বৃহস্পতিবার, ২৭ মার্চ, ২০২৫

মিরপুরে ভোটার উপস্থিতি স্বাভাবিক, চলছে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ


৭ জানুয়ারী ২০২৪, ২:৪৪ অপরাহ্ণ 

মিরপুরে ভোটার উপস্থিতি স্বাভাবিক, চলছে শান্তিপূর্ণ ভোটগ্রহণ
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

শান্তিপূর্ণভাবেই অনুষ্ঠিত হচ্ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি বাড়ছে। নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারছেন তারা। রোববার (৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া বড় কোনো সহিংসতার খবর পাওয়া যায়নি। রাস্তাঘাটে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে।

দুপুরের দিকে ভোটারদের সংখ্যা বাড়তে থাকে। ভোট দিতে পেরে তরুণদের মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা গেছে। নিজেদের নাগরিক অধিকার প্রয়োগ করতে বয়স্করাও ভোট দিতে আসছেন। এদিন সরেজমিন রাজধানীর বিভিন্ন ভোটকেন্দ্র ঘুরে এমন দৃশ্য দেখা গেছে।

বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি বিরোধী দল এবারের নির্বাচন বর্জনের ডাক দিয়েছে। ট্রেনে অগ্নিসংযোগ ও গণপরিবহনে নাশকতার মধ্য দিয়ে মানুষকে ভোটকেন্দ্রে আসতে নিরুৎসাহিত করার চেষ্টা করেছেন তারা।

কিন্তু ভোটকেন্দ্র ঘুরে দেখা গেছে, তাদের সেই চেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। রোববার সকাল ৮টায় ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোর ৫টার দিকে প্রিসাইডিং অফিসারদের কাছে ব্যালট পেপার আসে।

এই প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সারা দেশে ভোটে ৩৭টি স্থানে অনিয়ম ও গোলযোগের খবর পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এ ছাড়া জাল ভোটের অভিযোগে ৬ জনকে আটক করা হয়েছে।

রাজধানীর কিছু কিছু কেন্দ্রে সকাল থেকেই ভোটারদের উপস্থিতি দেখা গেছে। শান্তিপূর্ণভাবেই তারা ভোট দিচ্ছেন।
সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজধানীর মণিপুরিপাড়ার বাচা ইংলিশ মিডিয়াম স্কুল কেন্দ্রে ভোট দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। 
তিনি বলেন, বিএনপি আগেও অগ্নিসন্ত্রাস করেছে। তারা আবার তা শুরু করেছে। কিন্তু মানুষ অন্ধকারে ফিরে যেতে চায় না। এ দেশের মানুষ সুন্দরভাবে আজ ভোট দেবে।

সাংবাদিকদের তিনি বলেন, সন্ত্রাসকে মানুষ ধিক্কার দিচ্ছে। বিএনপি ষড়যন্ত্র করে বিদেশি প্রভুদের প্রভাবিত করার চেষ্টা সবসময়ই করে এসেছে। বিএনপি সুনিশ্চিত ছিল যে তারা নির্বাচনে জিততে পারবে না। তারা জনগণকে কোনোক্রমেই আকৃষ্ট করতে পারবে না। তাই বিএনপি নির্বাচনে আসেনি।

ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ঢাকায় যারা থাকেন, তারা একেক জায়গার ভোটার। ঢাকায় লোকজনের স্থানান্তর (মাইগ্রেশন) হয়। অবশ্য বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটার উপস্থিতি আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ তিনি।

ঢাকা-১৪ আসনের কেন্দ্র ওয়াক-আপ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রিসাইডিং অফিসার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান বলেন, ভোটার উপস্থিতি সকালে কম ছিল। এখন বাড়ছে।

মিরপুরে সরকারি হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে একটি মহিলা ভোটকেন্দ্রে ভোট শুরুর প্রথম ঘণ্টায় ব্যালট বাক্সে ভোট পড়েছে ৩০টি। এই কেন্দ্রের হিসাব অনুযায়ী ভোটার সংখ্যা ১ হাজার ৮৭৩টি।

ওই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানেরই আরেকটি মহিলা কেন্দ্রের মোট ভোটার ১ হাজার ৮৫২ জন এবং অপর দুটি পুরুষ ভোটকেন্দ্রের ভোটার যথাক্রমে যথাক্রমে ১ হাজার ৭৮৮ ও ১ হাজার ৮২০ জন। হোমিওপ্যাথিক মেডিকেল কলেজে চারটি কেন্দ্রের একটি মাত্র প্রবেশপথ থাকলেও সেখানে ভোটারের আসা-যাওয়ার ভিড় দেখা যায়নি।

সকাল সাড়ে ৮টায় ঢাকা-১৫ আসনের পূর্ব শেওড়াপাড়ার হাজী আশরাফ আলী হাই স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, সেখানে পুরুষ মহিলা মিলিয়ে ভোটকেন্দ্র আছে ৭টি। এই সাত কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৯৬৪ জন।

ঢাকা-১৪ আসনের কামাল আহমেদ মজুমদার স্কুল ও কলেজ কেন্দ্রে ঘুরে দেখা যায়, ভোটার উপস্থিতি স্বাভাবিক। কিছুক্ষণ পরপর একজন দুজন করে ভোট দিয়ে যাচ্ছেন। এই স্কুল ও কলেজের দুটি ভবনে দুটি কেন্দ্র। এখানে ভোটার প্রায় ৬ হাজার ৬ জন।

এদিন সকালে রাজধানীর হাবীব উল্লাহ বাহার কলেজ কেন্দ্রে নিজের ভোট দেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল। ভোট দিয়ে নির্বাচন ভবনে ফিরে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল পরিদর্শন করেন তিনি।

পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘ভোট গ্রহণ মাত্র শুরু হয়েছে। ভোটার উপস্থিতি আশা করি আরও বাড়বে। প্রতিটা সেন্টারে আমি খোঁজ নিয়েছি। ভোট হয়েছে অল্প অল্প করে। কোথাও ২৫টি, কোথাও ৪০টি।’

হরতাল ও সহিংসতার প্রভাব ভোটে পড়ার বিষয়ে সিইসি জানান, এটি তিনি বলতে পারছেন না। নির্বাচন কমিশন শুধু ভোটটা ম্যানেজ করছে। ভোটাররা কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাবেন, সে বিষয়ে তিনি কোনো মন্তব্য করবেন না।

আজ রবিবার (০৭ জানুয়ারি) সকাল ৮টায় জাতীয় সংসদের ২৯৯ আসনে ৪২ হাজার কেন্দ্রে একযোগে শুরু হওয়া ভোট বিরতিহীনভাবে চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এরপর শুরু হবে গণনা। বিএনপিসহ বিভিন্ন দল ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে দুই মাসের বেশি সময় ধরে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে। প্রায় দুই সপ্তাহ ধরে তারা ভোট দেয়া থেকে বিরত থাকার জন্য জনগণের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ করছে।

অবশ্য গতকাল শনিবার ও আজ রোববার ভোটের দিন হরতাল পালন করছে তারা। এর মধ্যে ট্রেনে, বাসে, ভোটকেন্দ্রে আগুন দেয়ার ঘটনা ঘটেছে। যে কারণে ভোটারদের এক ধরনের শঙ্কা নিয়েই ভোটকেন্দ্রে আসতে হচ্ছে।