রবিবার, ৬ অক্টোবর, ২০২৪

কিছুদিন বসবাস করলে যেসব দেশে নাগরিকত্ব মেলে


১৪ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ অপরাহ্ণ 

কিছুদিন বসবাস করলে যেসব দেশে নাগরিকত্ব মেলে
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

অনেকেই বিদেশে স্থায়ীভাবে বসবাসের স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু এই স্বপ্ন পূরণে অনেক কাঠ-খড় পোড়াতে হয়। কেননা, চাইলেই একটি দেশের নাগরিকত্ব পাওয়া যায় না। এজন্য বেশ কিছু নিয়ম-নীতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়। বিশ্বের এমন কিছু দেশ আছে যেগুলোয় কিছুদিন বসবাস করলে সহজেই নাগরিকত্বের সুযোগ মেলে। জানুন এসব দেশ সম্পর্কে।

মেক্সিকো :

যুক্তরাষ্ট্রের ২০১৭ সালের জনসংখ্যা বণ্টনের হিসেবের ওপর ভিত্তি করে মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট অভিবাসীদের একটি মানচিত্র তৈরি করেছে। সেই মানচিত্র অনুযায়ী মেক্সিকোতে মার্কিনি অভিবাসীদের সংখ্যা প্রায় ৮ লাখ ৯৯ হাজার।

ইউএস লাইব্রেরি অব কংগ্রেস অনুসারে, পাঁচ বছর মেক্সিকোতে থাকার পর অভিবাসীরা মেক্সিকোর নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করতে পারেন।

আবেদনকারী মেক্সিকান বংশোদ্ভূত হলে, তার কোনো মেক্সিকান সন্তান থাকলে, কিংবা মেক্সিকান স্ত্রীর সঙ্গে দুই বছর ধরে বিয়ে করে সংসার করলেও সহজে মেক্সিকান নাগরিকত্ব লাভ হয়।

শুধু তাই নয় মেক্সিকোর সাংস্কৃতিক, ক্রীড়া, সামাজিক, বৈজ্ঞানিক কিংবা শৈল্পিক ক্ষেত্রে অবদান থাকলে দুই বছরও সংসার করার দরকার পড়ে না। সহজেই নাগরিকত্ব মেলে।

তবে এক্ষেত্রেও আবেদনকারীকে আবিশ্যিকভাবে স্প্যানিশ বলতে জানতে হবে। এছাড়াও মেক্সিকান ইতিহাস এবং সংস্কৃতির প্রতি সম্মান ও জ্ঞান থাকতে হবে। পাশাপাশি অন্য কোনও দেশের নাগরিকত্ব থাকলে তা ছেড়ে দিতে হবে।

কানাডা:

মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউট ম্যাপের হিসেব অনুযায়ী কানাডায় বসবাস করেন প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি মার্কিন বংশোদ্ভুত নাগরিক। শুধু মার্কিনিরাই নন কানাডায় বাংলাদেশিদের সংখ্যাটাও নেহাত মন্দ নয়।

কানাডা সরকারের তরফে নাগরিকত্ব গ্রহণের প্রস্তাবিত বিজ্ঞাপন প্রায়ই নজরে পড়ে। কানাডিয়ান নাগরিকত্বের জন্য কম করে পাঁচ বছরে সেখানে থাকতে হবে। তার মধ্যে টানা ১০৯৫ দিন থাকার প্রমাণপত্র দিয়ে আবেদন পত্রে স্বাক্ষর করতে হবে।

নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার আগে বিগত পাঁচ বছরের মধ্যে আয়কর সহ বার্ষিক তিনটি কর দাখিল করা বাধ্যতামূলক। এছাড়াও ইংরেজি এবং ফ্রেঞ্চ ভাষায় দক্ষতা, দেশের ইতিহাস, মূল্যবোধ, প্রতিষ্ঠান এবং অধিকার সম্পর্কে আবেদনকারীর জ্ঞান প্রদর্শনের জন্য একটি পরীক্ষা দিতে হবে।

আয়ারল্যান্ড :

মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের মানচিত্র অনুযায়ী প্রায় ৩৫০০০-এর বেশি মার্কিন বংশোদ্ভূত ব্যক্তি আয়ারল্যান্ডের বাসিন্দা। আইরিশ ঐতিহ্য সম্পর্কে গভীর সম্মান থাকলে নাগরিকত্ব লাভ করা সহজ হয়।

এছাড়াও বংশে কোনো আইরিশ ব্যক্তি থাকলেও সহজে আয়ারল্যান্ডের নাগরিকত্ব মেলে। যেমন মা, বাবা, দাদা-দাদি, নানা-নানিদের মধ্যে কেউ যদি আয়ারল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করে থাকেন তাহলে সহজেই সেখানকার নাগরিকত্ব লাভ করা যায়। আবার একটানা এক বছর কেউ যদি আয়ারল্যান্ডে বসবাস করেন তাহলেও সহজেই সেখানকার নাগরিক হতে পারবেন।

প্যারাগুয়ে:

প্যারাগুয়ের নাগরিকত্ব পেতে গেলে ব্যক্তিকে প্রাপ্তবয়স্ক হতে হবে, ন্যূনতম তিন বছর প্যারাগুয়েতে বসবাস করতে হবে, পেশার সূত্রে বাণিজ্য, বিজ্ঞান কিংবা শিল্পে ব্যক্তির অবদান থাকতে হবে, দেশে থাকাকালীন ব্যক্তির আচরণ এবং ব্যবহার ভালো রাখার রেকর্ড থাকতে হবে।

মাইগ্রেশন পলিসি ইনস্টিটিউটের মানচিত্র অনুসারে, প্যারাগুয়ের বেশিরভাগ অধিবাসীই ব্রাজিল এবং আর্জেন্টিনার বংশোদ্ভূত।

আর্মেনিয়া :

যে সময় পর্তুগিজ, ইংরেজ কিংবা ফরাসীরা ভারত মহাদেশে এসে উপনিবেশ শুরু করে সেই সময় আরেকটি জাতিও বাংলা দখলের চেষ্টা চালিয়েছিল। তারা ছিলেন আর্মেনিয়ান। অর্থাৎ আর্মেনিয়া দেশের নাগরিক। আর্মেনিয়ানদের নানা স্মৃতি আজও বাংলাদেশে স্বমহিমায় দাঁড়িয়ে আছে।

আর্মেনায়িনদের কিছু বংশধর আজও বাংলায় বর্তমান। সেই আর্মেনিয়া দেশের নাগরিকত্ব লাভ করতেও খুব বেশি কাঠখড় পোড়াতে হয় না। স্বাভাবিকভাবেই, মাত্র তিন বছর সেদেশে বসবাস করলেই আর্মেনিয়ার নাগরিক হওয়া যায়। এক্ষেত্রে প্রথমে আর্মেনিয়ান রেসিডেন্স পারমিট জোগাড় করতে হবে।

দেশের কোনো কাজে বিনিয়োগ করলেই এই পারমিট পাওয়া যায়। আর্মেনিয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও সেদেশের বসবাসের যোগ্যতা অর্জন করা যায়। তাছাড়া টানা তিনবছর তো থাকতেই হবে।