রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

কলার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন


আমরা কেন নিয়মিত কলা খাব

১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৭:১৯ অপরাহ্ণ 

কলার উপকারিতা ও পুষ্টি গুন
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

সারা বছর পাওয়া যায় বলে কেউ কেউ কলা'কে বারোমাসি ফল বলে থাকে। আর কলা খান না বা চিনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। বাংলাদেশের সর্বত্র কলা পাওয়া যায়। এটি কাঁচা ও পাকা দু’ভাবেই খাওয়া যায়। কাঁচা কলা রান্না করে খাওয়া শরীরের জন্য খুবই উপকারী। কাঁচা কলা সবজি হিসেবেই পরিচিত। এটি সহজলভ্য একটি সবজি। বার মাসই কম বেশি বাজারে পাওয়া যায়। তাছাড়া দুধভাতে পাকা কলা খাওয়ার প্রচলন এদেশে বহু পুরনো। কলা একটি সুস্বাদু ও পুষ্টিকর ফল। ক্যালরির চাহিদা মেটাতে সবচেয়ে সহজলভ্য ফল কলা। মানব দেহের ক্ষয়পূরণ, পুষ্টিসাধন এবং দেহকে সুস্থ-সবল রাখার জন্য যেসব পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তার প্রায় সবগুলোই কলায় রয়েছে। কলায় আছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা, ভিটামিন এ, বি, সি, ক্যালসিয়াম এবং লৌহ ও পর্যাপ্ত খাদ্যশক্তি। অন্যান্য ফলের তুলনায় কলা দামেও কিছুটা সস্তা। যে কারণে এই ফলের চাহিদাও খুব বেশি। স্বাদ ও সুগন্ধের দিক থেকে শ্রেষ্ঠ হওয়ায় কলাকে ফলের রানী বলা হয়।

আমরা পাকা কলা খেতে পছন্দ করি কিন্তু অতিরিক্ত পাকা কলা খেতে চাই না। আপনি কি জানেন? অতিরিক্ত পাকা কলায় অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের পরিমাণ বেশি থাকে। আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই নিয়মিত খাদ্য তালিকায় কলা হতে পারে একটি আদর্শ খাবার। কিন্তু এত খাদ্য গুনে অতুলনীয় এই ফল আমাদের শরীরের আরও কি কি উপকার করে এবং কখন খেতে পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে বিশদ জানবো।

কলা রক্তের হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়তা করে। লৌহের ঘাটতি পূরণে কলার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই লৌহের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা ও অপুষ্টিতে আক্রান্ত মহিলাদের জন্য কলা হতে পারে দুঃসময়ের বন্ধু। কলাতে কোনো ক্ষতিকারক কোলেস্টেরল নেই। এছাড়াও গবেষকদের মতে, পাকস্থলীর দেয়ালকে এসিডের হাত থেকে রক্ষা করতে কলার অনেক ভূমিকা রয়েছে। পেশি গঠনেও কলার কার্যকর ভূমিকা রয়েছে। বিভিন্নভাবে কলা আমাদের রসনার স্বাদ মেটায়। তাই নিয়মিত পাকা কলা খান, আর সুস্থ ও সুন্দর থাকুন। কলা মানসিক চাপ কমায় এবং একই সাথে মানসিক কর্মদক্ষতাও বৃদ্ধি করে। এজন্য কলাকে বলা হয় মস্তিষ্কের খাবার। কলায় সোডিয়ামের পরিমাণ কম এবং পটাশিয়ামের পরিমাণ বেশি হওয়ায় এটি স্ট্রোক ও হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা কমায়। কলায় প্রচুর পরিমাণে ম্যাগনেসিয়াম থাকায় এটি মাথাব্যথার প্রাকৃতিক নিরাময় হিসেবে কাজ করে। তাই মনে রাখবেন এখন থেকে যে কোনো সময় মাথাব্যথা শুরু হতে চাইলেই চট করে একটি কলা খেয়ে ফেলুন। মানুষ কথায় বলে পেট ভালো তো দুনিয়া ভালু। তাই যে কেউ, পেট ঠান্ডা রাখতে কলা ও সাবু মেখে খেতে পারেন।

 সকালে কলা খেলে শরীরে শক্তি বৃদ্ধি হয়। তবে খালি পেটে কলা খাওয়া ঠিক নয়। আমাদের অনেকের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকতে পারে। আর এ জন্য শরীরে নানা সমস্যা দেখা দেয়। যাদের আলসারের মতো সমস্যা রয়েছে, যারা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন তাদের নিয়ম করে প্রতিদিন একটা কলা খাওয়া উচিত। শরীরের এনার্জি বাড়াতে কলার জুড়ি নেই। তাই খুব বেশি ওজন কমে গেলে বা শরীর দূর্বল হয়ে পড়লে চিকিৎসকরা কলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। শরীরের প্রয়োজন বুঝে কিছু ক্ষেত্রে কলা যেমন অত্যন্ত উপকারী, তেমনই কিছু ক্ষেত্রে কলা এড়িয়ে যাওয়াই ভাল। তবে ভারী খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে কলা না খাওয়াই ভাল। খাবার খাওয়ার  অন্তত এক থেকে দেড় ঘণ্টা পরে কলা খাবেন। কলায় প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। এজন্য সময়ের ব্যবধানে খেলে ফাইবার সহজেই শরীর গ্রহণ করতে পারবে।  

আমরা আমাদের শিশুদের নিয়ে সবসময় চিন্তিত থাকি কেননা বাচ্চারা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঠিকমতো খেতে চায় না। ফলে ওদের দেহ গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদানের ঘাটতি দেখা দেয়। এক্ষেত্রে কলা কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে, এমনটাই বলেছেন বিশেষজ্ঞরা। কলায় রয়েছে বিভিন্ন ভিটামিন ও খনিজ উপাদান। তাছাড়া কলা সহজে হজমযোগ্য হওয়ায় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে তা কোনো ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করে না।

আমাদের অনেকের অ্যালার্জি সমস্যা আছে, হয়ত গলা চুলকাতে পারে, হাঁচি হতে পারে আবার চামড়ায় গোটা-গোটা হতে পারে, যাকে আমবাত বলা হয়। তবে এমন হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।