শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন


৪ অক্টোবর ২০২৩, ৫:১৬ অপরাহ্ণ 

শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিন
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

শিশুর যত্ন বলতে আমরা সাধারণত শিশুর শারীরিক যত্নকেই বুঝে থাকি। বাচ্চা ঠিকমত খাচ্ছে কিনা, ঘুমাচ্ছে কিনা, বয়সের স্বাভাবিক বিকাশ হচ্ছে কিনা তা নিয়ে যেন চিন্তার শেষ নেই। সে তুলনায় শিশুর মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে তেমন একটা মনোযোগ দেওয়া হয় না। কিন্তু শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও যত্নবান হওয়া প্রয়োজন।

মনোরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, ছোটদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রাথমিক পর্যায়ে হাল ধরতে হবে পরিবারকেই । বাড়িতেই তৈরি করতে হবে এমন পরিবেশ, যেখানে মন খুলে শিশু কথা বলতে পারে। 

শিশুদের সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলোর একটা হচ্ছে শিশুরা খালি কলসির মতো। যাকে সুশিক্ষায়, জ্ঞানে ও বুদ্ধিতে 'পরিপূর্ণ' করে তোলার দায়িত্ব বড়দের উপর অর্পিত। যে কারণে শিশুর মাঝে নিজেদের ইচ্ছাকে চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। প্রতিটি মানুষ যেমন আলাদা, শিশুর বেলায়ও তাই। সব শিশুকে একই ছাঁচে ফেলে তার সঙ্গে অন্য শিশুর তুলনা করা যাবে না। কারণ এতে করে ছোট থেকেই তার ভেতর হীনমন্যতা জন্ম নেবে।

শিশুদের ভুল করতে দিতে হবে। সবসময় তাকে সংশোধনের দিকে যাবেন না। শিশুরা যদি ভুল না করে তবে ভবিষ্যতে তারা জীবন, সময়, টাকা ও কঠোর পরিশ্রমের গুরুত্ব বুঝতে সক্ষম হবে না। ভুলের মাধ্যমে তারা বুঝতে শিখবে কোন কাজ করা উচিত, কোনটি উচিত নয়। কোনো কিছু শেখার পেছনে প্রত্যেক শিশুর সহজাত প্রবৃত্তি ও প্রবল আগ্রহ কাজ করে। সেই আগ্রহের প্রতি কোনোরকম অনাগ্রহ দেখানো যাবে না। আপনার শিশুটি যদি বলে, সে আঁকতে চায় তাকে আঁকতে দেন। আপনি পড়াতে চাইছেন বলে তার এখন পড়তে বসতেই হবে এমন কোনো কথা নেই। তার ইচ্ছা ও স্বাধীনতা মূল্যায়ন করলে শিশুর মন ভালো থাকবে। মানসিক বিকাশ সুস্থ ও স্বাভাবিক হবে।

খেলার মাধ্যমে শিশুর সৃজনশীলতা, সমস্যা সমাধানের দক্ষতা বৃদ্ধি, সামাজিকতা, সুস্থ প্রতিযোগিতা, স্বাস্থ্যসম্মতভাবে পরাজয় মেনে নেওয়ার ক্ষমতা ও আত্মনিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। শিশুকে অন্য শিশুদের সঙ্গে খেলার ব্যবস্থা করে দিন। এতে করে, সে তার শক্তিশালী ও দুর্বল দিকগুলো চিহ্নিত করে, একাত্মতা বোধ করতে শিখে, অন্যের সঙ্গে কীভাবে চলে তা শিখতে পারে, কোন কথার অন্তর্নিহিত অর্থ কী তা বুঝতে পারে।

শিশুর সফলতাকে প্রশংসা করুন। প্রশংসা করলে তার কাজের স্বীকৃতি ও আত্মবিশ্বাস বাড়বে। শিশুকে বাস্তবমুখী লক্ষ্য নির্ধারণ করতে শেখান। শিশু কোনো কিছু করতে ব্যর্থ হয় তবে তাকে ব্যঙ্গ না করে তার অনুভূতিকে বোঝার চেষ্টা করুন।

শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতিও যত্নবান হওয়া জরুরি। এতে করে ভবিষ্যৎ জীবনের চলার পথ সুগম হবে, দেশ ও দশের জন্য মঙ্গল বয়ে আনবে।