রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

গরুর মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা


১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ২:০২ অপরাহ্ণ 

গরুর মাংসের উপকারিতা ও অপকারিতা
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

আমরা মাছে ভাতে বাঙালি হলেও স্বাদ এবং ভিন্নতার কারণে মাংস প্রায় সবার কাছেই খুব প্রিয় একটি খাবার। তাও আবার সেটা যদি হয় গরুর মাংস তাহলে তো কথাই নেই। তবে বেশ কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ চিহ্নিত হওয়ায় খাবারটি প্রিয় হলেও এড়িয়ে চলেন অনেকে। কিন্তু কখনো কখনো তাও সম্ভব হয়ে উঠে না,কেননা বিয়ে- শাদির দাওয়াতে কিংবা ঈদুল আযহার দিনে লোভ সামলে নেয়াটা কঠিন হয়ে পড়ে। আবার এটাও মনে রাখতে হবে যে গরুর মাংস অতিরিক্ত খেলে তা স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। তাই এই খাবারটি  গ্রহণ করার পূর্বে এর সুফল ও কুফলগুলো সম্পর্কে আমাদের জানা প্রয়োজন। তাহলে চলুন জেনে নেই গরুর মাংসের উপকারি ও ক্ষতিকর দিকগুলোঃ - প্রথমে উপকারি দিক গুলো তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

গরুর মাংসে রয়েছে শরীরের জন্য প্রয়োজনীয় নয়টি পুষ্টি উপাদান। আর সেগুলো হলোঃ প্রোটিন, জিঙ্ক, ভিটামিন বি১২, সেলেনিয়াম, আয়রন, রিবোফ্লেভিন, ফসফরাস, নায়াসিন এবং ভিটামিন বি৬। 

গরুর মাংস আমাদের শরীরের আমিষের চাহিদা পূরণ করে এবং অনেক উপকারী ভিটামিনের চাহিদা পূরণে সাহায্য করে। গরুর মাংস আমাদের বুদ্ধি-বৃত্তিক গঠন, শারীরিক বর্ধন ও রক্ত বর্ধনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। প্রতি ৮৫ গ্রাম গরুর মাংসে ৯-১৩ বছর বয়সী শিশুর দৈনিক চাহিদার ১২৫ শতাংশ ভিটামিন বি১২, ৯০ শতাংশ প্রোটিন, ৩২ শতাংশ আয়রন, ২৯ শতাংশ নায়াসিন, ৭৪ শতাংশ জিঙ্ক, ৪২ শতাংশ সেলেনিয়াম, ৩২ শতাংশ ভিটামিন বি৬, ২৩ শতাংশ রিবোফ্লেভিন এবং ১৬ শতাংশ ফসফরাস থাকে।

মাংস ছাড়াও হাড়, কলিজা, মগজ ইত্যাদি থেকে প্রোটিন পাওয়া যায়। এই প্রোটিন থেকে পাওয়া অ্যামাইনো এসিড কাজে লাগে হাড় ও মাংসপেশি ভালো রাখতে। প্রতি ১০০ গ্রাম গরুর মাংসে পাওয়া যায় ২২.৬ গ্রাম প্রোটিন। আমাদের সুস্থতার জন্য জিংক একটি জরুরি উপাদান। এটি আমাদের শরীরের কোষ ভালো রাখে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খেলে তা দৈনিক জিংকের ৩৯ শতাংশ পূরণ করে। তবে আপনাকে জানতে হবে দৈনিক কতোটুকু গরুর মাংস খেতে পারবেন? চর্বি ছাড়া রান্না করা ৮৫ গ্রাম গরুর মাংস খেলে তা আপনার দৈনিক ক্যালোরির চাহিদার ১০ শতাংশ পূরণ করবে। সাবধানতা! সপ্তাহে দুইদিনের বেশি গরুর মাংস না খাওয়াই ভালো।

এই পর্যায়ে গরুর মাংসের অপকারিতা বা ক্ষতিকর দিকগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করছি-

ভাল আর মন্দ এই নিয়েই আমাদের জীবন। তারপরও আমরা সকলেই ভাল থাকার চেষ্টা করি। গরুর মাংসে কোলেস্টেরল বেশি থাকে, শরীরে কোলেস্টেরেলের মাত্রা বেড়ে গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায়। তাই যাদের রক্তে কোলেস্টেরল বেশি, তাঁদের অতিরিক্ত গরুর মাংস খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত।

গরুর মাংসে প্রচুর সম্পৃক্ত চর্বি পাওয়া যায়, যা রক্তনালিতে জমে এথেরোসক্লেরসিস ঘটাতে পারে যা থেকে পরবর্তীকালে স্ট্রোক বা হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। গরুর মাংসের অতিরিক্ত সোডিয়াম শরীরের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টিতে বা বাড়াতে সোডিয়াম সাহায্য করে। তাই অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে উচ্চ রক্তচাপ , হৃদরোগ, স্ট্রোক বা কিডনি রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে। অতিরিক্ত গরুর মাংস খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ারও ঝুঁকি বাড়ে, এমনকি যা থেকে পরবর্তীকালে আরো অনেক রোগের ঝুঁকি বাড়তে পারে।

পরিশেষে এটাই বলব অতিরিক্ত স্বাস্থ্য ঝুকি বাড়ে এমন খাদ্যে সাবধানতা মেনে চলুন। সকলের জন্য চাই সুস্থ জীবন।