বাগেরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় অপর ট্রাকের হেলপার নিহত
বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
২৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১১:০১ পূর্বাহ্ণ
আমরা যারা প্রতিদিন মোটরযান ড্রাইভিং করি তাদের জন্য ড্রাইভিং লাইসেন্স একটি গুরুত্তপূর্ন বিষয়। একজন আদর্শ চালকের গাড়ি চালানোর পূর্ব শর্ত হলো অবশ্যই তার বৈধ ড্রাইভিং লাইসেন্স থাকতে হবে।
বাংলাদেশ সরকারের নতুন সড়ক পরিবহন আইন অনুযায়ী কর্তৃপক্ষ ব্যতীত ড্রাইভিং লাইসেন্স প্রস্তুত, প্রদান বা নবায়নে বিধি-নিষেধ সংক্রান্ত ধারা ১০ এর বিধান অনুয়াযী উক্ত ব্যক্তির অনধিক ০২ বছর জেল নূন্যতম ১ লক্ষ্য টাকা জরিমানা অথবা উভয় দন্ডে দন্ডিত হতে পারে। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স এর মেয়াদ ১০ বছর অর্থ্যাৎ মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্বে আপনাকে অনলাইনে রিনিউ/নবায়ন এর জন্য আবেদন করতে হবে।
তবে বর্তমানে আপনার ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করার জন্য আপনাকে আর বিআরটিএ গিয়ে কোন কাগজপত্র জমা দিতে হবে না এবং ফিঙ্গার প্রিন্টও করতে হবেনা। অনলাইনে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন করলে আপনাকে আর বিআরটিএ তে গিয়ে স্মার্ট ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে হবে না। আনলাইনে প্রদত্ত ঠিকানা অনুযায়ী ডাকযোগে বিআরটিএ আপনার ঘরে স্মাট কার্ড পৌঁছে দিবে। এতে ঝামেলা যেমন কমেছে তেমন কমেছে সময়ের অপচয়। আসুন অনলাইনে নবায়ন আবেদন প্রক্রিয়াটি আপনি ঘরে বসে কিভাবে করবেন সেটা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো।
অনলাইন আবেদন প্রক্রিয়া
প্রথমে আপনাকে গুগলে গিয়ে বিআরটিএ লিখে সার্চ দিতে হবে। সেখানে অনেক গুলা অপসন আসবে সেখান থেকে আপনাকে বিআরটিএ সার্ভিস পোর্টাল এ ক্লিক করতে হবে। তারপর একটা পেজ আসবে ওখানে দুটি অপসন রয়েছে প্রবেশ করুন ও নিবন্ধন করুন। যদি আপনার পূর্বে পোর্টালে আইডি খোলা থাকে তাহলে ইউজার আইডি নাম্বার ও পাসওয়ার্ড দিয়ে সাবমিট দিলেই আপনি প্রবেশ করতে পারবেন।
