বৃহস্পতিবার, ১০ অক্টোবর, ২০২৪

দুচিন্তায় কৃষক, বেগুনের বাজার নিম্নমুখী


২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:১৮ অপরাহ্ণ 

দুচিন্তায় কৃষক, বেগুনের বাজার নিম্নমুখী
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

উত্তরের জেলা দিনাজপুর অঞ্চলে টানা কয়েকদিনের বৃষ্টিতে ফসলের মাঠে জলাবদ্ধতার কারণে বেগুনসহ অনেক গাছের ক্ষতি হয়েছে। অনেক গাছও মরে গেছে। এ ছাড়াও চলতি মৌসুমে জ্বালানি তেল, রাসায়নিক সার, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়া এবং পাইকারি বাজারে বেগুনের দাম নিম্নমুখী হওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছে ওই অঞ্চলের বেগুন চাষিরা।

এ বছর জেলার খানসামা ও বীরগঞ্জে বেগুনের বাম্পা্র ফলন হয়েছে। অধিক মুনাফার আশায় প্রতিবছর আগাম জাতের বেগুন চাষ করেন কৃষকরা। আগাম বেগুন চাষে বেশ লাভবান হন তারা। মৌসুমের প্রথমদিকে বেগুনের বাজার দর ভালো পাওয়ায় কৃষকের চোখে-মুখে হাসি দেখা দেয়। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে হঠাৎ বেগুনের বাজার দর নেমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন বেগুন চাষিরা। তবে খুচরা বাজারে খুব বেশি দাম না কমলেও মধ্যস্বত্বভোগী ব্যবসায়ীরা লাভবান হচ্ছে বেশি।

আরিফুল সহ কয়েকজন বেগুন চাষি জানায়, অধিক মুনাফার আশায় প্রতিবছর আগাম জাতের বেগুনচাষ করেন খানসামার কৃষকরা। আগাম বেগুনচাষে বেশ লাভবান হন তারা। তবে হঠাৎ জ্বালানি তেল, রাসায়নিক সার, কীটনাশকের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং পাইকারি বাজারে বেগুনের দাম কমে যাওয়ায় চাষিদের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়। মৌসুমের প্রথম দিকে ক্ষেত থেকেই প্রতিমণ বেগুন দেড় হাজার থেকে ১ হাজার ৭০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে বেগুনের বাজার দর নিম্নমুখী। বর্তমানে বাজারে প্রতিমণ বেগুন ৮০০-৯০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

খানসামা উপজেলার আঙ্গারপাড়া ইউপির সুবর্ণখুলি গ্রামের বেগুনচাষি শেফাউল ইসলাম জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী প্রতিবছর বেগুনচাষ করেন। এ বছর ৩ বিঘা জমিতে চাষ করেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলনও ভালো হয়েছে। আগামী ১০ দিনের মধ্যে ক্ষেতের বেগুন বিক্রি করতে পারবেন। কিন্তু বাজারে বেগুনের দর কমে যাওয়ায় দুশ্চিন্তায় আছেন চাষিরা।

বেগুনচাষি মুতালেব তালেব জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবার বেগুনের বাম্পার ফলন হয়েছে। বেগুন উৎপাদনে প্রতিবিঘা জমিতে প্রায় ২০-২৫ হাজার টাকা খরচ হয়। ক্ষেত রোগমুক্ত, বাজারদর ভালো ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে প্রতিবিঘা জমির বেগুন প্রায় ৯০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়। সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতিবিঘা জমির বেগুন বিক্রি করে ৬৫-৭০ হাজার টাকা লাভ হয়। এবছর বেগুনচাষে খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে বাজারদরও নিম্নমুখী।

খানসামা উপজেলা কৃষি অফিস জানায়, এখানকার মাটি বেগুন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। বেগুনচাষে চাষিদের আগ্রহ ও বিভিন্ন সহযোগিতা করায় উপজেলায় চাষিরা বেগুনচাষে ঝুঁকে পড়েছেন। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২৪০ হেক্টর জমিতে বেগুনচাষ হয়েছে। ইতিমধ্যেই অধিকাংশ কৃষক বেগুন বিক্রি শুরু করেছেন। এ উপজেলার উৎপাদিত বেগুন স্থানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের অন্যান্য স্থানে সরবরাহ করছেন কৃষকরা।