
ভারতের দিকে তাক করা পাকিস্তানের ১৩০ পারমাণবিক বোমা
১৫ এপ্রিল ২০২৫, ৯:৪৫ পূর্বাহ্ণ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুবি) বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপিত হয়েছে বাংলা নববর্ষ ১৪৩২। দীর্ঘ পাঁচ বছর পর এমন উৎসবমুখর পরিবেশে নববর্ষ পালিত হওয়ায় পুরো ক্যাম্পাস জুড়ে ছিল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও প্রাণচাঞ্চল্য।
সোমবার (১৪ এপ্রিল) সকাল থেকেই নববর্ষ উদযাপনের আনুষ্ঠানিকতা শুরু হয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ হায়দার আলীর নেতৃত্বে আয়োজিত শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে। শোভাযাত্রাটি প্রশাসনিক ভবনের সামনে থেকে শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বৈশাখী চত্বরে গিয়ে শেষ হয়।
এই শোভাযাত্রায় অংশ নেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান, প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোঃ আবদুল হাকিম, রেজিস্ট্রার অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেনসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
শোভাযাত্রা শেষে শুরু হয় দিনব্যাপী বৈশাখী উৎসব। সকাল ১০টায় আয়োজিত হয় ছেলেদের মোরগ লড়াই ও মেয়েদের মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো গ্রামীণ খেলা, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক উৎসাহের জন্ম দেয়। এরপর সকাল সাড়ে ১০টা থেকে শুরু হয় বর্ণাঢ্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। এতে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা পরিবেশন করেন লোকগান, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য ও নাটিকা—যা পুরো ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে দেয় বাঙালিয়ানা আবহ।
বৈশাখী চত্বরে বসে রঙিন বৈশাখী মেলা। প্রতিটি বিভাগ থেকে স্থাপন করা হয় পিঠাপুলির স্টল, যেখানে পরিবেশিত হয় পাটিসাপটা, চিতই, দুধচিটা, মালপোয়া সহ নানা ধরনের ঐতিহ্যবাহী খাবার। এসব খাবারের স্বাদ নিতে ভিড় জমায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীসহ আগত দর্শনার্থীরা।
উৎসবের এক পর্যায়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. হায়দার আলী বলেন, “বাংলা নববর্ষ বাঙালির চিরায়ত ঐতিহ্য। এই উৎসব জাতি, ধর্ম, বর্ণ নির্বিশেষে সকলের মিলনমেলা। স্বল্প সময়ে এমন সফল আয়োজন করায় আয়োজকদের ধন্যবাদ জানাই।”
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মাসুদা কামাল বলেন, “বাঙালির সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে ধারণ করে নববর্ষ। এ আয়োজন নতুন প্রজন্মের মাঝে দেশপ্রেম ও সাংস্কৃতিক মূল্যবোধ জাগ্রত করবে।”
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সোলায়মান বলেন, “নববর্ষ নতুন সম্ভাবনার বার্তা নিয়ে আসে। গণতন্ত্র, স্বচ্ছতা ও প্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকার হোক এবারের বৈশাখ।”
দীর্ঘদিন পর এমন আয়োজন হওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে ছিল বাড়তি উচ্ছ্বাস। তাদের মতে, নিয়মিতভাবে এমন আয়োজন হলে শিক্ষার্থীদের মননশীল বিকাশে তা ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের একমাত্র গ্রাফিতি সংগঠন ‘বৃত্ত কুবি’-এর ব্যতিক্রমী উদ্যোগ এবারের নববর্ষে নতুন মাত্রা যোগ করে। রোববার রাতে ক্যাম্পাসের মূল ফটক, গোল চত্ত্বরসহ বিভিন্ন স্থানে আঁকা আলপনায় ফুটে ওঠে বৈশাখের রঙ ও রূপ, যা পুরো ক্যাম্পাসে সৃষ্টি করে এক নান্দনিক পরিবেশ।
নববর্ষের এই বর্ণিল আয়োজনে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় যেন হয়ে ওঠে এক খণ্ড বাংলাদেশ—ঐতিহ্য, সংস্কৃতি আর উৎসবের মেলবন্ধনে উদ্ভাসিত।