আর যদি আইডি খোলা না থাকে, তাহলে আপনাকে পোর্টালে নিবন্ধন করে আইডি খুলতে হবে। পোর্টালে নিবন্ধন অপসনে ক্লিক করলে যে ০৩ টি অপসন আসবে তা হলো জন্ম তারিখ, ভোটার আইডি নাম্বার, মোবাইল নাম্বার। এ অপসন গুলো কমপ্লিট করার পর অনুসন্ধান অপসনে ক্লিক করলে আপনার প্রদত্ত মোবাইল নাম্বারে একটি ওটিপি আসবে। সেটি ওটিপি অপসনে বসিয়ে সাবমিট দিয়ে যাচাই করতে হবে। কোডটি সঠিক হলে মোবাইল নাম্বারে ভেরিফিকেশন সাকসেসফুল দেখাবে।
এরপর আপনার ই-মেইল নাম্বার দিতে হবে এবং পছন্দ মত পাসওয়ার্ড সেট করে নিতে হবে। প্রথমত পাসওয়ার্ড নির্বাচন ও পরে পাসওয়ার্ড নিশ্চিত করতে হবে। এরপর আপনার কাছে এমন একটা ইন্টারফেস ভেসে আসবে তা হলো একাউন্ট ক্রিয়েট সাকসেসফুল প্লিজ লগ ইন ইউর একাউন্ট বাই প্রোভাইড মোবাইল নাম্বার এন্ড পাসওয়ার্ড। এরপর মোবাইল নাম্বার এবং পাসওয়ার্ড দেওয়ার পর লগ ইন এ ক্লিক করলে আপনি আপনার প্রোফাইলে প্রবেশ করতে পারবেন।
প্রথমে, আপনাকে আপনার প্রোফাইল হালনাগাদ করতে হবে। সেজন্য আপনার ছবি এটার্চ করতে হবে। তারপর আপনার পিতা,মাতার নাম ইংলিশ এ টাইপ করতে হবে এবং ব্লাড গ্রূপ সংযুক্ত না থাকলে সেটা সংযুক্ত করতে হবে। মনে রাখবেন বিএসপি সার্ভিস পোর্টালে আপনি একবার নিবন্ধন করলে সেখান থেকে আপনি আপনার বিআরটিএ সংক্রান্ত সকল সেবা এখান থেকে নিতে পারবেন।
প্রোফাইল হালনাগাদ করার পর পোর্টাল এর বাম পাশে ড্রাইভিং লাইসেন্স অপসন এ ক্লিক করতে হবে। অনেকগুলা অপসন আসবে সেখান থেকে আপনার যে অপসনটি প্রয়োজন সেটা ক্লিক করে আপনি আপনার কাঙ্খিত সেবাটি নিতে পারবেন। আমাদের প্রয়োজন হল ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন অপেশাদার সে অপসনটিতে ক্লিক করতে হবে। অপসনটিতে ক্লিক করলে সেখানে আপনার পূর্বের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর উল্টো পাশে যে রেফারেন্স নাম্বারটা আছে সেটা দিতে হবে। রেফারেন্স নাম্বার দিয়ে অনুসন্ধান অফসনটিকে ক্লিক করলে ড্রাইভিং লাইসেন্স নবায়ন এর জন্য অনলাইন ফরমটি চলে আসবে। ফরমটিতে সেকশন-এ এবং সেকশন-বি দুটি অফসন থাকবে।
সেকশন-এ তে আপনার কি করনীয়?
এখানে আপনার পূর্ববর্তী লাইসেন্স এর নাম্বারটি প্রর্দশন করবে এবং সব তথ্য চলে আসবে। এরপর এখানে আপনার কিছু তথ্য পূরন করতে হবে যেমন আপনার পেশা কি? শিক্ষাগত যোগ্যতা কি? সেটা সিলেক্ট করে নিতে হবে।
আমারা ইতিমধ্যে জানি, ড্রাইভিং লাইসেন্স এর জন্য নূন্যতম শিক্ষাগত যোগ্যতা জেএসসি/অষ্টম শ্রেনী পাশ হতে হবে। আর এখানে কোন কিছু তথ্য পূরন করতে হবে না কারন আপনার পূর্বের লাইসেন্স এ যা ছিল তাই থাকবে।
সেকশন-বি তে আপনার কি করনীয়?
