
ফরিদপুরে ট্রেনের ধাক্কায় যুবক নিহত
১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ৭:৩২ অপরাহ্ণ
বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুরের ইইই বিভাগের ২০২১-২০২২ শিক্ষাবর্ষের এক শিক্ষার্থীর মোবাইলে নকল নিয়ে ধরা পরার দায়ে ১ বছরের জন্য শাস্তিকে জুলাই-আগস্টের প্রেক্ষিতে মওকুফ করেছে বেরোবি প্রশাসন। এ নিয়ে ক্যাম্পাস জুড়ে চলছে সমালোচনার ঝড়। অসদুপায় অবলম্বনকারী শাস্তিপ্রাপ্ত ঐ শিক্ষার্থীর নাম রিফাত হোসেন রিফা। তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদলের সক্রিয়কর্মী এবং রংপুর মহানগর জিয়া সাইবার ফোর্সের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
জানা যায়, গত বছরের ২৫ ফেব্রুয়ারিতে ইইই প্রথম বর্ষের ফাইনাল পরীক্ষায় মোবাইলসহ নকল নিয়ে ধরা পড়েন ঐ শিক্ষার্থী। পরে ২০২৪ সালের ২রা এপ্রিল তাকে শাস্তি দেয় বেরোবি প্রশাসন। সেক্ষেত্রে তার কন্টিনিউয়াস এসেসমেন্ট বাতিল, ফাইনাল পরীক্ষার সকল কোর্সের পরীক্ষা বাতিল ও পরবর্তী ব্যাচের সাথে কন্টিনিউ করার শাস্তি শোনানো হয় এবং মোবাইল ফোনটি বাজেয়াপ্ত করা হয়। তবে গত ১৩ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ দপ্তরের এক আদেশে জানানো হয় ঐ শিক্ষার্থীকে মওকুফ করে দেয়া হয়েছে এবং এ বিষয়ে বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের সাথে যোগাযোগ করতে বলা হয়।
আদেশে বলা হয়, "উপর্যুক্ত বিষয় ও সূত্রের পরিপ্রেক্ষিতে জানানো যাচ্ছে যে, আপনি ১ম বর্ষ ১ম সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা (মানোন্নয়ন)-২০২৩ পরীক্ষায় অসদুপায় অবলম্বন করায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, রংপুর এর বিদ্যমান শৃঙ্খলা বিষয়ক বিধি ও শৃঙ্খলা বোর্ডের সিদ্ধান্ত মোতাবেক আপনাকে 'পরীক্ষায় অসদুপায় ও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা বিধিমালা-২০১৮' এর ৪ ব্যাখ্যা (খ) উপবিধি অনুযায়ী মানোন্নয়ন পরীক্ষা ও অধ্যয়নরত সেমিস্টারের কন্টিনিউয়াস এসেসমেন্টসহ সেমিস্টার ফাইনালের সকল কোর্সের পরীক্ষা বাতিল এবং পরবর্তী ব্যাচের (Next available batch) সঙ্গে বাতিলকৃত সেমিস্টারের পরীক্ষা দিতে পারবেন মর্মে সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। পরবর্তীতে আপনি শাস্তি মওকুফের আবেদন করায় জুলাই/আগস্ট এর ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশেষ বিবেচনায় আপনার শাস্তি মওকুফের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, এ সুযোগ শুধুমাত্র একবারের জন্য বিবেচিত হবে। উল্লেখ্য যে, এতদবিষয়ে বিভাগীয় প্রধানের সাথে যোগাযোগ করার জন্য বলা হলো।
এক বছর আগের নকলসহ ধরা পড়ে শাস্তিপ্রাপ্ত একজন শিক্ষার্থীকে কোন নিয়মে তার সাজা মওকুফ করে পুনরায় পরীক্ষায় বসতে দেয়ার অনুমতি দেয়া হলো সে বিষয় নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় জুড়েই চলছে সমালোচনার ঝড়। এছাড়া এ বিষয়ে সঠিক কোনো জবাবও দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কেউই। শিক্ষার্থীরা বলছেন, "সে আন্দোলন করেছে ঠিকই কিন্তু কবে আহত হয়েছে সে বিষয়ে আমরা জানিনা। আর যদি আহত হয়েও থাকে তাহলে কীভাবে নকলের দায়ে শাস্তি হওয়া সাজা মওকুফ করে প্রশাসন? নকল করেছে সে ১ বছর আগে আর জুলাইয়ের ঘটনা ৬ মাসও হয়নি। তাহলে ওটার সাথে এটার কী সম্পর্ক, কিসের প্রেক্ষিত বিবেচনা? জুলাইয়ের চেতনা বিক্রি করে যে কেউ যা কিছু ইচ্ছে করতে পারে না। প্রশাসনের এরকম সিদ্ধান্ত হাস্যকর এবং অন্যায়। এর জন্য শিক্ষার্থীদের কাছে অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে।"
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) তানজিউল আলম বলেন, কোথাও বোঝার ভুল হয়েছে, আমি এসব বিষয়ে তেমন কিছুই জানিনা। এ বিষয়ে বিভাগীয় প্রধান ও শৃঙ্খলা কমিটি বলতে পারবে।
এ নিয়ে শৃঙ্খলা কমিটি, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও ইইই বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. ফেরদৌস রহমান বলেন, ওর এটা এক বছর আগের ঘটনা। ও আহত শিক্ষার্থী হিসেবে আবেদন করেছে। ও যেটায় আবেদন করেছে সেটায় তো ব্যাচ এভাইলেবল না তাহলে কীভাবে পরীক্ষা দিবে। গ্যাজেট অনুযায়ী তার আহতের লিস্টে নাম আছে এবং সে বলছে তার কয়েকমাস গ্যাপ গেছে, এটার দোহাই দিয়ে সে আবেদন করেছে।
নকল দিয়ে ধরা পরা এবং শৃঙ্খলা কমিটি এরকম সিদ্ধান্ত কেনো দিলো সে বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সুনির্দিষ্ট উত্তর না দিয়ে বলেন, শৃঙ্খলা বোর্ড পার করে দিলেও আরো দুইটা বড় বোর্ড তো রয়েছে। সিন্ডিকেটে উঠবে আগে দেখো সেখানে হয় কিনা তারপর বলিও।
এ নিয়ে ইইই বিভাগের বিভাগীয় প্রধান আহসান হাবিবকে একাধিক ফোন করলেও তিনি তার রিসিভ করেননি।