ফরিদপুর জেলা বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতৃত্বে লিফলেট বিতরণ ও জনসংযোগ অনুষ্ঠিত
মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী, ২০২৫
৭ অক্টোবর ২০২৩, ২:২১ অপরাহ্ণ
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র। বাংলাদেশের সকল নাগরিকদের জন্য পরিচয় পত্র সনদ হচ্ছে ভোটার কার্ড যাকে জাতীয় পরিচয় পত্র বা সংক্ষেপে এনআইডি বলা হয়। এটি দেশের ভিতর পরিচয় প্রমাণের প্রধান মাধ্যম। দেশীয় আইনে ১৮ বছর পূর্ণ হলে ভোটার আইডি কার্ড নিবন্ধন করা সবার জন্য বাধ্যতামূলক। কিন্তু মাত্র ১৬ বছর বয়সে অনলাইনে নতুন পরিচয় পত্র বা এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে পারবেন। ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার আগেই অনলাইনে New Voter Registration নিবন্ধন কার্যক্রম সম্পন্ন করে, NID Card ডাউনলোড করে নিতে পারবে। কিন্তু ভোটার তালিকায় নাম আসবে ১৮ বছর পূর্ণ হওয়ার পর।
নতুন ভোটার আবেদন করার শর্ত:
নতুন ভোটার হওয়ার আবেদন অর্থাৎ এনআইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে কিছু শর্ত পূরণ করতে হয়-
একজন বাংলাদেশী নাগরিকের প্রমাণ হিসেবে প্রত্যেকেরই কিছু ডকুমেন্ট থাকে। অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ, পিতা-মাতা জাতীয়তা এবং আইডি কার্ড। স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে বসবাসরত বাড়ির কর পরিষদ রশিদ।
ভোটার আইডি কার্ড বা জাতীয় পরিচয় পত্র নিবন্ধন করতে কি কি ডকুমেন্ট ও কাগজপত্র প্রয়োজন তা নিচে বিস্তারিত জেনে নেওয়া যাক।
এইসব ডকুমেন্টের সাথে চাইলে পাসপোর্ট নাম্বার ড্রাইভিং লাইসেন্স সংযুক্ত করতে পারেন। পূর্বে জাতীয় পরিচয় পত্রে নিবন্ধন করেননি এই মর্মে একটি অঙ্গীকারনামা ভোটার নিবন্ধনের আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। আবেদনকারী যদি বিবাহিত হয়, তাহলে আবেদনের সাথে কাবিননামা বা বৈবাহিক সনদ সংযুক্ত করতে হবে সাথে স্বামী অথবা স্ত্রীর আইডি কার্ডের ফটোকপি (যদি থাকে) জমা দিতে হবে।
অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ:
আইডি কার্ডের জন্য আবেদন করতে হলে সর্বপ্রথম যে ডকুমেন্টটি প্রয়োজন সেটি হচ্ছে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ। আবেদনপত্রের সাথে বাধ্যতামূলক অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ দিতে হবে। নতুন ভোটার হওয়ার ক্ষেত্রে হাতের লেখা জন্ম নিবন্ধন সনদ গ্রহণ করা হবে না।
আপনার যদি অনলাইন জন্ম নিবন্ধন সনদ না থেকে থাকে তাহলে অনলাইন জন্ম নিবন্ধন আবেদন করে খুব সহজে ডিজিটাল জন্ম নিবন্ধন সনদ তৈরি করে নিতে পারেন। জন্ম নিবন্ধন না থাকলে NID কার্ডের জন্য আবেদন করা যাবে না।
শিক্ষাগত যোগ্যতা সনদ:
যাদের বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট রয়েছে তারা ভোটার অ্যাপ্লিকেশনের সাথে সেগুলো যুক্ত করতে পারেন। শিক্ষা সনদ হিসেবে JSC, SSC, HSC বোর্ড পরীক্ষার সার্টিফিকেট যুক্ত করে আবেদনের সঙ্গে জমা দিতে পারেন।
নাগরিক সনদ:
