
ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত
৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১:০৫ অপরাহ্ণ
গতকাল শুক্রবার (২রা ফেব্রুয়ারি) জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্যতম জনপ্রিয় সংঘ জেইউমুনার ক্ষমতা হস্তান্তর, নতুন সভাপতি গঠন এবং নবীনদের বরণ করে নেওয়ার জন্য অনুষ্ঠানসভার আয়োজন করা হয়।
২০১৫ সালে ৪০ তম আবর্তনের এক দল ছাত্রদের উদ্যোগে এবং ১২ জন শিক্ষকের সহায়তায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে গঠন করা হয় একটি নতুন ধরনের ক্লাব। এরই নাম জাহাঙ্গীরনগর ইউনিভার্সিটি মডেল ইউনাইটেড ন্যাশনস এসোসিয়েসশোন। খুবই অল্প সময়ে এই ক্লাবটি বিশ্ববিদ্যালয়য়ে বেশ জনপ্রিয়তা লাভ করে এবং দেশের বিভিন্ন এম ইউ এন কনফারেন্স এ নিজেদের খ্যাতি অর্জন করে।
এই সংঘটির মূল উদ্দেশ্য হল শিক্ষার্থীদের যোগাযোগ, লেখালেখি, উপস্থিত বক্তৃতা, দলীয় কাজ ও নেতৃত্ব প্রদান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারদর্শী হওয়ার সুযোগ করে দেওয়া যেন তারা ভবিষ্যতে যেকোনো কর্মক্ষেত্রের জন্য প্রস্তুত থাকে। Trust and Responsibility এই মুলমন্ত্র নিয়ে প্রায় ১ দশক ধরে এই জেইউমুনা গর্বের সাথে টিকে রয়েছে। দীর্ঘ ৯ বছরের এই যাত্রায় প্রতিবছরই ভোটের মাধ্যমে নতুন সভাপতি ও কার্যনির্বাহী সদস্য নির্বাচন করা হয়।
গতকাল শুক্রবার (২রা ফেব্রুয়ারি) সকাল ৯ টা থেকে রাত ৮ টা পর্যন্ত নতুন কলা ভবনের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে নবীন বরণ ও ক্ষমতা হস্তান্তরের এই অনুষ্ঠানটি সংঘটিত হয়। অনুষ্ঠানের প্রথম পর্বে উপস্থিত শিক্ষার্থীদের জন্য একটি ট্রেনিং সেশনের আয়োজন করা হয়, দ্বিতীয় পর্বে ভোট, তৃতীয় পর্বে অতিথিদের উপস্থিতিতে নবীন বরণ এবং সর্বশেষ পর্বে ভোটে বিজয়ী নতুনকার্যনির্বাহী সদস্য ও সভাপতির নাম ঘোষণা করা হয়।
সকাল ৯ টা থেকে ৩ টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত ৪৯ থেকে ৫১ আবর্তনের শিক্ষার্থীদের জন্য আয়োজিত সেশনে বক্তৃতা দেয় ৪০তম আবর্তনের সাবেক জেইউমুনার সদস্যরা। সাবেক সভাপতি শুভ্রানুল হক মাহির প্রথম বক্তা হিসেবে তার অভিজ্ঞতা, নবাগতদের কি কি করা উচিত ইত্যাদি বিষয়ে উপদেশ ও ভবিষ্যৎ নেতৃত্বদানকারীদের উদ্দেশে মূল্যবান কিছু কথা বয়ান করেন। এরপর সকলের উদ্দেশে বক্তব্য রাখেন সাবেক প্রেসিডেন্সিয়াল সদস্য সুজন বরাই। তার বক্তব্যতে তিনি জীবন ও ভবিষ্যৎ সংক্রান্ত বিভিন্ন উপদেশ দেন এবং একজন ভালো মানার হওয়ার গুণাবলি সম্পর্কে জানান। ১ টা ৩০ থেকে ২ টা ৩০ মিনিটে নামাজের ১ ঘণ্টার বিরতির পর বক্তব্য রাখেন ৪০ তম আবর্তনের সাবেক সদস্য আরবিন সানি, তিনি সকলকে এই নতুন পথচলার জন্য শুভকামনা