সেকশন বি তে আপনার প্রথমে কিছু ডকুমেন্ট অনলাইনে সংযুক্তি করতে হবে। যেমন আপনার ভোটার আইডি কার্ড এর কপি সংযুক্ত ও বিদ্যমান ড্রাইভিং লাইসেন্স এর স্ক্যান কপি (উভয় পাশ নিতে হবে এবং ফাইল এর সাইজ সর্বোচ্চ ৬০০ কেবি হতে হবে)। এরপর স্মার্টকার্ড ডাকযোগে প্রাপ্তির জন্য যে অফসনটি আসবে সেটা ফিলাপ করতে হবে।
এখানে বর্তমান/স্থায়ী যে ঠিকানায় নিতে চান সেটাতে নিতে পারবেন। যে ঠিকানায় নিতে চান সেটাতে ক্লিক করতে হবে। আর যদি অন্য ঠিকানায় নিতে চান তাহলে আদারস অফসনটি তে ক্লিক করে তথ্য দিতে হবে। সেখানে আপনার স্মার্ট কার্ড প্রাপ্তির ঠিকানা, হোল্ডিং নাম্বার, গ্রাম /পাড়া মহল্লা , মোবাইল নাম্বার, থানা , জেলা ও পোস্ট কোড উল্লেখ্য করতে হবে। এরপর সংরক্ষন অপসনে ক্লিক করার পরড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ এপ্লিকেশন সিভি সাকসেসফুল পেজটি চলে আসবে।
সেখানে আপনার বিস্তারিত তথ্য সমূহ চলে আসবে। এরপর আমরা নিচে স্কল করে অনলাইন ফি জমা অপসনে ক্লিক করতে হবে। এরপর এমন একটা পেজ আসবে সেখানে গিয়ে আপনি সরাসরি ফি জমা দিতে পারবেন। অপেশাদার ড্রাইভিং লাইসেন্স রিনিউ ফি সমূহ হলো, মূল ফি বাবদ- ৩০০০ টাকা, কার্ড ফি- ৬১০ টাকা,ভ্যাট বাবদ- ৫৪২ টাকা এবং সাথে ড্রাইভিং লাইসেন্স ডেলিভারী ফি বাবদ- ৬০। মোট – ৪২১২ টাকা অনলাইনে জমা দিতে হবে। তবে কারও যদি মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়ে পার হয়ে যায় তাহলে তাকে জরিমানা দিতে হবে। জরিমানা ১ দিন পার হলে ১ বছরের ফি ৫১৮/- টাকা অতিরিক্ত দিতে হবে।
সেক্ষেত্রে লাইসেন্স নবায়ন ফি জমা দেয়ার সময় জরিমানার ফি অটোমেটিক ভাবে চলে আসবে, তখন জমা দিয়ে দিবেন। এই ফি টা আপনি অনলাইন এ বিকাশ, নগদ, রকেট, এবং ব্যাংক ডেবিট/ক্রেডিট, ভিসা ও মাস্টার কার্ডের মাধ্যমে জমা দিতে পারবেন। এরপর যেটার মাধ্যমে পেমেন্ট করতে চান সেটা সিলেক্ট করে তার নাম্বার যেমন, বিকাশ হলে তার নাম্বার দিতে হবে দেওয়ার পর সে নাম্বার এ ওটিপি যাবে সেটা দিয়ে সাবমিট অপশনে ক্লিক করতে হবে। এরপর পিন নাম্বার দিলে আপনার ফি জমা হয়ে যাবে।
এরপর আপনি আপনার পোর্টাল গিয়ে মানি রিসিভ টি দেখতে পারবেন। তারপর ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যে আপনাকে একটি ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্স দেওয়া হবে আর ই-পেপার ড্রাইভিং লাইসেন্সটি রেডি হলে আপনার মোবাইলে এসএমএস এর মাধ্যমে জানিয়ে দেওয়া হবে।
ই-ড্রাইভিং লাইসেন্সটি আপনি আপনার বিএসপি পোর্টাল থেকে ডাউনলোড করে নিতে পারবেন। যতদিন না আপনার স্মার্ট কার্ড টি প্রিন্ট ডেলিভারি না হয় তত দিন আপনি ই-পেপার লাইসেন্স দিয়ে গাড়ি ড্রাইভ করতে পারবেন। এরপর ১ থেকে ২ মাসের মধ্যে আপনার স্মার্ট কার্ডটি প্রিন্ট হলে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ আপনার দেওয়া প্রদত্ত ঠিকানায় ডাকযোগে বাসায় পেীচ্ছে দিবেন।
সর্বপরি ”বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট অথরিটি” সকল সেবা - বিআরটিএ সেবা বাতায়ন এ পাবেন।