জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ গুণী শিক্ষক নির্বাচিত হলেন সুলতানা রাজিয়া
রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪
১৬ জানুয়ারী ২০২৪, ৪:৫১ অপরাহ্ণ
শরীয়তপুরের ডামুড্যা উপজেলার ধানকাটি ইউনিয়ন এক মধ্যবয়স্ক নারীকে গণধর্ষণের পরে হত্যা করা হয়েছে সেই মামলায় রায় ঘোষণা করে আদালত এতে( ৫ ) জন আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়।
শরীয়তপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. সোহেল আহমেদ এ রায় ঘোষণা করেন। আজ মঙ্গলবার (১৬ জানুয়ারি) দুপুর ২ ঘটিকায় এ রায় ঘোষণা করা হয়। এ সময় প্রত্যেক আসামিকে এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন নিজাম বালী (৪৫), মোহাম্মদ আলী (৩৫), ওমর ফারুক বেপারী (২৪), আল আমীন বেপারী (২০) ও ইব্রাহীম মোল্লা (২১)। এরা সবাই ডামুড্যা উপজেলার দক্ষিণ সুতলকাঠীর বাসিন্দা।
এই রায় ঘোষণা কালে ২ আসামি আদালতে উপস্থিত ছিলেন না জানা য়ায়।আদালতের নির্দেশে অনুযায়ী তাদেরকে জেলা কারাগারে হস্তান্তর করা হয়েছে । এখনো আরও ৩ জন আসামী পলাতক অবস্থায় রয়েছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ১৮ এপ্রিল বিকেল ৫:৩০ এর দিকে বাড়ি থেকে নিখোঁজ হন ডামুড্যা উপজেলার ধানকাঠি ইউনিয়নের ভূঁইয়া বাজার এলাকার ৫৫ বছর বয়সী নারী ফিরোজা বেগম। ২১ এপ্রিল বাড়ি থেকে দশ কিলোমিটার দূরে একটি পরিত্যক্ত ডোবা থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরের দিন ওই নারীর ছোট ভাই লাল মিয়া সরদার বাদী হয়ে ১৩ জনের নাম উল্লেখ করে এবং ২/৩ জন অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে শরীয়তপুর আদালতে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিদের মধ্যে পাঁচজন জড়িত থাকায় তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট গ্রহণ করে পুলিশ। বাকি আসামিদের চার্জশিট থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পরে ২৮ এপ্রিল ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে নিজাম বালীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
পরেরদিন ওমর ফারুক ও মোহাম্মদ আলীকে গ্রেপ্তার করা হয়। তারা ওই নারীকে পালাক্রমে ধর্ষণের পর হত্যা করার কথা আদালতের কাছে স্বীকার করেন। ওই তিনজন আদালতে হত্যায় জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। আর অন্য দুই আসামি ইব্রাহিম ও আল-আমীন পলাতক রয়েছেন। আর ওমর ফারুক জামিনে গিয়ে পলাতক রয়েছেন। এ ঘটনায় পরবর্তীকালে পুলিশ ওই পাঁচজনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। এরপর ২২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ মঙ্গলবার দুপুরে শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে এ হত্যা ও ধর্ষণ মামলার রায় ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে মামলার বাদী লাল মিয়া সরদার বলেন, আজকের এই রায়ে আমি সন্তুষ্ট, রায় যেন দ্রুত কার্যকর হয়।
নিহত ফিরোজা বেগমের ছেলে চিকিৎসক শাহ জালাল হাওলাদার বলেন, আমরা রায়ে খুশি হয়েছি। সরকারের কাছে দাবি, দ্রুত যেন এই রায় কার্যকর হয়।
শরীয়তপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের রাষ্ট্রপক্ষের কৌসুলি অ্যাডভোকেট সানাল মিয়া বলেন, এটি একটি ঐতিহাসিক রায়। এক নারীকে গণধর্ষণ ও নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে। এই মামলায় পাঁচজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। আমরা রাষ্ট্রপক্ষ এই রায়ে সন্তুষ্ট।
আসামিপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট নাসরিন আক্তার বলেন, আমি এ মামলার রায়ে অসন্তুষ্ট ও এটা একটি মিথ্যে মামলা। প্রথম যখন মামলা হয়েছিলো, তখন এটা সিএ মামলা ছিল।
সে মামলায় আসামি ছিল সব অন্য। আজকে যাদের আসামি করা হয়েছে, এদের ষড়যন্ত্র করে আসামি করা হয়েছে। আমরা আশা করেছিলাম আসামিরা খালাস পাবে কিন্তু আমাদের কাঙ্ক্ষিত রায় হয়নি। আমরা ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছি। আমরা উচ্চ আদালতে যাবো, আমরা আপিল করবো। আমরা আশা রাখি উচ্চ আদালত আসামিদের খালাস প্রদান করবেন।