খুকৃবিতে "জুলাই শহীদ স্মৃতি শর্টপিচ ক্রিকেট টুর্নামেন্ট" উদ্বোধন
শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪
৩১ ডিসেম্বর ২০২৩, ৫:২৮ অপরাহ্ণ
শেরপুরে ২৫০ শয্যার হাসপাতালে চালু হয়েছে ১০ শয্যার ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ ব্যবস্থা। ফলে মুমূর্ষু রোগীদের চিকিৎসা সেবা পেতে আর ঢাকা-ময়মনসিংহ যেতে হবে না। নিজ জেলাতে এমন ব্যয়বহুল সেবা ফ্রিতে পেলে চিকিৎসা খাতে রোগীদের ব্যয় অনেকটাই কমে যাবে।
শুধুমাত্র শেরপুর নয়, পাশের জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার ৪ টি উপজেলার রোগীদেরও এ সেবা দেয়ার আশ্বাস হাসপাতাল পরিচালকের।
ভারতের মেঘালয় রাজ্যে ঘেঁষা সীমান্তবর্তী জেলা শেরপুর। এ জেলার জনসংখ্যা প্রায় ১৭ লাখ। এ ১৭ লাখ মানুষের স্বাস্থসেবার একমাত্র ভরসা ২৫০ শয্যা শেরপুর জেলা হাসপাতাল। একটা সময় গুরুতর অসুস্থ রোগীদের নিয়ে স্বজনদের দৌড়াতে হয় ঢাকা বা ময়মনিসংহ মেডিকেল কলেজের উদ্দেশ্যে। কখনও রোগী হাসপাতাল পর্যন্ত পৌঁছাতে পারতেন আবার কখনও পথেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করতেন। কিন্তু বর্তমানে বদলে গেছে শেরপুর জেলা হাসপাতালের সেই চিত্র। এখন যে কোন সঙ্কটাপন্ন রোগী এই হাসপাতালেই পাবেন নিবিড় পরিচর্যায় চিকিৎসা সেবা।
মাত্র কয়েক বছর আগেই ১শ’ শয্যার হাসপাতালটি নতুন ৯তলা ভবনে আড়াইশ’ শয্যায় উন্নীত হওয়ায় চিকিৎসা সেবা পাচ্ছেন আগের চেয়ে কয়েকগুন বেশী রোগী। সম্প্রতি হাসপাতালটিতে ১০ শয্যার ইনসেনটিভ কেয়ার ইউনিট বা আইসিইউ এবং ১০ শয্যার আইসোলেশন ওয়ার্ড উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। নিজ জেলাতে বিনা পয়সায় এমন উন্নত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যাবে, তাই উচ্ছ্বসিত এখানকার মানুষ।
শ্রীবরদী উপজেলা থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা লাইলী বেগম বলেন, হুনতাচি (শুনতেছি) ইনু (এখানে) বলে শ্বাস দেওনের জন্য (মুমূর্ষু রোগী) ব্যবস্থা করছে, এইডা (এটা) আমগর (আমাদের) জন্য খুব বালা (ভালো) হয়ছে।
চরশেরপুর এলাকার বাসিন্দা রমজান আলী বলেন, এ হাসপাতালে আইসিইউ হওয়াতে আমাদের খুব ভালো হয়েছে। কারণ, আগে মুমূর্ষু রোগীকে নিয়ে ঢাকায় যেতে হতো, এতে খরচ ও সময় ব্যয় হতো, আবার অনেক সময় রোগীও মারা যাইতো। কিন্তু এখন এই হাসপাতালে চালু হওয়াতে খুব ভালো হয়েছে আমাদের।
নালিতাবাড়ী থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে আসা মজনু মিয়া বলেন, আগেতো গুরুতর অসুস্থ হলে রোগীদের নিয়ে হতে ঢাকা বা ময়মনিসংহ যাইতে হইতো। এখন আর যাওয়া লাগবে না, সহজেই এই হাসপাতালে সরকারিভাবে আমরা চিকিৎসা করাতে পারবো। আমরা সরকারকে ধন্যবাদ জানাই, শেরপুরে এই সিস্টেমটা চালু করা জন্য।
২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালের পরিচালক ডা. মো. জসিম উদ্দিন বলেন, শুধুমাত্র শেরপুর নয়, পাশের জামালপুর ও কুড়িগ্রাম জেলার ৪ টি উপজেলার রোগীরাও এ সেবা পাবেন ফলে আর্থিকভাবে তারা উপকৃত হবেন। ইতোমধ্যে সব ধরনের বিছানা ও যন্ত্রপাতি আমাদের এখানে আনা হয়েছে। ডাক্তারও এসেছে কয়েকজন। তবে, আমাদের আরো ডাক্তার প্রয়োজন।
জেলা সিভিল সার্জন অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট শেরপুর জেলা সদর হাসপাতালে ১০ শয্যার আইসিইউ এবং ১০ শয্যার আইসোলেশন ইউনিট নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৭ কোটি ২৪ লাখ টাকা। এত টাকা ব্যয় হলেও সাধারণ মানুষ সরকারের দেয়া এই সুবিধা পাবেন সরকারিভাবে। এটা অবশ্যই শেরপুরের জন্য ভালো। কারণ, আগেতো ময়মনসিংহ কিংবা ঢাকাতে যেতে হতো, এখন সেই কষ্ট ও খরচ থেকে বাঁচবে সাধারণ মানুষ।