বুধবার, ২১ মে, ২০২৫

ফুলে-ফুলে রঙিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস


ফুলে-ফুলে রঙিন বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস
  গুগল নিউজে ফলো করে আজকের প্রসঙ্গ এর সাথে থাকুন

গ্রীষ্ম মানেই খরতাপ, পাখির কিচিরমিচির আর প্রকৃতির রঙে রঙিন হয়ে ওঠা পরিবেশ। এই ঋতুতেই প্রকৃতি তার সব সৌন্দর্য ঢেলে দেয় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর (বেরোবি) ক্যাম্পাসে। ৭৫ একরের এই সবুজ ক্যাম্পাসটি গ্রীষ্মকালে পরিণত হয় এক রঙিন ফুলের রাজ্যে। হলুদ, লাল, বেগুনিসহ নানা রঙের ফুলে সেজে ওঠে গোটা পরিবেশ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন কৃষ্ণচূড়া সড়কে সারি সারি কৃষ্ণচূড়া গাছ গ্রীষ্মের রোদে আগুন ঝরায়। রক্তিম কৃষ্ণচূড়া ফুলগুলো গাছের ডালে ডালে ফুটে ক্যাম্পাসকে দিয়েছে এক অনন্য রূপ। একইসঙ্গে ভিসি রোড, জিরো পয়েন্ট, আবাসিক হলের পাশে এবং একাডেমিক ভবন ঘিরে ফুটেছে জারুল, সোনালু ও অন্যান্য বাহারি ফুল। এই রঙের ছোঁয়ায় সবুজ ক্যাম্পাস পেয়েছে শিল্পীর ক্যানভাসে আঁকা এক স্বপ্নের রূপ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সীমানাপ্রাচীর সংলগ্ন ঢাকা-কুড়িগ্রাম মহাসড়ক ও রংপুর শহরের প্রবেশপথের দুই পাশে চোখে পড়ে জারুল গাছের সারি। এসব গাছে ফুটে থাকা বেগুনি রঙের জারুল ফুল পথচারীদের নয়নজুড়ানো এক অভিজ্ঞতা দেয়। ছাত্র-শিক্ষক থেকে শুরু করে আগত অতিথিরা এ সৌন্দর্যে মুগ্ধ হচ্ছেন প্রতিনিয়ত।

ক্যাম্পাসের সৌন্দর্যে অভিভূত হয়ে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী রিদওয়ান বলেন, “কৃষ্ণচূড়া-জারুল ফুটে ক্যাম্পাস একেবারে নতুন রূপে রঙিন হয়ে উঠেছে। রাস্তার ধারে জারুল দেখে দূর থেকেই মনে হয় ফুলের বাগানে প্রবেশ করছি।”

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা রহমান বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয় কেবল জ্ঞানের কেন্দ্র নয়। এটি একটি মুক্ত চিন্তার পরিসর যেখানে প্রতিটি শিক্ষার্থী নিজস্ব ভাবনার বিকাশ ঘটায়। ক্যাম্পাসের রঙিন ফুল ও প্রাকৃতিক সৌন্দর্য সেই চিন্তাকে নতুন রূপে সাজিয়ে তোলে। আমাদের মননকে করে তোলে আরও উন্মুক্ত ও সৃজনশীল। তাই ক্যাম্পাসের এই সৌন্দর্য রক্ষা ও রক্ষণাবেক্ষণে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় ভূমিকা রাখা অত্যন্ত জরুরি।"

শুধু কৃষ্ণচূড়া ও জারুলই নয়, ক্যাম্পাসে বিরল প্রজাতিরও বেশ কিছু ফুল ফোটে এই সময়টাতে। সোনালু, রাধাচূড়া, স্বর্ণচাঁপা, কনকচাঁপা, লাল সোনাইলু, নীলমণি, হরিনা, বান্দরহুলা, পানামসহ আরও অনেক দুর্লভ ফুল ফুটে ক্যাম্পাসের সৌন্দর্য বাড়িয়েছে বহুগুণ।

এছাড়াও, বেরোবি এখন পরিচিত ‘বৃক্ষ জাদুঘর’ হিসেবে। শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মচারীদের যৌথ উদ্যোগে প্রায় ৪০০ প্রজাতির ৩৮ হাজারেরও বেশি গাছ রয়েছে এখানে। এসবের মধ্যে ঘোড়া চাবুক, ঢাকিজাম, টেবেবুইয়া, হলুদ পলাশ, জাকারান্ডা, বাওবাব, আগর, রুদ্রাক্ষ, হিজল, কোরাল উড, ব্রেডফ্রুট, রিঠা, কুসুম, ছোটহরিণা প্রভৃতি গাছ রয়েছে যেগুলোর অধিকাংশই এখন ফুলে ফুলে সজ্জিত।