খুকৃবিতে "জুলাই শহীদ স্মৃতি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট" উদ্বোধন
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
৪ জানুয়ারী ২০২৪, ৪:০৪ অপরাহ্ণ
জেলা প্রতিনিধি (মহেশখালী): কক্সবাজার-২ (মহেশখালী-কুতুবদিয়া) আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ আসনের মধ্যে প্রথম নৌকার টিকিট পান তিনি। তাও খোদ দলীয় সভানেত্রীর হাত থেকে। আওয়ামী লীগের জনসভায় মহেশখালীর মানুষের হাতে তাকে তুলে দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। স্বতন্ত্র হয়ে নির্বাচন করতে কোনো বাধা না থাকলেও এ আসনে তার বিরোধিতা করে প্রার্থী হননি দলীয় কেউ ।
তবে আওয়ামী লীগ থেকে বহিষ্কৃত নেতা শরীফ বাদশা বাদ সেধেছেন তার নির্বাচনী যাত্রায়। যেই চেয়ারের জন্য দল খুইয়েছেন যাবে নৌকার। সেই চেয়ার ছেড়ে আশেক উল্লাহ রফিকের সঙ্গে দৌড়ে শামিল হয়েছেন সংসদে বসতে। শুরুতে তার পথ খুব একটা সুগম না হলেও দিন দিন নির্বাচনী মাঠ জমাচ্ছেন পদত্যাগী উপজেলা চেয়ারম্যান। দিন দিন জনসমর্থন বাড়ছে তার। ফলে কঠিন হচ্ছে 'জয়ের পাড়ে' নৌকা ভেড়ানো। এভাবে চলতে থাকলে ভোটযুদ্ধের জয়ের পাড়ে শেষমেশ 'নোঙর' ফেলবেন নোঙর প্রতীকেরই প্রার্থী।
ভোটাররা বলছেন, দু'বারের এমপি আশেক উল্লাহ রফিককে প্রত্যাখ্যানের ফসল উঠছে বহিষ্কৃত এই আওয়ামী লীগ নেতার ঘরে। এমনকি নৌকার ভোটেও ভাগ্য খুলতে পারে তার।
ঢল নামছে শরীফ বাদশার পথসভায় মানুষের ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা করছেন। ঢল নামছে বিএনএমের প্রার্থী শরীফ বাদশার পথসভায়। দু'বারের ইউপি চেয়ারম্যান ও একবার উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হয়েছিলেন শরীফ বাদশা। এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়ার জন্য ছেড়ে দিয়েছেন উপজেলা চেয়ারম্যানের পদ। এরপর যোগ দেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে। পেয়ে যান দলের টিকিট।
যদিও কক্সবাজার-২ আসনের কুতুবদিয়া উপজেলায় জনসমর্থনে মহেশখালী উপজেলা থেকে পিছিয়ে রয়েছেন। তবু কুতুবদিয়ার ভোটারদের দ্বারে দ্বারে যাচ্ছেন তিনি। নিজের পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়ে যাচ্ছেন সেখানে। তবে উল্টো পরিস্থিতি মহেশখালী উপজেলায়। ২৩ ডিসেম্বর বড় মহেশখালী নতুনবাজারে নোঙর প্রতীকের পথসভায় হঠাৎ করেই সাধারণ মানুষের ঢল নামে। এরপর একই দৃশ্য দেখা যায় ২৭ ডিসেম্বর কালারমারছড়া মাঠে অনুষ্ঠিত পথসভায়। এখন সাধারণ মানুষের মাঝে কানাঘুষা চলছে নোঙরের এই জোয়ার ধরে রাখতে পারলে জয়ের স্বাদ নিতে কঠিন হয়ে এই প্রার্থী।
দৌড়ঝাপ ব্যস্ততা বেড়েছে আশেক উল্লাহ রফিকের নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে ততই দৌড়ঝাপ বেড়েছে নৌকার প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিকের। তার সঙ্গে মাঠে নামছেন নেতাকর্মীরা। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট সিরাজুল মোস্তফা,জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী সদস্য পৌর মেয়র আলহাজ্ব মকছুদ মিয়া সহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার বিভিন্ন এলাকায় পথসভা ও উঠান বৈঠক করছেন। স্বামীকে জিতিয়ে আনতে ভোটের মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন তার স্ত্রী শাহেদা আকতার রুমা। তিনিও মহিলা আওয়ামী লীগের নেত্রীদের নিয়ে।
আশেক উল্লাহ রফিক বলেন, দু'বারের সংসদ সদস্য থাকাকালীন মহেশখালী-কুতুবদিয়া নির্বাচনী এলাকার মানুষের স্বার্থে নানা ধরনের উন্নয়নকাজ করেছি। সেই উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে এবারও ভোটারদের কাছ থেকে নৌকা মার্কায় ভোট চাচ্ছি। ভোটাররাও উন্নয়নের মূল্যায়ন করে আমাকে নির্বাচিত করবেন।
নোঙর প্রতীকের শরীফ বাদশা বলেন, নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে সেটি জানার পরেই নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। গত দুইবার নির্বাচিত হওয়ার পরেও নৌকা প্রতীকের আশেক উল্লাহ রফিক নির্বাচনী এলাকায় মানুষের স্বার্থে কোনো উন্নয়নকাজ করেনি। এখানে যেসব প্রকল্পের কাজ হচ্ছে সব সরকার নিজেই করেছে। যেই নির্বাচিত হোক এসব প্রকল্পের কাজ চলমান থাকবে। কক্সবাজার-২ আসনের ভোটারদের ভোট দেয়ার সুযোগ করে দিতে এবং মানুষের জীবনমান উন্নয়নে কাজ করতেই তিনি নির্বাচনে অংশ নিয়ে ব্যাপক সাড়া পাচ্ছেন বলেও জানান
এ আসনে প্রার্থী যারা; বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আশেক উল্লাহ রফিক (নৌকা), বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের প্রার্থী শরীফ বাদশা (নোঙর), ইসলামী ঐক্যজোটের প্রার্থী মুহাম্মদ ইউনুছ (মিনার), ন্যাশনাল পিপলস পার্টির প্রার্থী মাহ- বুবুল আলম (আম), ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশের প্রার্থী মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান ( চেয়ার), বাংলাদেশ সুপ্রিম পার্টির প্রার্থী মো. খাইরুল আমিন (একতারা) প্রচার-প্রচারণায় যারা; কক্সবাজার-২ আসনে ৬ জন প্রার্থী নির্বাচনে অংশ নিলেও অর্ধেক প্রার্থী মাঠে অনুপস্থিত রয়েছে। আশেক উল্লাহ রফিক (নৌকা), শরীফ বাদশা (নোঙর) ও মুহাম্মদ ইউনুছের (মিনার) নির্বাচনী প্রচারণা মাঠে দেখা গেলেও কোনো ধরনের প্রচারণা দেখা যাচ্ছে না মাহাবুবুল আলম (আম), মোহাম্মদ জিয়াউর রহমান (চেয়ার), মো. খাইরুল আমিনের (একতারা)। তাই ভোটাররা মনে করছেন মাঠে যতই অন্যান্য প্রার্থীরা সরব থাকুক প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে নৌকা প্রতীকের সঙ্গে নোঙরের।