নতুন ভোটার আবেদনের সাথে নাগরিক সনদ যুক্ত করা বাধ্যতামূলক। বাংলাদেশের জাতীয় পরিচয় পত্র শুধুমাত্র বাংলাদেশের নাগরিকের জন্য। তাই আপনি এদেশের একজন নাগরিক তার একটি সনদ আবেদনের সাথে জমা দিতে হবে। আপনার অবস্থানের উপর ভিত্তি করে স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি যেমন চেয়ারম্যান, সিটি করপরেশনের মেয়র কিংবা ওয়ার্ড কাউন্সিলর থেকে নাগরিক সনদ সংগ্রহ করতে পারেন।
প্রত্যয়ন পত্র:
নাগরিক সনদের মতোই প্রত্যয়ন পত্র স্থানীয় সরকার প্রতিনিধির কাছ থেকে সংগ্রহ করতে হয়। গ্রাম এলাকায় হলে চেয়ারম্যান কার্যালয়ে থেকে প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারেন। যদি পৌরসভা এলাকায় বসবাস হয়, তাহলে মেয়রের কার্যালয় ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর অফিস থেকে নাগরিকের প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করতে পারেন। প্রত্যয়ন পত্র সংগ্রহ করার জন্য কোন প্রকার ফি কিংবা টাকা প্রদান করতে হয় না।
পিতা মাতার ভোটার আইডি কার্ড:
পিতা মাতার তথ্য যাচাই করার জন্য পিতা-মাতার ভোটার আইডির প্রয়োজন হয়। তাছাড়া আবেদনকারীর পিতা-মাতা জাতীয়তা কি তা জানার জন্য এটির প্রয়োজন হয়। নতুন ভোটার হতে হলে ভোটার নিবন্ধন আবেদনের সাথে পিতা-মাতার জাতীয় পরিচয় পত্রের ফটোকপি বাধ্যতামূলক জমা দিতে হবে।
ট্যাক্স বা খাজনা পরিশোধের রশিদ:
জাতীয় পরিচয়পত্র আবেদন করতে যে সকল ডকুমেন্টস বাধ্যতামূলকভাবে জমা দিতে হয় তার মধ্যে ট্যাক্স রশিদ অন্যতম। জমি কিংবা বাড়ির টেক্স বা কর পরিশোধ রশিদ, চৌকিদারি ট্যাক্সের রশিদ অথবা পৌরকর পরিশোধের রশিদ। এই ট্যাক্স রশিদ আবেদনকারীর নিজের নামে হবে বিষয়টি এমন নয়। পিতা-মাতা কিংবা অভিভাবকের নামে হলেও সমস্যা নেই।
ইউটিলিটি বিলের কপি:
বর্তমান ঠিকানা যাচাই করার জন্য বর্তমানে বসবাস করে এমন বাড়ির বিদ্যুৎ বিলের কাগজ কিংবা গ্যাস বিলের কাগজ জমা দিতে হবে। যে এলাকায় বা যে ঠিকানায় ভোটার হতে চাচ্ছেন সেখানে বসবাসরত বাসা বাড়ির বিদ্যুৎ বিল, গ্যাস বিল কিংবা পানি বিলের কাগজ আবেদনের সাথে যুক্ত করতে হবে।
রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট:
রক্তের গ্রুপ টেস্টের রিপোর্ট জমা দেওয়া যদিও প্রয়োজনীয় একটি ডকুমেন্ট নাও হতে পারে, তবে এটি অবশ্যই সবার জমা দেওয়া উচিত। ভোটার হওয়ার সময় ব্লাড টেস্টের রিপোর্ট জমা দিলে আইডি কার্ডের পেছনে রক্তের গ্রুপ উল্লেখ থাকবে।
অঙ্গীকারনামা:
নতুন NID Card আবেদন করার জন্য সবার অঙ্গীকারনামা লিখার প্রয়োজন হয় না। যারা পূর্বে সুযোগ এবং বয়স হওয়া সত্ত্বেও জাতীয় পরিচয় পত্রের জন্য আবেদন করেনি তারা নতুন ভোটার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলে অঙ্গীকারনামা জমা দিতে হয়। এই অঙ্গীকার নামে স্পষ্ট উল্লেখ থাকে, যে আবেদনকারী পূর্বে কখনো জাতীয় পরিচয়পত্র নিবন্ধন করেনি যদি করে থাকে তাহলে পরবর্তী সময়ে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নিলে তার কোন আপত্তি থাকবে না।
উরোক্ত কাগজপত্রগুলোর মধ্যে, যে সকল কাগজ পত্র নতুন ভোটার হওয়ার জন্য প্রযোজ্য। সেগুলো আবেদন পত্রের সাথে জমা দিতে পারেন।