বৃহস্পতিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

কমেছে নীলফামারী জেলা শহরের যানজট


২৫ জানুয়ারী ২০২৪, ৩:৫০ অপরাহ্ণ 

কমেছে নীলফামারী জেলা শহরের যানজট
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

উত্তরের শিল্প নগরী খ্যাত নীলফামারীর প্রবেশ পথের মূল সড়ককে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে জেলা শহর। মূল সড়ক ঘিরে স্কুল, কলেজ, মার্কেট ও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠায় প্রায়শই শহরের মধ্যে দেখা যায় যানজট। বিশেষ করে জেলা শহরের চৌরঙ্গী মোড়, আনন্দবাবুর পুল ও গাছবাড়ীতে সব সময় চোখে পড়ে যানজট। এতে করে ভোগান্তিতে পড়ে সাধারণ মানুষ। সম্প্রতি যানজট নিরসনে জেলা শহরের প্রধান প্রধান স্থানগুলোতে রোড ডিভাইডার বসিয়েছে ট্রাফিক বিভাগ।

জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম এর দিক নির্দেশনা মোতাবেক যানজট নিরসনে রোড ডিভাইডার স্থাপন কাজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) জ্যোতির্ময় রায়। এতে অনেকাংশে সহযোগীতা করেছেন সদর থানার অফিসার ইনচার্জ তানভীরুল ইসলাম। দীর্ঘদিন পর ট্রাফিক বিভাগের এই ভিন্নধর্মী উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছে পথচারী ও বিভিন্ন যানবাহনের চালকেরা। তাদের দাবি রোড ডিভাইডার স্থাপনের ফলে কমেছে যানজট ও দূর্ঘটনা।

মোটরসাইকেল চালক লেমন তালুকদার বলেন, ‘এই চৌরঙ্গী মোড় দিয়ে ডিসি অফিস, হাসপাতাল, থানা ও স্কুল-কলেজ যাতায়াত করে মানুষ। রাস্তার উপরে অটো-সিএনজি দাড় করে রাখার ফলে সব সময় যানজট দেখা যায় চৌরঙ্গী মোড়ে। কিন্তু গত কয়েকদিন থেকে দেখছি রোড ডিভাইডার বসানোর ফলে রাস্তায় যানজট তুলনামূলক কমেছে। নিয়মতান্ত্রিকভাবে দুই সাইড দিয়ে চলছে যানবাহন।’

বাস চালক আব্দুর রহমান বলেন, ‘দীর্ঘ দশ বছর থেকে নীলফামারীর এই রাস্তার উপর বাস চালাচ্ছি। এই রাস্তা বাস-ট্রাক, অটো, ব্যাটারি চালিত রিক্সাসহ সব ধরনের যানবাহন চলাচল করে। চৌরঙ্গী মোড় ও গাছবাড়ী এলাকায় যে যেভাবের পাড়ে গাড়ী থামাচ্ছে, কেউ আবার ভিন্নসাইড দিয়ে ওভারটেক করে গাড়ি এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে আমাদের মত বাস-ট্রাক চালকদের যানজটের মুখে পড়তে হয়। এখন এই দুই যায়গায় রোড ডিভাইডার দেওয়ায় দুই দিক দিয়েই অন্যান্য যানবাহনগুলো সারিবদ্ধভাবে যাচ্ছে।’

ট্রাক চালক আবু বক্কর সিদ্দিক বলেন, ‘নীলফামারীর আনন্দ বাবুর পুলটি দেখে মনে হবে এটি পুল নয়, এটি একটি অটো স্টান্ড। পুলের দুই সাইডে অটো দাড় করিয়ে রাখে যার কারণে যাওয়া আসা মুসকিল হয়ে যায়। রোড ডিভাইডার বসিয়ে যাওয়া-আসার জন্য দুই সাইড তৈরি এখন আর অটো গুলো দাড়িয়ে থাকতে পারে না। যার কারণে যানজট কমেছে। তবে পুলের উপর যাত্রীদের নামানো বন্ধ করলে যানজট আরও কমবে।’

তবে শহরের যানজট নিরসনে সরকারি মহিলা কলেজ, পৌর মার্কেট ও বড় বাজারে রোড ডিভাইডার বসানোর দাবি জানান চালকেরা। এসব যায়গাতে রোড ডিভাইডার বসানো হলে যানজট পুরোটা নিয়ন্ত্রনে আসবে বলেও মনে করেন তারা। এ বিষয়ে সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (শহর ও যানবাহন) জ্যোতির্ময় রায় বলেন,‘আমি যোগদানের পর থেকেই জেলা শহরের যানজট নিরসনে কি করা যেতে পারে সে বিষয়টি ভেবেছি। সে অনুযায়ী এসপি স্যারের সাথে আলোচনা  করে তার দেওয়া দিক নির্দেশনা মোতাবেক কাজ করেছি। স্যারের দিক-নির্দেশনায় কাজ করে এখন শহরের যানজট অনেকাংশেই কমে গেছে।’

জানতে চাইলে জেলা পুলিশ সুপার গোলাম সবুর পিপিএম বলেন, ‘আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি শহরের মধ্যে সুশৃঙ্খলভাবে যেন যানবাহন চলাচল করতে পারে। সে অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। তারই একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস শহরের প্রধান প্রধান স্থানগুলোতে রোড ডিভাইডার স্থাপন। এগুলো স্থাপন করার পর ওই যায়গাগুলোতে যানজট অনেকাংশেই কমে গেছে। এছাড়াও যানজট নিরসনে আমাদের আরও কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। আশা করছি সেগুলো বাস্তবায়ন হলে যানজটমুক্ত হবে নীলফামারী জেলা শহর।’