মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪
৩৮কোটি টাকা

নিলামে পিকে হালদারের কুমির খামার


১৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৮:১৬ অপরাহ্ণ 

নিলামে পিকে হালদারের কুমির খামার
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

পিকে হালদার নাম শুনলে যে কেউ খুব সহজে চিনতে পারেন। কেননা তিনি একজন আলোচিত ঋণ ক্যালেঙ্কারি। ৩৮ কোটি টাকা নিলামে  বিক্রি হয়ে যাচ্ছে পিকে হালদারের কুমিরের খামার। হাইকোর্টের অনুমোদন পেলে এই টাকা পরিশোধ করে খামারটি বুঝে নিতে চায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা উদ্দীপন। এদিকে, রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড নামে দেশে প্রথম প্রতিষ্ঠিত এই কুমির খামারের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম হক জানান, খামার বিক্রির টাকায় পরিশোধ করা হবে পিকে হালদারের ঋণ। এবিষয়ে গন মাধ্যমে দেয়া এক সাক্ষাতকারে তিনি বলেন, চলতি বছরের শুরুতে হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত পরিচালনা পর্ষদে তিনি ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পান। তখন এই কুমির খামারের মূল্য ধরা হয়েছিল মাত্র ৫কোটি টাকা। মাত্র ৮মাসের ব্যবধানে এই পরিচালনা পর্ষদের তত্ত্বাবধানে খামারটি এখন উন্নতির দিকে। দায়িত্ব নেয়ার পর কুমিরের খাবার যোগান দিতে অর্থ সংগ্রহের লক্ষ্যে এই খামারে টিকিটের বিনিময়ে দর্শনার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করা হয়। 

২০০৩ সালে ময়মনসিংহের ভালুকায় ১৩.৮ একর জমির ওপর দেশের প্রথম কুমির খামার চালু করেন উদ্যোক্তা মুশতাক আহমেদ। রেপটাইলস ফার্ম লিমিটেড নামে এই খামার প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিলো কুমিরের চামড়া রপ্তানি করা। ২০১৩ সালে মুশতাক আহমেদের কাছ থেকে খামারটি কিনে নেন আলোচিত ঋণ ক্যালেঙ্কারির হোতা পিকে হালদার ও তার সহযোগিরা। ২০১৪ সালে খামারটি কুমিরের চামড়া রপ্তানি শুরু করে। 

খামার সম্প্রসারণ করতে ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড থেকে ৫৭ কোটি টাকার বেশি ঋণ নেয় পিকে হালদার। জামানত হিসাবে ফার্মের জমি ব্যবহার করা হয়। ২০১৫ ও ২০১৬ সালে ফার্মের নামে ঋণ বাড়ানো হয়। ৪ কোটি ২৮ লাখ মূল্যের বন্ধকী 

জমির বিপরীতে এখন বকেয়া খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ১০৮ কোটি টাকা। ইন্টারন্যাশনাল লিজিং এর আবেদন বিবেচনা করে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় ৬ সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ গঠন করে 

খামারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এনাম হক আরো জানান, খেলাপী ঋণ পরিশোধে নিলামে তোলা হয় খামারটি। সর্বোচ্চ দাম উঠে ৩৮কোটি টাকা। খামারটি কিনতে আগ্রহী উদ্দীপন নামক একটি বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা। হাইকোর্টের নির্দেশে এবিষয়ে চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে বলে জানান তিনি।  

খামারটির ব্যবস্থাপক ডা. আবু সাইম মোহাম্মদ আরিফ জানান, ২০১৪ সাল থেকে এপর্যন্ত ১হাজার ৫০৭টি কুমিরের চামড়া জাপানে রপ্তানি করা হয়েছে। প্রতিটি কুমিরের চামড়ার আন্তর্জাতিক বিক্রয় মূল্য ৫শ থেকে ৬শ ডলার।

২০০৪ সালে মালয়েশিয়া থেকে আমদানি করা ৭৫টি কুমির নিয়ে যাত্রা শুরুর পর দুই দশকের ব্যবধানে খামারটিতে কুমিরের সংখ্যা এখন ৩হাজার ৭শ। 

ব্যাগ, বেল্ট, জুতা তৈরিতে কুমিরের চামড়া ব্যবহার করা হয়। এর দাতে তৈরি হয় গয়না, হাড় থেকে সুগন্ধি। কুমিরের পেটের দিকের চামড়া প্রতি সেন্টিমিটারের দামে ১৫ ডলার। কেজি প্রতি মাংস ৪০ থেকে ৫০ ডলারে বিদেশে রপ্তানি ও বিক্রি হয়। বন বিভাগের অনুমোদন পেলে খুব শীঘ্রই কুমিরের চামড়ার পাশাপাশি মাংস, হাড়, দাঁত বিদেশে রপ্তানির মাধ্যমে অতিরিক্ত বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করা হবে।