জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) মুজিবুর রহমানের গ্রাফিতি মুছে ফেলা এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ব্যঙ্গচিত্র অঙ্কনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত বিচার দাবিতে আমরণ অনশনে বসা জাবি ছাত্রলীগের সহসভাপতি এনামুল হক এনাম অনশন এখনও ভাঙেননি। প্রতিবেদন লেখার সময়, ৪৮ ঘন্টা পার হয়ে গেলেও একই দাবিতে অনড় থেকে তিনি অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন।

গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটা থেকে তিনি অনশন শুরু করেন। অনশনে বসার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষকবৃন্দসহ শাখা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা তাকে বেশ কয়েকবার অনশন ভাঙার অনুরোধ করেছেন। তবে তিনি শাস্তি নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত নিজ দাবিতে অনড় থাকবেন বলে জানিয়েছেন।

এনামুল বলেন, 'প্রশাসনের পক্ষে বিশ্ববিদ্যালয়ের এসেছিলেন প্রক্টর আমাকে অনেকভাবে বুঝিয়েছেন। কিন্তু আমি স্পষ্ট বলে দিয়েছি ঘটনায় জড়িতদের বহিষ্কার না করা পর্যন্ত আমি উঠব না। মূল্য এই অপকর্মের বিচারের আগে জীবন এদিকে এনামুলের দাবির সঙ্গে সংহতি জানিয়ে গত বৃহস্পতিবার (১৫ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যা ৬টা থেকে অনশনে বসেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের উপ-শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম।

তিনি বলেন, 'ক্যাম্পাসে ধর্ষণ বিরোধী ছবি আঁকার জন্য অনেক জায়গা আছে। কিন্তু এটাকে কেন টার্গেট করা হলো? নতুন ব্যঙ্গচিত্র দেখলেই বোঝা যাবে, এটা যৌক্তিক কোনো চিত্র নয়।' এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর আসম ফিরোজ উল হাসান বলেন, 'আমরা এনামূলকে অনশন শেষ করা অব্দি অপেক্ষা করতে বলেছি। বিষয়টা তদন্তাধীন। কমিটিও দ্রুত তদন্ত শেষ করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।

কিন্তু এনামুল মানতে নারাজ, তার দাবি দ্রুততম সময়ে এই বিষয়ের সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এনামের দাবিগুলো হলো- বঙ্গবন্ধু ও প্রধানমন্ত্রী শেষ হাসিনাকে অবমাননাকারীদের অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা, বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় আইনে জড়িতদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করা, আট দিন পার হলেও জড়িতদের ব্যবস্থা গ্রহণে সংশ্লিষ্টদের উদাসীনতা বিষয়ে তদন্ত করা।

প্রসঙ্গত, গত ৭ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানবিকী অনুষদ ভবনের দেয়ালে পূর্বে আঁকা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি মুছে একটি গ্রাফিতি অঙ্কন করে ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের একাংশের নেতাকর্মীরা। সম্প্রতি ঘটে যাওয়া প্রতিবাদে এ গ্রাফিতি অঙ্কন করা হয়েছে বলে দাবি করেছেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা। গ্রাফিতিতে একটি নারীর অবয়ব, ছয়টি মাথার খুলিসহ একটি পতাকা আঁকা হয়। এর পাশেই লিখা হয় 'ধর্ষণ ও দ্বৈরাচার থেকে আজাদী'। 
এ ছাড়া গ্রাফিতির নিচে ছাত্র ইউনিয়নের নাম লিখা হয়। নারীর অবয়বের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং পূর্বের প্রতিকৃতি মুদ্ধে ফেলার মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে অবমাননা করা হয়েছে দাবি করে অনশনে বসেন শাখা ছাত্রলীগের সহ- সভাপতি এনামূল হক এনাম। তবে এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন থেকে গত ২৩ ফেব্রুয়ারি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি জানিয়েছেন তদন্ত চলমান রয়েছে।