
তথ্য চাওয়ায় সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:১২ অপরাহ্ণ
রাজধানীর পল্লবী কালশী মোড় থেকে বয়ে যাওয়া লালমাটিয়া ষ্ট্যান্ডের সাথে সংযোগ সড়ক এখন মরণ ফাঁদে পরিনত হয়েছে। জনগুরুত্বপূর্ণ এই সড়কে এত বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ১২০ ফিট সড়ক গত পাঁচ বছর যাবৎ খুঁজে পাচ্ছেনা এলাকাবাসী। এবড়ো থেবড়ো আর খান খন্দকে ভরা ১০ ফিট রাস্তা দিয়েই চলাচল করতে হয় প্রতিদিন।
ব্যস্ততম এই সড়কটি সওজ এর অধীনে ১২০ ফিট তৈরি করা হলেও তা এখন ১০ ফিট রাখা হয়েছে যাতায়তের জন্য। বাকি জায়গা জুড়ে গড়ে তোলা হয়েছে বিশাল ট্রাক স্ট্যান্ড। স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন এই দখলবাজরা বড়ই দয়ালু! তারা দয়া করে সর্বসাধারণের চলাচলের জন্য এই ১০ ফিট রাস্তা রেখেছে সেটাই আমাদের বড় সৌভাগ্য। এই টুকু না রাখলেই বা কি করতো এলাকাবাসী?
আবার যে টুকু রাস্তা আছে সেটিও দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ভেঙ্গে গিয়ে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। কালশী ইসলামিয়া উচ্চ বিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্টানের শত শত শিক্ষার্থী কাঁদা পানিতে হাঁটার কারণে জামা কাপড় নষ্ট হওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন রোগেও আক্রান্ত হচ্ছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মানুষের যাতায়াতের একমাত্র সড়কটিতে বৃষ্টির কারনে পানি জমে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়ে দুর্ভোগ বেড়েছে। সড়কটি কাঁদা পানিতে সয়লাব হয়ে গেছে। এখন সড়ক দিয়ে হাঁটাও ভীষণ কষ্টকর। রাস্তাটির বিভিন্ন স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রায় বন্ধের পথে। মেরামত করার যেন কেউ নেই।
স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করে জানান, যুগের পর যুগ পেরিয়ে গেলেও এই রাস্তা সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি কেউ। নির্বাচন এলে ভোটের জন্য জনপ্রতিনিধিরা রাস্তা সংস্কারের প্রতিশ্রুতি দিলেও বাস্তব রূপ ভিন্ন। নির্বাচন চলে যায় জনপ্রতিনিধিরাও আসে যায়। অথচ রাস্তাটির কয়েকটি স্থানে ভেঙ্গে গিয়ে খালের পরিণত হয়েছে। স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা কেউ অসাধারণ মানুষের চলাচলের ব্যবস্থা করেনি। এই রাস্তার বিষয়ে সংসদ সদস্য ইলিয়াস উদ্দিন মোল্লা ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নু সহ আওয়ামী লীগের শীর্ষ পর্যায়ের নেতাদেরকে জানানো হলেও তারা কোনো গুরুত্ব দিচ্ছে না।
স্থানীয় বাসিন্দা মকবুল জানান, এই রাস্তা দিয়ে কোন যানবাহন চলে না। এইখানে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে বিভিন্ন স্থান থেকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা কাদামাটি পেরিয়ে বিদ্যালয় আসে। প্রায়ই দুর্ঘটনার শিকার হচ্ছে শিক্ষক শিক্ষার্থী সহ স্থানীয় বাসিন্দারা। বর্তমানে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে ওই রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী মানুষজন। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তার বেহাল দশা থাকলেও এখন পর্যন্ত সংস্কারের কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসী ও সড়ক ব্যবহারকারীরা দ্রুত সড়ক মেরামত করে যানচলাচলের উপযোগী করে তোলার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। নাম প্রকাশ্যে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক আওয়ামী নেতা বলেন এলাকার কিছু নেতা আর ট্রাফিক বিভাগের মাসোহারা নিশ্চিত করে চলে এই স্ট্যান্ডটি।
বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মানব দেহ যেমন ক্ষয় হতে শুরু করে, তেমনি এ সড়কে একবার কোনো যানবাহন চলাচল করলে তার ঠিকানা হয় ওয়ার্কশপে। বিশেষ করে বর্ষার ৬ মাস এ পথে চলাচলকারী চালকরা এমনটাই মনে করেন। দুর্ভোগের এ সড়ক যেন এলাকাবাসীর জন্য নরকের পথ। সংস্কারের অভাবে সড়কটি এখন মরণ ফাঁদে পরিণত হয়েছে। কোথাও পানি কোথাও বড় বড় গর্ত। প্রতিবছর এ এলাকার মানুষজন সড়কটি মেরামতের জন্য দাবি তুললেও টনক নড়েনি কোন জনপ্রতিনিধির।
অবৈধ ট্রাক ষ্ট্যান্ড উচ্ছেদ ও সড়ক সংস্কার বিষয়ে জানতে ডিএনসিসির ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর আব্দুর রউফ নান্নুর মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমি ক’দিন ডেঙ্গু নিধনে ব্যস্ত থাকবো” আপনি পড়ে ফোন দিয়েন।
ডিএনসিসির অঞ্চল-২ এর নির্বাহী কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান বলেন, সড়কের উপর অবৈধ ট্রাক ষ্ট্যান্ড থাকলে উচ্ছেদ হবে তবে উচ্ছেদ অভিযান আপাতত বন্ধ আছে।