করতে এবং ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা করতে যে ধরনের উপাদান প্রয়োজন, পেঁপেতে তা অধিক পরিমাণে থাকে। বিশেষ করে পেঁপেতে বিদ্যমান রয়েছে বেটা ক্যারোটিন, জিয়াক্সনাথিন ও লুটেইনের মতো উপাদান।

২.কাঁঠাল:

কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন এ। ভিটামিন এ দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে। কাঁঠালের অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট উপাদান চোখের রেটিনার ক্ষতি প্রতিরোধ করে। প্রচুর ভিটামিন এ থাকায় যা রাতকানা রোগ থেকে রক্ষা করে।

৩. মিষ্টি কুমড়া:

মিষ্টি কুমড়ায় রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ। বিটাক্যারোটিন-সমৃদ্ধ এই সবজিটি চোখের জন্য খুবই ভালো। বয়সজনিত রোগ, বিশেষ করে রেটিনার বিভিন্ন অসুখ প্রতিরোধে এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

৪. কচু শাক:

কচু শাক দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে এবং চোখ সম্পর্কিত জটিলতা কমায়। কচুশাকে আছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ যা আমাদের রাতকানা, ছানি পড়াসহ চোখের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধসহ দৃষ্টিশক্তি বাড়িয়ে দেয়।

৫. হেলেঞ্চা শাক:

আমাদের আশেপাশে এমন অনেক প্রাকৃতিক উপাদান আছে যেগুলির কার্যকারিতা সম্বন্ধে আমরা ওয়াকিবহাল নই। যেমন ধরা যাক হেলেঞ্চা বা হিঞ্চা শাক। হেলেঞ্চাতে রয়েছে শতকরা ২.৯ ভাগ প্রোটিন, ০.২ ভাগ ফ্যাট, ৫.৫ ভাগ শর্করা, ২.২ ভাগ লবণ এবং প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ রয়েছে। যা দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে সাহায্য করে এবং চোখ সম্পর্কিত জটিলতা কমায়।

৬. পুঁই শাক:

পুঁইশাকে রয়েছে বিদ্যমান ভিটামিন এ এবং সি, যা চোখের দৃষ্টি শক্তি ভালো রাখে সেই সাথে ত্বকের রোগজীবাণু দূর করে, শারীরিক বৃদ্ধিতে সাহায্য করে এবং চুলকে মজবুত রাখে।

৭. ছোট মাছ:

ছোট মাছে অসম্পৃক্ত চর্বি আছে, যা স্বাস্থ্যের জন্য অনেক উপকারী। এ ছাড়া আয়রন, প্রোটিন, ফসফরাস, ভিটামিন এ, ভিটামিন বি২, ফ্যাটি অ্যাসিড, লাইসনি ও মিথিওনিনেরও ভাল উৎস ছোট মাছ। ছোট মাছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন এ থাকে যা রাতকানা, অন্ধ হয়ে যাওয়া ছাড়াও দৈনন্দিন অনেক শারিরীক সমস্যা দূর করতে সক্ষম। স্বল্পতাজনিত চোখের সমস্যা রোধে মলা মাছ খুবই কার্যকর। এতে ক্যালসিয়াম অনেক। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিড আছে এই মাছে, যা হৃদ্‌রোগীদের জন্য ভালো। ১০০ গ্রাম মলা মাছে প্রায় ৮৫৩ মিলিগ্রাম ক্যালসিয়াম আছে। আরও আছে ৫.৭ মিলিগ্রাম আয়রন, ভিটামিন ‘এ’ ২০০০ ইউনিট এবং ৩.২ মিলিগ্রাম জিংক।

৮. ডিম:

ডিমে রয়েছে ভিটামিন এ যা আপনার চোখের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখবে এবং চোখকে ছানি পরা থেকে দূরে রাখবে সাথে বয়সকালের সমস্যা গুলোও।

৯. মিষ্টি আলু:

মিষ্টি আলু উচ্চ আঁশজাতীয় খাবার যা কার্বোহাইড্রেইটের জটিল যৌগ। ফলে এটি শরীরে শক্তি যোগাতে সাহায্য করে। এটা বিটা ক্যারটিনের ভালো উৎস যা মূলত অ্যান্টি অক্সিডেন্ট এবং ভিটামিন এ’তে রূপান্তরিত হয়। যা চোখের স্বাস্থ্যই ভালো রাখে না বরং ত্বকের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।

১০. গাজর:

সেই ছোটবেলা থেকেই আমরা শুনে আসছি গাজর আমাদের চোখের জন্য বেশ উপকারী। গাজরে আছে প্রচুর পরিমাণে বিটা-ক্যারোটিন। বিটা-ক্যারোটিন যা আমাদের দেহের ভেতরে রাসায়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমে ভিটামিন-এ তে রূপান্তরিত হয়। আর ভিটামিন-এ আমাদের দৃষ্টিশক্তি স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

১১. বাদাম:

বাদামে আছে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড। যা চোখের দৃষ্টিশক্তি সংক্রান্ত রোগ কমায়। এতে থাকা ভিটামিন ই চোখে ছানি পড়া এবং ক্ষয় প্রতিরোধ করে।

চোখের জ্যোতি বাড়াতে ভিটামিন বি বা রাইবোপ্লাভিনের গুরুত্বও কম নয়। এটা পাওয়া যাবে—দুধ, কলিজা, ইস্ট, পনির, ডিম ও মাছ থেকে। সুতরাং চোখের জ্যোতি বাড়াতে হলে চাই সবুজ শাক, হলুদ বিভিন্ন রঙের ফল–ফুল, লৌহ ও আমিষযুক্ত খাবার।