খুকৃবিতে ভেটেরিনারি অনুষদের দ্বিতীয় ব্যাচের শিক্ষা সফর
রবিবার, ১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ৬:১৫ অপরাহ্ণ
বৈচিত্র্যময় এই পৃথিবীর নানান প্রান্তে মানুষের বসবাস আর চারপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে নানান প্রজাতির উদ্ভিদ বা গাছ । আমরা কি জানি? আমাদের বনাঞ্চলে বা চারপাশের বন জঙ্গলে কি কি ঔষধি গাছ রয়েছে। তুলসী এবং নিম গাছ,বলা যায় এই গাছ দুটি আমাদের পরিবেশের সাথে নিবিড় ভাবে জড়িয়ে আছে। আমাদের চারপাশে অনেক রকমের গাছ থাকলেও তুলসী এবং নিম গাছের ঔষধি গুনাগুণের কারণে গাছ দুটি বহুলাংশে পরিচিতি লাভ করেছে।
তাহলে জেনে নেয়া যাক তুলসী এবং নিম গাছের ঔষধি গুনাগুন সম্পর্কে। প্রথমে তুলসী গাছের গুনাগুন সম্পর্কে আমরা জানবো, তুলসী একটি ঔষধি গাছ। সর্দি, কাশি এবং হজম কারক বিভিন্ন অ্যান্টিসেপটিক হিসেবেও এটি কাজ করে থাকে। বিশেষ করে কফের প্রাধান্যে যেসব রোগ সৃষ্টি হয় সেসব নিরাময়ে এটি খুব ফলদায়ক। আসুন জেনে নিই,তুলসীর অতুলনীয় উপকারিতা সম্পর্কে। আমরা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খাবার নিয়ে তেমন কোন বাছ-বিচার করি না, ক্ষুধার্ত হলে যা ইচ্ছা তাই খেয়ে বসি। আর এর ফলে আমাদের পেটে নানান ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, এক্ষেত্রে পেট খারাপ হলে তুলসী গাছের ১০ থেকে ১২ টা পাতা ভালো করে ধৌত করে চিবিয়ে খেয়ে নেন ইনশাল্লাহ আপনার পেটের সমস্যা দূর হয়ে যাবে।
ঋতু পরিবর্তন কিংবা অতিরিক্ত ঠান্ডা গরমের ফলে আমাদের শরীরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়, যা স্বাভাবিক তাপমাত্রার চেয়ে বেশি হয়ে থাকে, আমরা তখন জ্বর অনুভব করি।
কিন্তু জ্বর হলে দুশ্চিন্তা না করে তুলসী পাতা, গোলমরিচ এবং মিসরি মিশিয়ে নিজে ট্যাবলেট তৈরি করুন আর তা ১ টা করে দৈনিক ৩ থেকে ৪ বার পানিতে মিশিয়ে খান, আপনি দ্রুত আরোগ্য লাভ করবেন।
শুকনো কাশি বা ঘন ঘন কাশির ফলে আপনি অস্বস্তি বোধ করছেন, তাহলে সেক্ষেত্রে তুলসী পাতা ও আদা একসঙ্গে পিষে ভালো মধু মিশিয়ে খান দ্রুত মুক্তি পাবেন। ভিটামিনের অভাবে আমাদের অনেকের মুখের ভিতর নানা ধরনের রোগ দেখা দেয় ফলশ্রুতিতে দাঁতের মাড়ি ফুলে গিয়ে কখনো কখনো তার থেকে রক্ত বের হয় এমন কি এ থেকে মুখে মারাত্মক দুর্গন্ধ সৃষ্টি হয়, যে কারণে পরিবার কিংবা বন্ধু মহলের সাথে সাবলীল ভাবে মিশতে বা কথা বলতে অনেকেই
আমরা ইতস্ত বা লজ্জা বোধ করি। তাই এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে দৈনিক ৪/৫ টা তুলসীর পাতা মুখে নিয়ে চিবাতে পারেন খুব সহজেই তা থেকে আরোগ্য লাভ করবেন।
বছরজুড়েই আমাদের কারো না কারো শরীরের চামড়ার উপর কিছু রোগ দেখা দেয় যা আমরা চর্মরোগ মনে করে থাকি, বিশেষ করে শীত মৌসুমে এ রোগের প্রাদুর্ভাব বেশি পরিলক্ষিত হয়। এক্ষেত্রে যা করবেন তা হলো তুলসী গাছের পাতা এবং সবুজ রঙের দুর্বা ঘাসের উপরের অংশ একসাথে পিষে লাগালে রোগ নিরাময় হয়। এছাড়াও হৃদরোগে আক্রান্ত, এমন কোন ব্যক্তি যদি তুলসী পাতার রস নিয়মিত পান করে তাহলে হৃদরোগের সমস্যাও দূর হয়।
নিম গাছ একটি অতিপরিচিত ঔষধি গাছ। বাংলাদেশে প্রায় সর্বত্র গাছটির দেখা মেলে। আমরা অনেকেই হয়ত জানিনা নিম গাছের পাতার রস আমাদের মানবদেহের কি কি উপকারে লাগে। তাহলে চলুন এই গাছের গুনাগুন সম্পর্কে জেনে নেই।
প্রথমেই বলব,নিম গাছের ডাল টুথব্রাশ হিসাবে ব্যবহারে মুখের রোগ জীবাণু ধ্বংস করে এবং দাঁতের উজ্জলতা বাড়ায়।
নিম গাছের পাতা সিদ্ধ করে সেই পানি দিয়ে গোসল করলে চর্মজনিত অনেক রোগ জীবানু ধ্বংস হয়।
পেটের বদ হজম বা খাবার গ্রহণে অরুচি এবং অ্যাসিডিটি দূরীকরণে নিমপাতার রস খুব কার্যকর।
শরীরের কুলেস্টরেলের মাত্রা এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেও নিম গাছের ঔষধিগুন বেশ ফলদায়ক। মাথার খুশকি এবং ত্বকের শুষ্কতা দূর করতেও নিম পাতার রস বেশ উপকারী।
গাছ আমাদের জীবন বাঁচায় এবং পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করে। তাই আসুন আমরা সকলেই গাছের পরিচর্যা করি।