জানান এবং সদস্যদের কোন কোন বিষয়ে আরও নজরদারি দেওয়া উচিত এ ব্যাপারে জানান। সবশেষে জেইউমুনার প্রতিষ্ঠাতা ও কাউন্সিল অব জাস্টিস এর সভাপতি মোহাম্মাদ রিয়াজুল করিম এই ক্লাবের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও সবাইকে আরও প্রাণপণে কাজ করার আহব্বান জানান। এছাড়াও তিনি ক্লাবের গঠন এবং তৎকালীন সময়ের কারযকালাপ সম্পর্কে সকলকে জানান।
৪০ তম আবর্তনের জেইউমুনার সাবেক সদস্যদের তত্ত্বাবধায়নে ৪ টার দিকে ভোটের কার্যক্রম শুরু হয়। ভোটের মননায়নে ছিলেন সাজিদ হাসান ফারহান, মোহাম্মাদ মুগ্ধ, সামিন ইয়াসার ও সারজিউল সিফাত। ৩য় বর্ষের এই ৪ জন শিক্ষার্থী দীর্ঘ সময় ধরে এই সংঘে কাজ করে গিয়েছেন এবং দেশের বিভিন্ন এমইউএন কনফারেন্সে সেরা প্রতিনিধির খ্যাতি অর্জন করেন। ভোট প্রক্রিয়ার জন্য সবাইকে কাগজ প্রদান করা হয়, নিজেদের অভিজ্ঞতা থেকে মনোনীত সদস্যদের ৬ টি বিষয়ে নাম্বার দেওয়ার জন্য । উপস্থিত ৪৮ থেকে ৫১ তম আবর্তনের সকলের ভোটের ৫০ নাম্বার এবং সাবেক সদস্যদের দেওয়া ৫০ নাম্বার, মোট ১০০ নাম্বারের ভিত্তিতে সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক, সাংগঠনিক সম্পাদক ও সহকারী সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়।
প্রায় ১ বছর নিজেদের সর্বস্ব দিয়ে কাজ করার জন্য ধন্যবাদ জানিয়ে নবীন বরণ অনুষ্ঠানের সূচনা করা হয়। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের লাউঞ্জ এ আয়োজনের প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জেইউমুনার উপদেষ্টা আব্দুল হামিদ কাফি এবং অধ্যাপক বশির আহমেদ। নবীনতম সদস্যদের পক্ষ থেকে আনিকা আহমেদ ও রায়হানুল হাসান সিফাত তাদের অভিজ্ঞতার কথা জানান। তাদের উদ্দেশে আর বক্তব্য রাখেন ৫০ ও ৪৮ তম আবর্তনের শিক্ষার্থীরা। অতিথি ও ৪০ তম আবর্তনের সাবেক সদস্যরাও নবীনদের অভিনন্দন ও পরামর্শ জানান।
৬ টায় ভোটের ফলাফল নিয়ে আসেন ৪৮ তম আবর্তনের সাবেক সভাপতি আম্লান আহমেদ প্রাচুর্য । প্রধান অথিতি আব্দুল হামিদ কাফি ও অধ্যাপক বশির আহমেদ ভোটের ফলাফলে বিজয়ী নতুন কার্যনির্বাহী সদস্য ও সভাপতির নাম ঘোষণা করেন। সহকারী সাধারণ সম্পাদক পদের নতুন মুখ সারজিউল সিফাত, সাংগঠনিক সম্পাদক সামিন ইয়াসার। ২য় সর্বচ্চ ভোটে সাধারণ সম্পাদক হন মোহাম্মাদ মুগ্ধ এবং সবচেয়ে বেশি ভোট পেয়ে নতুন সভাপতির দায়িত্ব লাভ করেন সাজিদ হাসান ফারহান। ফারহান বর্তমানে জারনালিজম ও মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের ৩য় বর্ষের ছাত্র।
সবশেষে ৪৮ তম আবর্তনের সাবেক সদস্যদের ফুল দিয়ে এবং ৫১ তম আবর্তনের সদস্যদের জন্য কেক কেটে ও বই উপহার দেওয়ার মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি টানা হয়।