মঙ্গলবার, ৩ ডিসেম্বর, ২০২৪

মঞ্চনাটকে ফুটে উঠল ভাঙ্গনকবলিত রোমজায়পুরবাসীর কষ্ট, বেড়ীবাঁধের দাবি


২২ অক্টোবর ২০২৪, ৯:০৪ অপরাহ্ণ 

মঞ্চনাটকে ফুটে উঠল ভাঙ্গনকবলিত রোমজায়পুরবাসীর কষ্ট, বেড়ীবাঁধের দাবি
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

বাগেরহাটের মোংলা ঘষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলে বছর দুয়েক ধরে  ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারন করেছে। ভাঙ্গনে রামপাল উপজেলার পেড়িখালি ইউনিয়নের রোমজায়পুর গ্রামসহ কয়েকটি গ্রামের দুই কিলোমিটার জুড়ে নদীগর্ভে বিলীন হচ্ছে বসতবাড়ি, পাকা সড়ক, নানা স্থাপনাসহ চিংড়ি ঘের। অব্যাহত ভাঙনে ঝুঁকিতে রয়েছে বিস্তীর্ণ ফসলি জমি ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। ভাঙ্গন কবলিত রোমজায়পুর গ্রামবাসীর কষ্টের চিত্র মঞ্চনাটকের মাধ্যমে ফুটিয়ে তুলেছেন কিছু তরুণ-তরুণী। নাটকের মাধ্যমে তারা কষ্টের বিষয়টি মানুষকে জানানোর পাশাপাশি বেড়ীবাঁধের দাবি করেন।

মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) দুপুরে বাগেরহাট শহরের্ এসিলাহা মিলনায়তনে "নদীরতীরে, জীবনজ্বলে” শিরোনামে মানব উন্নয়ন সংস্থা ও এ্যাকশন এইডের সহযোগিতায় এই নাটক প্রদর্শন করা হয়। নাটক প্রদর্শণ শেষে টেকসই বেরিবাঁধের দাবিতে গনস্বাক্ষর গ্রহন করা হয়।

এসব কর্মসূচিতে প্রধান অতিথি ছিলেন পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী। বাঁধন মানব উন্নয়ন সংস্থার নির্বাহী পরিচালক  এএসএম মঞ্জুরুল হাসান মিলনের সভাপতিত্বে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন কৃষি সম্প্রসারন অধিদপ্তর বাগেরহাটের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক মোঃ ওমর ফারুক, মৎষ অধিদপ্তরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক রাজকুমার বিশ্বাস, পানি উন্নয়ন বোর্ড বাগেরহাটের উপ সহকারী প্রকৌশলী হোসনেয়ারা জামিল সুমানা, একশন এইড বাংলাদেশের ইন্সপাইরেটর সুইটি খানসহ রোমজায়পুরের গ্রামের তরুণ-তরুণীরা উপস্থিত ছিলেন।

তরুণ-তরুণীরা জানান, ঘষিয়াখালী চ্যানেলের তীরের ভাঙ্গনে রোমজায়পুর গ্রাম এখন বিলীন হওয়ার পথে। ইতোমধ্যে কয়েকশ একর জমি ও বেশিকিছু ঘর-বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে। এই গ্রামের বিপরীত পাশ দিয়ে একটি চর জেগেছে, চরটি মূলত এখন প্রভাবশালীদের দখলের রয়েছে। ওই চরটি খনন করে দিলে চ্যানেলের স্রোত ওই দিক দেয়ে গেলে এই গ্রামের ভাঙ্গন রোধ হওয়া সম্ভব। গ্রামটিকে রক্ষার জন্য অতিদ্রুত টেকসই বেড়ীবাঁধ নির্মানের দাবি জানান তারা।

রোমজায়পুর এলাকার বাসিন্দারা আরও বলেন, ভৌগলিক কারণে রামপাল উপজেলা লবনাক্ত এলাকা । এরপরেও চিংড়ি চাষের অযুহাতে প্রতি বছর হাজার হাজার হেক্টর কৃষি জমিতে লবন পানি প্রবেশ করানো হয়। যার ফলে অনাবাদি থাকে হাজার হাজার হেক্টর জমি। অপরিকল্পিতভাবে নদী ও খালে বাঁধ দেওয়া, প্লাবন ভূমি আটকে মাছ চাষ, রাস্তা ও বাঁধ কেটে পানি প্রবেশ করানো এবং নদীর মধ্য থেকে অপরিকল্পিত বালু উত্তোলনের ফলে নদীর ভাঙ্গন তীব্র হচ্ছে।   এখনই ব্যবস্থা না নিলে পেড়ীখালি ইউনিয়নের উড়ুবুনিয়া থেকে রোমজয়পুর পর্যন্ত হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হবে।

নাটক ও তরুন-তরুনীদের বক্তব্য শেষে পানি উন্নয়ন বোর্ড, বাগেরহাটের নির্বাহী প্রকৌশলী আবু রায়হান মোহাম্মদ আল-বিরুনী বলেন, মোরেলগঞ্জ, মোংলা ও রামপালের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নে বেড়ীবাঁধ নেই। বেড়ীবাঁধ না থাকায় রোমজায়পুর এলাকাও খুবই ঝুকিপূর্ণ। সরেজমিন পরিদর্শন করে কারিগরি পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান এই কর্মককর্তা।