বুধবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২৫

১৮ বছরে যবিপ্রবি, কি ভাবছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা?


২৩ জানুয়ারী ২০২৪, ৫:৪২ অপরাহ্ণ 

১৮ বছরে যবিপ্রবি, কি ভাবছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা?
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

১৮ বছরে পদার্পন করতে যাচ্ছে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। শিক্ষা গবেষণায় ইতিমধ্যেই ঈর্ষণীয় ফলাফল করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। আগামী ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় দিবস পালন করতে যাচ্ছে যবিপ্রবি। কি ভাবছে যবিপ্রবির শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীগণ তা জানার চেষ্টা করেছেন আজকের প্রসঙ্গের ক্যাম্পাস প্রতিনিধি মেহেদী হাসান।

যবিপ্রবি জলবায়ু ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগের অধ্যাপক ড. মাহফুজুর রহমান বলেন, আধুনিক এবং স্মার্ট যবিপ্রবির পথে অনেক এগিয়েছে যবিপ্রবি। গুণগত মানসম্মত শিক্ষা গবেষণায় ইতিমধ্যেই অভূতপূর্ব উন্নতি করেছে যবিপ্রবি। গবেষণায় অনুদানের পরিমাণ আরও বাড়াতে হবে এবং সমস্যা নির্ভর গবেষণার উপর জোর দিতে হবে। ইন্ডাস্ট্রিয়াল কোলাবরেশনের প্রতি আরো জোর দিতে হবে। বেনাপোল স্থলবন্দরের পণ্যের পরীক্ষা এখন যবিপ্রবিতেই হচ্ছে যা দেশের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখছে। দেশের ক্রান্তিকালীন সময়ে যবিপ্রবি যেভাবে এগিয়ে এসেছিল ভবিষ্যতে যবিপ্রবির এই ধারা অব্যাহত থাকবে বলে আমি আশা করি। শিক্ষা এবং গবেষণায় আগামীতে যবিপ্রবি জাতীয় পর্যায়ের নেতৃত্ব দিবে সে কামনা করি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে অনুজীববিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. সেলিনা আক্তার বলেন,  যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় খুব অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণায় অভূতপূর্ব অগ্রগতি দেখিয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা ও গবেষণার বিষয়বস্তু এখন আরও গাঠনিক ও লক্ষ্য ভিত্তিক হতে হবে। সমস্যা তুলে ধরার মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সমস্যা সমাধানের জন্য ভাবতে হবে। ছাত্রছাত্রীদেরকে মনে রাখতে হবে, তারা তাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর ও গুরুত্বপূর্ণ সময় পার করে এই ক্যাম্পাসে, এই সময়টা সে কিভাবে ব্যয় করছে, সেটাই নির্ধারণ করে তার আগামী কেমন হবে। শিক্ষায় মনোনিবেশ করে নিজেকে আগামীর জন্য তৈরি করাই তাদের প্রধান কাজ। ক্যাম্পাসের প্রতিটি তরুণ প্রাণ বিকশিত হতে পারে, তেমন একটি পরিবেশ তৈরির প্রত্যাশা সকলের কাছে।

যবিপ্রবি শিক্ষার্থী মাহমুদ রানার মতে, প্রতিষ্ঠার পর থেকে দীর্ঘ সময় অতিক্রম করে আজ ১৮-তে পা রাখছে প্রাণের ক্যাম্পাস যবিপ্রবি।স্বায়ত্তশাসিত দেশসেরা এই বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের ঠিকানা নিশ্চিত করা আমার দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল। এখন আমি সেই স্বপ্নের একজন গর্বিত সদস্য। ভাবতেই একরাশ ভালোলাগা মনটাকে প্রফুলস্ন করে দেয়। একদিন এই বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা ও গবেষণার গুণগতমানের উপর ভর করে দেশসেরা বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিগণিত হবে এই আশায় বুকবাঁধি। গবেষণা-উদ্ভাবন এবং জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় যবিপ্রবি যেন তার স্বতন্ত্র অবদান রাখতে পারে- একবিংশ শতাব্দীর একজন সচেতন শিক্ষার্থী হিসেবে সেটাই আমার কাম্য। যবিপ্রবির উদর থেকেই জন্ম নিক আগামীর শ্রেষ্ঠ সন্তান- সেই প্রার্থনা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অপর এক শিক্ষার্থী রফিকুল ইসলাম মনে করেন, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় একটি স্বপ্ন, একটি আশা-ভরসার স্থল। নবীন বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর মধ্যে যবিপ্রবির সাফল্য ঈর্ষণীয়। অল্প সময়ের মধ্যে নিজেদের একটি জায়গা করে নিতে পেরেছে।  শিক্ষা- গবেষণা ও খেলাধুলায় যবিপ্রবির এ সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। শুভ জন্মদিন যবিপ্রবি।

১৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীকে কেন্দ্র করে শিক্ষার্থী শাহরিয়ার কবির বলেন, নবীন বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গবেষণা, সংস্কৃতি চর্চা ও খেলাধুলার ক্ষেত্রে অগ্রগামী আমাদের প্রিয় যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই ধারাবাহিক সফলতার সিড়ি পার করছে এই বিশ্ববিদ্যালয়টি এবং শিক্ষার্থীদের পছন্দের তালিকার উপরের দিকে থাকে যেটি আমাদের সলফলতা ইংগিত করে। আন্তর্জাতিক পর্যায়েও গবেষণা ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমের ক্ষেত্রেও ভালবাসার যবিপ্রবির মাইলফলক সৃষ্টি করছে। গবেষণা, সংস্কৃতি চর্চা ও সহশিক্ষামূলক কার্যক্রমে আরও বেশি অর্থায়ন করবে এটিই প্রত্যাশা। ভালবাসার ৩৫ একর একসময় বাংলাদেশসহ সমগ্র বিশ্বের জন্য রোল মডেল হিসেবে আবির্ভূত হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভাবন ও সাফল্যকে প্রধান্য দিয়ে শিক্ষার্থী তানজিম জানান, ৩৫ একরের ক্যাম্পাস যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়। ২০০৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়ে বর্তমান সময়ে শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। যবিপ্রবির মাননীয় উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন স্যারের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয় এগিয়ে যাচ্ছে। করোনাকালীন সময়ে বাংলাদেশে প্রথম বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে করোনা ভাইরাস শনাক্তকরণ এবং নতুন ভ্যারিয়েন্ট আবিষ্কার করে। অনেক শিক্ষার্থীদের কাছে যবিপ্রবির ছোট আয়তন নিয়ে আক্ষেপ থাকলেও গ্রামীণ পরিবেশ, সুবিশাল খেলার মাঠ মনে প্রশান্তির ছাপ ফেলে। সারাদিন ক্লাস, ল্যাব করে ক্লান্ত হয়ে অনেকের কাছে যবিপ্রবির জীবন প্যারাময় মনে হয় কিন্তু গ্রাজুয়েশন শেষ করে বিদায় বেলায় সকলেই যবিপ্রবি ক্যাম্পাসের শুন্যতা অনুভব করে। ৩৫ একরের এই ছোট্ট ক্যাম্পাস প্রতিটি শিক্ষার্থীর কাছে আবেগ, অনুভূতির আশ্রয়স্থল।