খুকৃবিতে "জুলাই শহীদ স্মৃতি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট" উদ্বোধন
শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১৫ অপরাহ্ণ
কারসাজি করে নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি দামে ডলার কেনাবেচা করছে কিছু ব্যাংক ও মানি এক্সচেঞ্জ। এতে ডলার বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় অভিযান শুরু করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই তালিকায় দেশি-বিদেশি ও রাষ্ট্রায়ত্ত খাতের ব্যাংক রয়েছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে ১০ ব্যাংককে শাস্তির আওতায় আনছে বাংলাদেশ ব্যাংক। মঙ্গলবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ব্যাংকগুলোকে এই বিষয়ক চিঠি দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক বলেন, বেশকিছু ব্যাংকের বিরুদ্ধে বেশি দামে ডলার কেনা-বেচার অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে বাংলাদেশ ব্যাংক ঘটনার সত্যতা পেয়েছে। ফলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
তবে গত জুলাই মাসে অধিকতর তদন্ত শুরু করার সময়ে মেজবাউল হক জানিয়েছিলেন, আমরা অভিযোগ পেয়ে তদন্ত শুরু করেছি। তদন্ত শেষে বলা যাবে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা ভেঙেছে কি-না। তদন্তে প্রাপ্ত ফলাফলের ভিত্তিতে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তখন বিস্তারিত বলা যাবে। ডলারের দর বেশি রাখা হচ্ছে—এমন অভিযোগের পরপরই তা রোধ করতে শক্ত অবস্থান নিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। গভর্নরের কড়া নির্দেশ পেয়েই তদন্তে নামেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা।
একই অভিযোগে গত বছরের আগস্টে অতিরিক্ত দরে ডলার কেনাবেচায় দেশি-বিদেশি ছয় ব্যাংকের ট্রেজারি বিভাগের প্রধানকে অপসারণ করেছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ওই সময়ে ব্র্যাক ব্যাংক, সিটি ব্যাংক, প্রাইম ব্যাংক, ডাচ্-বাংলা ব্যাংক, সাউথ ইস্ট ব্যাংক এবং স্ট্যান্ডার্ড চাটার্ড ব্যাংকের নাম প্রকাশ হয়েছিল বিভিন্ন গণমাধ্যমে।
তাদের কাছ থেকে কৈফিয়ত চেয়েছিল বাংলাদেশ ব্যাংক। ব্যাখ্যা পেয়ে আইনি সীমাবদ্ধতার কারণে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নিয়ে এক মাস পর ট্রেজারি প্রধানদের পুনর্বহাল করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। তখন বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশনা দিয়েছিল, অতিরিক্ত দরে ডলার বিক্রি থেকে প্রাপ্ত মুনাফার অর্ধেক সিএসআর তহবিলে স্থানান্তর করার। আর ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে লিখিতভাবে নেয়া হয় পরবর্তীতে আইনি সীমাবদ্ধতার সুযোগে যেন ডলারের দর বাড়ানো না হয়। তখন ডলার কারসাজির ঘটনাকে ব্যাংকারদের অনৈতিক চর্চা বলে উল্লেখ করেছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালা অনুযায়ী, কোন ব্যাংক কী পরিমাণ বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণ করতে পারবে, তার একটি সীমা নির্ধারণ করে দেয়া আছে। আগে ব্যাংকের রেগুলেটরি ক্যাপিটালের ২০ শতাংশ পর্যন্ত বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণ করার সুযোগ ছিল। ডলার বাজারের অস্থিরতা কমাতে ২০২২ সালের ১৫ জুলাই তা কমিয়ে ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই সীমার বেশি ডলার হাতে থাকলে তা কেন্দ্রীয় ব্যাংক বা অন্য কোনো ব্যাংকের কাছে বিক্রি করার বাধ্যবাধকতা রয়েছে ব্যাংকগুলোর।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, ডলারের সরবরাহ সংকটে কিছু ব্যাংকও সীমার অতিরিক্ত মুদ্রা জমিয়ে রেখে অতিরিক্ত মুনাফা শুরু করে। সুযোগ থাকলেও তা বাজারে না ছেড়ে কৃত্রিমভাবে দর বাড়ানো হয়। আবার কয়েকটি ব্যাংক ডলার সংরক্ষণের তথ্যও গোপন করেছিল আগেরবার। আর এজন্য গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে বাংলাদেশ ব্যাংকের সঙ্গে পরামর্শ করে ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) এবং ব্যাংক নির্বাহীদের সংগঠন এবিবি ডলারের দর নির্ধারণ করে ব্যাংকগুলোকে জানিয়ে দিচ্ছে। সদস্য ব্যাংকগুলোকে প্রতিদিন সকালে ডলারের দরগুলো জানিয়ে দিচ্ছে বাফেদা।