রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

নির্বাচন থেকে ছিটকে গেলেন সাদিক আবদুল্লাহ


১৯ ডিসেম্বর ২০২৩, ৫:১৬ অপরাহ্ণ 

নির্বাচন থেকে ছিটকে গেলেন সাদিক আবদুল্লাহ
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে এসে প্রার্থিতা ফিরে পেলেও বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন আটকে দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিমের চেম্বার আদালত। এ আদেশের ফলে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রাখায় আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে সাদিক আব্দুল্লাহর অংশ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত চেয়ে ওই আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী জাহিদ ফারুকের আবেদন শুনানির পর এ আদেশ দেন চেম্বার আদালত।

সাদিকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান। আর আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী আহসানুল করীম। যুক্তরাষ্ট্রে দ্বৈত নাগরিকত্ব ও হলফনামায় সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ এনে সাদিক আবদুল্লাহর মনোনয়ন বাতিল চেয়ে ইসিতে আপিল করেন জাহিদ ফারুক। সে আপিল মঞ্জুর করে তাঁর মনোনয়ন বাতিল করেছিল ইসি।

এ সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করলে গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সে রিট আবেদন শুনানির পর নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছিলেন হাইকোর্ট। নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে ফরিদপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী শামীম হকের প্রার্থিতা বাতিল করা হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করা হয়েছে। তাঁকে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিতে ইসিকে নির্দেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। হাইকোর্টের দেওয়া আদেশ স্থগিত চেয়ে আবেদন করলে আজ মঙ্গলবার শুনানির পর এ আদেশ দেন চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম।

ফরিদপুর-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী এ কে আজাদ ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী শামীম হক একে অপরের প্রার্থিতা বাতিল চেয়ে পাল্টাপাল্টি আপিল করেছিলেন ইসিতে। তাঁদের দুজনের বিরুদ্ধেই দ্বৈত নাগরিকত্বের অভিযোগ ছিল। শামীমের দাবি, আজাদ যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। আর আজাদের দাবি, শামীমের নাগরিকত্ব আছে নেদারল্যান্ডসে। ইসির ষষ্ঠ দিনের শুনানিতে গত ১৫ ডিসেম্বর এ কে আজাদের প্রার্থিতা টিকে গেলেও শামীম হকেরটা বাতিল করা হয়।

এরপর হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) সে রিট খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। চেম্বার আদালতে শামীম হকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। এ আইনজীবী বলেন, এ আদেশের ফলে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শামীম হকের অংশ নিতে কোনো বাধা থাকছে না।

অন্যদিকে দ্বৈত নাগরিকত্ব থাকার অভিযোগে মনোনয়ন বাতিল করা নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) বরিশাল-৪ আসনের শাম্মী আহমেদের রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে চেম্বার আদালেতে আবেদন করেছিলেন তিনি। আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম তাঁর আবেদনে সাড়া না দিয়ে নো অর্ডার দেন। ফলে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে শাম্মী আহমেদের আর অংশ নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছেন আইনজীবীরা।

চেম্বার আদালতে শাম্মী আহমেদের পক্ষে দাঁড়িয়েছিলেন আইনজীবী শাহ মঞ্জুরুল হক। সঙ্গে ছিলেন আইনজীবী এম হারুনুর রশীদ খান। নির্বাচন কমিশনের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী তৌহিদুল ইসলাম।

বরিশাল-৪ আসনে নৌকার প্রার্থী শাম্মী আহম্মেদের মনোনয়নপত্র বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। সেটি ফিরে পেতে আপিল করেছিলেন তিনি। পাশাপাশি তথ্য গোপনের অভিযোগে ওই আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী, আওয়ামী লীগের বর্তমান এমপি পঙ্কজ দেবনাথের প্রার্থিতা বাতিলের আবেদন করেন। গত ১৫ ডিসেম্বর আপিল শুনানিতে পঙ্কজের প্রার্থিতা টিকে গেলেও দ্বৈত নাগরিকত্বের কারণে শাম্মীর প্রার্থিতা বাতিলের সিদ্ধান্ত বহাল রাখে ইসি। এরপর তিনি ইসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেছিলেন।

ঋণখেলাপির অভিযোগে বাতিল হওয়া গাজীপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী তাজউদ্দীন আহমদের ভাগ্নে শিল্পপতি আলম আহমেদের মনোনয়নপত্র গ্রহণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে এ আদেশ দেন আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। এর ফলে আসন্ন দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আসনটিতে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য বঙ্গতাজ শহীদ তাজউদ্দীন কন্যা সিমিন হোসেন রিমির বিপক্ষে লড়বেন তিনি।

আদালতে আলমের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী প্রবীর নিয়োগী। ইসির পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার খান মোহাম্মদ শামীম আজিজ। মনোনয়ন বাতিল করা ইসির সিদ্ধান্ত বহাল রেখে গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) আলম আহমেদের রিট খারিজ করে দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।

ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন পাওয়া যশোর-৪ আসনের প্রার্থী এনামুল হকও প্রার্থিতা ফিরে পেয়েছেন। এনামুল হকের প্রার্থিতা বাতিল করা হয়েছিল ঋণখেলাপির অভিযোগে। পরে ইসির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। গতকাল সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) রিট আবেদনের শুনানির পর হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত বহাল রাখে। আজ মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) আপিল বিভাগে আবেদন করলে আপিল বিভাগ তাঁকে প্রার্থিতা ফিরিয়ে দেন।